মালদা, 4 নভেম্বর:আত্মহত্যা নাকি খুন? প্রৌঢ়ার ঝুলন্ত দেহ উদ্ধারের পর এই প্রশ্নই ঘুরছে পুরাতন মালদার মুচিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের নজরপুর গ্রামে ৷ মৃতার ছেলের দাবি, দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ থাকায় মানসিক অবসাদের কারণে আত্মঘাতী হয়েছেন মহিলা ৷ এদিকে এলাকার মানুষজনের দাবি, ছেলে ও পুত্রবধূ শ্বাসরোধ করে ওই মহিলাকে খুন করেছেন। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে মালদা থানার পুলিশ ৷
বৃদ্ধার দেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে মালদা মেডিক্যালে ৷ এই ঘটনা ঘিরে সোমবার সকাল থেকেই উত্তেজনা ছড়িয়েছে গ্রামজুড়ে ৷ মৃত মহিলার নাম রত্না সরকার ৷ তাঁর বয়স 56 বছর ৷ নজরপুর গ্রামের স্থায়ী বাসিন্দা ৷ স্বামী দীর্ঘদিন আগেই মারা গিয়েছেন ৷ বাড়িতে রয়েছেন একমাত্র ছেলে, পুত্রবধূ ও নাতি ৷
প্রৌঢ়ার মৃত্যু ঘিরে রহস্য মালদায় (ইটিভি ভারত) পুলিশের তরফে জানা গিয়েছে, মালদা থানার এক আধিকারিক জানিয়েছেন, মৃতদেহটি ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়েছে ৷ ময়নাতদন্তের রিপোর্ট না-পাওয়া গেলে মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা সম্ভব নয় ৷ আপাতত একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে ৷" পাশাপাশি পরিবারের সদস্য থেকে শুরু করে স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথাও বলছেন তদন্তকারীরা।
ছেলে সুব্রত বলেন, "মা দীর্ঘদিন ধরেই অসুস্থ ৷ নিয়মিত চিকিৎসা চলছিল ৷ শনিবারও চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল ৷ তিনি জানিয়েছিলেন, মায়ের একটা অস্ত্রোপচার করতে হবে ৷ তবে এখনও সময় হয়নি ৷ বয়স 60 বছর হওয়ার পর সেই অপারেশন করা সম্ভব ৷ এরপর রবিবার রাতে মা প্রচণ্ড অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন ৷ খবর পেয়ে দিদা রাতে আসেন ৷ এরপর সোমবার সকালে দিদা বাড়ি ফিরে গিয়েছেন ৷ সকালে খানিকক্ষণ ঘরে ছিলাম না ৷ ফিরে এসে দেখি, মা ঝুলন্ত অবস্থায় রয়েছে ৷"
ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে মালদা থানার পুলিশ (নিজস্ব ছবি) প্রতিবেশীদের অভিযোগ-যদিও প্রতিবেশীদের পাল্টা দাবি, রত্নাদেবী আত্মহত্যা করেননি ৷ তাঁকে খুন করে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে ৷ ছেলে ও পুত্রবধূ মিলেই এই কাজ করেছে ৷ প্রতিবেশী সন্ধ্যা বিশ্বাস অভিযোগ করেন, "রত্নাদিকে গলা টিপে খুন করার পর ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে ৷ পুরো ঘটনার সাক্ষী সুব্রতর ছেলে ৷ সে নিজে আমাদের বলেছে, তার বাবা ও মা ঠাকুমাকে খুন করেছে ৷ অনেকদিন ধরেই ওদের বাড়িতে ঝামেলা চলত ৷ ছেলে আর বউ প্রায়শই তাঁকে মারধর করত ৷"
তাঁর আরও অভিযোগ, এমনকী ছেলের শ্বশুরবাড়ির লোকজনও রত্নাদিকে মারত ৷ আমরা জানি, রত্নাদির সারা শরীরে মারের দাগ ছিল ৷ হাঁটুতে রক্ত জমে রয়েছে ৷ চোখের সামনে এসব অন্যায় দেখেও ছেলে কোনওদিনও প্রতিবাদ করেনি ৷ আমরা ওদের কঠোর শাস্তি চাইছি ৷ সন্ধ্যাদেবীর বক্তব্যকে সমর্থন জানান আরেক প্রতিবেশী সীমা সরকারও ৷ স্থানীয়দের অভিযোগ সম্পর্কে পুলিশের কোনও প্রতিক্রিয়া এখনও মেলেনি।