বসিরহাট, 7 ডিসেম্বর: চারদিন নিখোঁজ থাকার পর শনিবার পুকুর থেকে উদ্ধার হল তরুণীর হাত, পা, মুখ বাঁধা দেহ। দেহটি জলে ডুবিয়ে দেওয়ার জন্য কোমরে ইটও বাঁধা ছিল। ঘটনাটি ঘটেছে উত্তর 24 পরগনার সন্দেশখালির ঘটিহারা এলাকায়।
পরিবারের দাবি, বাড়ি থেকে বের হওয়ার সময় ওই তরুণী জানিয়েছিলেন যে তিনি গরুকে খাবার দিতে খামারবাড়িতে যাচ্ছেন৷ তারপর আর বাড়ি ফেরেননি। শনিবার খামারবাড়ির পুকুর থেকেই ওই তরুণীর দেহ উদ্ধার হয়৷ পরিবারের অভিযোগ, ‘‘ওই তরুণীকে ধর্ষণ করে খুন করার পর দেহ জলে ফেলে দেওয়া হয়েছে।’’ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে ন্যাজাট থানার পুলিশ।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বছর আঠারোর ওই তরুণীর বাড়ি সন্দেশখালির ন্যাজাট থানার ঘটিহারা গ্রামে। স্থানীয় একটি স্কুল থেকে গত বছর তিনি উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করেছেন। আদিবাসী ওই তরুণীর বাবা নেই। মা ও বোনের সঙ্গে ওই তরুণীও স্থানীয় এক সম্ভ্রান্ত পরিবারে থাকতেন। বাড়ির কাছেই ওই পরিবারের একটি খামার রয়েছে। ওই তরুণী ও তাঁর মা খামার দেখাশোনা করতেন।
4 ডিসেম্বর বিকেলে খামারে গরুর খাবার দিতে যাচ্ছি বলে তিনি বাড়ি থেকে বের হন। তারপর আর বাড়ি ফেরেননি। তরুণীর মা ন্যাজাট থানায় একটি নিখোঁজ ডায়েরি করেন। তারপর পুলিশের পক্ষ থেকে খোঁজাখুঁজি শুরু হয়। কিন্তু ওই তরুণীর আর কোনও সন্ধান পাওয়া যায়নি।
শনিবার সকালে স্থানীয় বাসিন্দারা খামারবাড়ির পুকুরে একটি মৃতদেহ ভেসে থাকতে দেখেন। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে আসে। দেহটি জল থেকে তোলার পর দেখা যায়, সেটি নিখোঁজ তরুণীর মৃতদেহ। মৃতদেহের হাত, মুখ ও পা বাঁধা ছিল। দেহটি জলে ডুবিয়ে দেওয়ার জন্য কোমরে ইটও বাঁধা ছিল।
প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, আদিবাসী ওই তরুণীকে খুন করে জলে ফেলে দেওয়া হয়েছে । দেহটি ডুবিয়ে দেওয়ার জন্য তাঁর কোমরে ইটও বেঁধে দেওয়া হয়েছিল। পরিবারের লোকেদের অভিযোগ, নিখোঁজ ওই তরুণীকে ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছে। এরপর তথ্য প্রমাণ লোপাট করার উদ্দেশ্যে দেহটি ফেলে দেওয়া হয় জলে।
এই বিষয়ে নিহত তরুণীর সম্পর্কিত মামা বলেন, "ও অত্যন্ত শান্ত প্রকৃতির মেয়ে। খামারবাড়িতে গরুর খাবার দিতে গিয়েছিল। ধর্ষণ করার পর দুষ্কৃতীরা তাঁকে খুন করে হাত মুখ বেঁধে জলে ফেলে দিয়ে গিয়েছে। আমরা ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি জানাচ্ছি। দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।"
একই সুর শোনা গিয়েছে মৃত তরুণীর আরেক আত্মীয় সুকল্যাণ বৈদ্য'র গলাতেও। তাঁর কথায়, "ধর্ষণ করেই যে খুন করা হয়েছে, দেহটি দেখে তা আমরা একপ্রকার নিশ্চিত। মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আমরা সুবিচারের দাবি জানাচ্ছি।"
অন্যদিকে, বিষয়টি নিয়ে বসিরহাট পুলিশ জেলার পুলিশ সুপার হুসেন মেহদী রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, "পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু হয়ে গিয়েছে। তবে নির্দিষ্ট কারও উপর সন্দেহপ্রকাশ করেনি পরিবার। আমরা তদন্ত করে দেখছি। শীঘ্রই জানা যাবে, কে বা কারা এই ঘটনায় যুক্ত। আইন অনুযায়ী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।"