মেদিনীপুর, 7 জুন: অমানবিকতার এক ছবি উঠে এল মেদিনীপুরে । স্বামীর সমস্ত সম্পত্তি নিজের নামে করে তাঁকে ফেলে পালালেন স্ত্রী । ঘটনায় শোরগোল পড়ে যায় মেদিনীপুর কালেক্টরেট এলাকা জুড়ে । অবশেষে বৃদ্ধের ঠাঁই হয় সরকারি হোমে ৷ পরিবারকে ডেকে পাঠালেন অতিরিক্ত জেলাশাসক কেম্পা হোনায়েয়া ।
জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার চন্দ্রকোনার পিংলাশি গ্রামের 70 বছরের বৃদ্ধ বংশী মিদ্দাকে তাঁর স্ত্রী নিয়ে আসেন জেলা কালেক্টরেটের রেজিস্ট্রি অফিসে ৷ অভিযোগ, সাক্ষী নিয়ে এসে সেখানে তাঁর প্রায় 20 ডেসিমেল জমি নিজের নামে করে নেন তাঁর স্ত্রী ৷ এরপর স্ত্রী তাঁর প্রৌঢ়া স্বামীকে একটি দোকানের বেঞ্চে বসান ৷ তাঁকে জল এবং বিড়ির প্যাকেট কিনে দিয়ে গাড়িতে করে উধাও হয়ে যান স্ত্রী ৷ এরপর উদ্ভ্রান্তের মতো ওই বৃদ্ধ গোটা কালেক্টরেট চত্বর ঘুরতে থাকেন ৷
মেদিনীপুর রেজিস্ট্রি অফিসের বাইরে একা বসে বৃদ্ধ (ইটিভি ভারত) অন্যদিকে, রেজিস্ট্রির কাজ শেষ করার পর জেলাশাসক দফতর সংলগ্ন এলাকা খালি করে চলে যান সকলে । সেই ভিড় চলে যাওয়ার পর দেখা যায় জমি রেজিস্ট্রি করতে আসা অসহায় বৃদ্ধ একাই বসে রয়েছেন একটি বেঞ্চে । কয়েকজন মুহুরি কাজ সেরে বাড়ি ফেরার সময় তাঁকে বসে থাকতে দেখেন ৷ তাঁরা বৃদ্ধকে বসে থাকার কারণ জিজ্ঞাসা করে বুঝতে পারেন যে, তাঁকে বাড়ির লোক ফেলে চলে গিয়েছে । এই ঘটনায় অফিস চত্বরে জল্পনা শুনে অতিরিক্ত জেলাশাসক তাঁকে ডেকে পাঠান ৷ তারপর সেখান থেকে তাঁকে একটি সরকারি হোমে পাঠিয়ে দেওয়া হয় ।
পাশাপাশি, বৃদ্ধের পরিবারের লোকজনকে ট্রাইবুনালে ডেকে পাঠান সেই জেলাশাসক । এই ঘটনায় বৃদ্ধ কিছুটা মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েন ৷ নিজের নাম, পরিচয়ও সঠিকভাবে বলতে পারছিলেন না তিনি ৷ এই বিষয়ে অফিসের এক মুহুরি অরুণ কুমার পাল বলেন, "আমরা দেখেছি রেজিস্ট্রির জন্য এসেছিলেন । বাড়ির দলিল সব ছিল । তাঁর স্ত্রীর নামে সম্পত্তি রেজিস্ট্রি করার পর তাঁরা ওনাকে ছেড়ে চলে গিয়েছেন । তবে কার নামে দলিল করেছেন ? কী হয়েছে, আমরা একবার অফিস থেকে পরীক্ষা করার চেষ্টা করছি ।" অন্যদিকে, রেজিস্ট্রি অফিসের কর্মী অচিন্ত্য খান বলেন, "রেজিস্ট্রির জন্য এসেছিলেন ওই বৃদ্ধ জানতে পেরেছি । ওনার স্ত্রীর নামে সম্পত্তি রেজিস্ট্রি করেছেন । তারপরে সম্ভবত ওনারা বৃদ্ধকে ফেলে চলে গিয়েছেন ।"