পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

ETV Bharat / state

সাগরে ফের নিম্নচাপের ভ্রুকুটি ! বঙ্গে ঠান্ডার 'দাদাগিরি'র আগে দুর্যোগের উঁকিঝুকি

21 নভেম্বর নাগাদ আন্দামান সাগরে একটি ঘূর্ণাবর্ত তৈরির সম্ভাবনা রয়েছে। যা 23 নভেম্বরের মধ্যে শক্তি বাড়িয়ে নিম্নচাপে পরিণত হতে পারে। শীতের আগে দুর্যোগের সম্ভাবনা ৷

west bengal weather update
সাগরে ফের নিম্নচাপের ভ্রুকুটি ! (ফাইল চিত্র)

By ETV Bharat Bangla Team

Published : 4 hours ago

Updated : 4 hours ago

কলকাতা, 20 নভেম্বর: 'জেট স্ট্রিম'। হঠাৎ করেই এই দু'টি শব্দ পরিচিত হয়ে উঠেছে ৷ যার সঙ্গে বঙ্গে ঠান্ডার আগমনীর বিশেষ সম্পর্ক রয়েছে ৷ যার প্রভাবে অগ্রহায়ণে হেমন্তের দ্বিতীয় ভাগে হিমের জোরালো অনুভূতি ৷ আলিপুর আবহাওয়া অফিস বলছে, 'জেট স্ট্রিম'-এর হাত ধরে বঙ্গে ঠান্ডার 'রাত দখল'। বুধবার কুয়াশাচ্ছন্ন ভোর ছাড়া সারাটা দিন রৌদ্রজ্বল। কলকাতা এবং পার্শ্ববর্তী অঞ্চলে সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রা যথাক্রমে 28 ডিগ্রি এবং 18 ডিগ্রির আশেপাশে থাকবে ৷

সারাটা দিন যেমন তেমন চললেও সন্ধ্যা নামার পরে হিমেল হাওয়ায় বেশ ভালোরকম শীত অনুভূত হচ্ছে । আপাতত এই পরিস্থিতি চলবে বলে জানিয়েছে হাওয়া অফিস। কিন্তু প্রশ্ন হল, জেট স্ট্রিম কি ? আবহাওয়াবিদরা বলছেন, "ভূ-পৃষ্ঠ থেকে প্রায় 12 কিলোমিটার ওপরে ঠান্ডা বাতাস ঘণ্টায় প্রায় 170 কিলোমিটার গতিবেগে উত্তর–পশ্চিম দিক থেকে ঢুকে উত্তরের সমভূমির উপরে দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে । এটাই ‘জেট স্ট্রিম’।

শীতের সময়ে মধ্য এশিয়ার দিক থেকে উত্তুরে হাওয়া ভারতে প্রবেশ করে। যার নিয়ন্ত্রক এই জেট স্ট্রিম। এই বছর এখনও পর্যন্ত কোনও পশ্চিমি ঝঞ্ঝার বাধার মুখে পড়েনি ৷ ফলে ঠান্ডা বাতাস অবাধে ঢুকছে উত্তর ভারতের রাজ্যগুলোতে। তার প্রভাব পড়ছে বঙ্গেও ৷ ইতিমধ্যে হেমন্তে পুরুলিয়া টেক্কা দিচ্ছে কালিম্পংকে। পুরুলিয়ার পারদ 12 ডিগ্রির ঘরে ৷ বীরভূমের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা 13 ডিগ্রির আশেপাশে ৷ ক্যানিং, ঝাড়গ্রাম, বর্ধমান, নদিয়াতে ঠান্ডার অনুভূতি বেশ ৷ এই সব হচ্ছে উত্তর-পশ্চিম ভারত থেকে ছুটে আসা ঠান্ডা বাতাসের সৌজন্যে। আগামী পাঁচদিন একইরকম চলবে পরিস্থিতি। ফলে শীত না-হলেও শীতের আগমনী হিসেবে এই জোরালো ঠান্ডার অনুভূতি হবে সন্ধ্যা নামার পর ৷

এদিকে ঠান্ডার এই টি-20 মার্কা ইনিংসের মধ্যে ফের ঘূর্ণিঝড়ের কাঁটা উঁকি মারছে সাগরে। আলিপুর আবহাওয়া দফতর এই বিষয়ে এখনই কোনও পূর্বাভাস না-দিলেও বিষয়টির ওপর নজর রাখা হচ্ছে ৷ মার্চ থেকে মে এবং অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত বছরের এই তিন তিন মাস বঙ্গোপসাগরে ‘সাইক্লোন সিজন’ হিসাবে পরিচিত। এই সময়ে সমুদ্রের জল মাটির চেয়ে বেশি গরম হয় ৷ ফলে সমুদ্রের ওপরে বাষ্প জমা হয়। প্রধানত সেই কারণেই বছরে দু'বার তিন মাস করে সমুদ্র ঘূর্ণিঝড়প্রবণ হয়ে থাকে।

ঠান্ডার আগমনীতে দুয়ারে শীতের অপেক্ষা ! কিন্তু ঘূর্ণিঝড় কাঁটাও রয়েছে ৷ তবে তার অভিমুখ বঙ্গের দিকে হবে কি না, তা এখনই বলা সম্ভব নয় ৷ আপাতত 21 নভেম্বর নাগাদ আন্দামান সাগরে একটি ঘূর্ণাবর্ত তৈরির সম্ভাবনা রয়েছে। সেই ঘূর্ণাবর্ত 23 নভেম্বরের মধ্যে শক্তি বাড়িয়ে নিম্নচাপে পরিণত হতে পারে। এর পর তা পশ্চিম ও উত্তর–পশ্চিম দিকে অগ্রসর হতে পারে। এই যাত্রাপথে নিম্নচাপটি আরও কিছুটা শক্তি সঞ্চয় করে গভীর নিম্নচাপে পরিণত হওয়ার সম্ভাবনাও রয়েছে ৷ সত্যিই যদি ঘূর্ণাবর্ত থেকে সৃষ্ট নিম্নচাপটি বঙ্গ অভিমুখী হয়, তাহলে শীত আসার আগে দুর্যোগ অপেক্ষা করে থাকবে।

মঙ্গলবার কলকাতা এবং তার আশপাশের অঞ্চলে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল 27.5 ডিগ্রি সেলসিয়াস ৷ যা স্বাভাবিকের চেয়ে 2.5 ডিগ্রি কম। সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল 18 ডিগ্রি সেলসিয়াস ৷ যা স্বাভাবিকের চেয়ে 1.9 ডিগ্রি নীচে ৷ বাতাসের আপেক্ষিক আর্দ্রতা ছিল সর্বোচ্চ 88 শতাংশ ও সর্বনিম্ন 47 শতাংশ।

Last Updated : 4 hours ago

ABOUT THE AUTHOR

...view details