কলকাতা, 15 ডিসেম্বর: এবার চিকিৎসক হিসেবে শান্তনু সেনের যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলল ওয়েস্ট বেঙ্গল মেডিক্যাল কাউন্সিল ৷ ন্যাশনাল মেডিক্যাল কমিশনের সচিবকে চিঠি পাঠিয়েছেন কাউন্সিলের রেজিস্ট্রার মানস চক্রবর্তী ৷ প্রাক্তন এই সাংসদের চিকিৎসকের ডিগ্রি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে রাজ্য মেডিক্যাল কাউন্সিল ৷
রেজিস্ট্রার মানস চক্রবর্তী ওই চিঠিতে লিখেছেন, শান্তনু সেনের চিকিৎসক হিসেবে যে যোগ্যতা, তা ওয়েস্ট বেঙ্গল মেডিক্যাল কাউন্সিলের নথিভুক্ত নয় ৷ তাদের নিয়ম অনুযায়ী, ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল কাউন্সিলের নথিভুক্ত নয় এমন কোনও ডিগ্রিতে নিজেকে বিশেষজ্ঞ দাবি করা যায় না ৷ কিন্তু, শান্তনু সেন এমন কাজই করেছেন বলে চিঠিতে জানান রেজিস্ট্রার ৷
চিকিৎসক হিসেবে যোগ্যতা প্রশ্নে শান্তনু সেনকে পাঠানো রাজ্য মেডিক্যাল কাউন্সিলের চিঠি ৷ (ইটিভি ভারত) শান্তনু সেনের প্রেসক্রিপশনে লেখা থাকে এফআরসিপি গ্লাসগো ৷ কিন্তু, এই ডিগ্রি তিনি লিখতে পারেন কি না, সেই নিয়েই প্রথমে শান্তনু সেনকে চিঠি পাঠিয়েছিল ওয়েস্ট বেঙ্গল মেডিক্যাল কাউন্সিল ৷ গত 12 ডিসেম্বর তাঁকে সেই চিঠি পাঠিয়ে যোগ্যতার প্রেক্ষিতে যথাযথ প্রমাণ জমা দিতে বলা হয়েছিল ৷ আর তার পরের দিন অর্থাৎ, 13 ডিসেম্বর ওয়েস্ট বেঙ্গল মেডিক্যাল কাউন্সিল থেকে চিঠি যায় ন্যাশনাল মেডিক্যাল কমিশনে ৷
সেখানে বলা হয়েছে, শান্তনু সেন যদি কমিশনে নথিভুক্ত না-থাকা ডিগ্রি ব্যবহার করে থাকেন, তাহলে দ্রুত পদক্ষেপ করার আবেদনও করা হয় রেজিস্ট্রার মানস চক্রবর্তীর তরফে ৷
যদিও এ প্রসঙ্গে শান্তনু সেন বলেন, "আমার সুনির্দিষ্ট ডিগ্রি রয়েছে ৷ সেই ডিগ্রিতেই আমি প্র্যাকটিস করি ৷ যা একদমই আইনসম্মত ৷ যদিও, আমার কাছে অফিসিয়ালি কিছু আসেনি ৷ যদি আমার কাছে কিছু আসে, তাহলে অবশ্যই আমি এর উত্তর দেব ৷ কিন্তু, আমার মনে হয় মুখ্যমন্ত্রী এবং স্বাস্থ্যসচিব এই বিষয়ে নজর দিক ৷’’
জাতীয় মেডিক্যাল কমিশনে শান্তনু সেনের বিরুদ্ধে লেখা রাজ্য মেডিক্যাল কাউন্সিলের চিঠি (ইটিভি ভারত) তবে, রাজ্য মেডিক্যাল কাউন্সিলের ভূমিকা নিয়েও পালটা প্রশ্ন ছুঁড়ে দিয়েছেন শান্তনু ৷ তিনি বলেন, "আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগগুলি আসছে, তা আমার জানার আগে মিডিয়ার কাছে পৌঁছে যাচ্ছে ৷ যে কাউন্সিলের সভাপতি আজকে ওখানে বসে আছেন, তাঁর জন্য 2001 সালে আমি সিপিএমের হাতে মার খেয়েছিলাম পোলিং এজেন্ট হয়ে ৷ কিন্তু, সরকার যদি আমাকে কোনোদিন সুযোগ দেয়, তাহলে আমি গিয়ে বলে আসব হেলথ রেক্রুটমেন্ট বোর্ড এবং কাউন্সিলে বসে তিনি কী কী করেছেন ৷ তবে, এই কথাগুলি আমি কোনোদিন মিডিয়ার সামনে বলব না ৷"
প্রসঙ্গত, কিছুদিন আগেই ওয়েস্ট বেঙ্গল মেডিক্যাল কাউন্সিলের পদ খুইয়েছেন চিকিৎসক শান্তনু সেন ৷ তাঁর বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়ে স্বাস্থ্যসচিবকে চিঠিও দিয়েছিলেন রাজ্য মেডিক্যাল কাউন্সিলর সভাপতি সুদীপ্ত রায় ৷ তিনি অভিযোগ করেছিলেন, শান্তনু সেন কাউন্সিলের ডাকা একাধিক মিটিংয়ে যোগ দেননি ৷ আর রাজ্য সরকারের তরফে মনোনীত হয়ে কাউন্সিলের সদস্যপদ গ্রহণ করেছিলেন ৷ কিন্তু, বৈঠকে তিনি আসতেন না ৷ সেই জন্য তাঁকে সরিয়ে দেওয়ার দাবি জানিয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছিল ৷ যদিও, সেই চিঠি শান্তনু সেন হাতে পাননি বলে জানান ৷