দুর্গাপুর, 29 জানুয়ারি: কাঁকসার পানাগড় বাজারের কমিউনিটি হলে দু'দিন ধরে চলছে সিপিএম-এর জেলা সম্মেলন। সেখান থেকেই এবার রাজ্যপালকে কটাক্ষ করলেন মহম্মদ সেলিম ৷ তাঁর কটাক্ষ, রাজ্যে যে একজন রাজ্যপাল আছেন সেটাই অনেকে ভুলতে বসেছেন।
সিপিএমের এই জেলা সম্মেলনে হাজির ছিলেন দলের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম, ডিওয়াইফাই-এর রাজ্য সম্পাদক মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়-সহ জেলার নেতারা। এদিন সিপিএমের জেলা সম্পাদক হিসেবে ফের গৌরাঙ্গ চট্টোপাধ্যায়ের নাম ঘোষণা হয়। পরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে মহম্মদ সেলিম রাজ্যপালকে কটাক্ষ করে বলেন, "ওঁকে কেন গুরুত্ব দেব ? অত বড় জায়গা (রাজভবন) তুলে দিলেই পারে ! মিউজিয়াম হয়ে যাবে। লোকে দেখতে যাবে।"
রাজ্যপালকে কটাক্ষ করলেন মহম্মদ সেলিম (ইটিভি ভারত) পাশাপাশি রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধেও সমালোচনায় সরব হয়েছেন এই বামনেতা ৷ তাঁর কথায়, "গ্রুপ ডি নিয়োগে সবচেয়ে বড় দুর্নীতি হয়েছে। আজ পর্যন্ত পরীক্ষার প্যানেল কিছুই বের হল না। হাজার হাজার ছেলে মেয়ে লাখ লাখ টাকা দিয়ে ফর্ম ফিলাপ করেছিলেন। আর সেটা করিয়েছিল সরাসরি মুখ্যমন্ত্রীর দফতর। এজন্য মুখ্যমন্ত্রী নিজে দোষী।"
এর পাশাপাশি অন্য একটি প্রসঙ্গে কেন্দ্রীয় সরকারকে তোপ দেগে তিনি বলেন, "বাংলাদেশ থেকে ভারতে অনুপ্রবেশ চলছে। আরএসএস তাদের রোহিঙ্গা বলছে। যখন বাংলাদেশিরা এ রাজ্যে প্রবেশ করছে তখন তাদের ধরা হচ্ছে। তারপর তাদের কী হলো সেটা জানা যাচ্ছে না। আর এতকিছুর মধ্যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক কী করছে ? কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কুম্ভে ডুব দিচ্ছেন। শিবের মাথায় জল না ঢেলে তাঁর মাথায় জল ঢালছেন সন্ন্যাসীরা।"
অন্যদিকে, রাজ্যের নবীন প্রজন্ম বামপন্থাকে সঙ্গী করে এগিয়ে যাচ্ছে কি না এই প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে রাজ্য সম্পাদক বলেন, "আধুনিক প্রজন্ম বামেদের দিকে ঝুঁকছে। আজ থেকে 20-25 বছর আগে প্রবীণরা জায়গা ছাড়েন না এমন অভিযোগ তোলা হত। এখন উল্টো কথা শুনতে হচ্ছে। এখন বলা হচ্ছে আপনারা কেন প্রবীণদে বাদ দিয়ে দিচ্ছেন ? নতুন প্রজন্মকে জায়গা করে দিতেই হবে।"
সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় রাজ্যের শিল্প বিনিয়োগ নিয়েও মন্তব্য করেন সেলিম। তিনি বলেন, "বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন দেশের মধ্যে এ রাজ্যে সবথেকে বেশি বিনিয়োগ হয়েছিল। কারণ তখন এ রাজ্যে আইনের শাসন ছিল। বিনিয়োগকারীরা ভরসা পেয়েছিলেন। আর এখন দুর্নীতি এবং তোলাবাজির ভয়ে বিনিয়োগ নেই।" রাজ্য তথা দেশের উন্নতির জন্য গভীর সমুদ্র বন্দরের প্রয়োজন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাজপুরে আদানি গোষ্ঠীকে এই ধরনের বন্দরের জন্য জমি দেওয়া নিয়েও কটাক্ষ করতে শোনা গেল মহম্মদ সেলিমকে।