বোলপুর, 21 সেপ্টেম্বর: বিশ্বভারতীর উত্তরপ্রদেশের আবাসিক ছাত্রীমৃত্যুর ঘটনায় চাঞ্চল্যকর মোড় । টেলিগ্রামের মাধ্যমে ভুয়ো ক্রিপ্টো কারেন্সিতে 2 লক্ষ 26 হাজার টাকা লগ্নি করেছিলেন অনামিকা সিং ৷ এই ঘটনায় কলকাতা থেকে চারজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ । অনলাইনে লগ্নির সাইবার অপরাধ দুনিয়ায় একটি বড় চক্র এই ক্রিপ্টো কারেন্সির প্রতারণায় কাজ করছে বলে সাংবাদিক বৈঠকে জানান বীরভূমের জেলা পুলিশ সুপার রাজনারায়ণ মুখোপাধ্যায় ।
বোলপুরের এসডিপিও অফিসে সাংবাদিক বৈঠক করে জেলা পুলিশ সুপার জানান, মৃত ছাত্রী অনামিকা সিং 2 লক্ষ 26 হাজার টাকা ভুয়ো ক্রিপ্টো কারেন্সিতে লগ্নি করেছিলেন ৷ এই টাকা বন্ধু-বান্ধব, অধ্যাপক ও বাড়ি থেকে বিভিন্ন অজুহাতে নিয়েছিলেন তিনি ৷ লগ্নির টাকা থেকে দু'বার লভ্যাংশও পেয়েছিলেন অনামিকা ৷ কিন্তু, পরবর্তীতে তাঁকে আর টাকা দেওয়া হচ্ছিল না ৷ টেলিগ্রামের মাধ্যমে একটা চক্র তাঁকে এই প্রতারণার ফাঁদে ফেলেছিল ৷
বীরভূম জেলা পুলিশ সুপার রাজনারায়ণ মুখোপাধ্যায় ছাত্রীর মোবাইল, ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ও হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাটের সূত্র ধরে পুলিশ আগেই দু'জনকে গ্রেফতার করেছিল । ধৃতরা হল ফায়েজ আলি ও মহম্মদ কাইফ । পরে শেখ কামরান ও জায়েদ হুসেনকে গ্রেফতার করে পুলিশ ৷ ধৃত চারজনের বাড়িই কলকাতা ৷ ধৃতদের মধ্যে শেখ কামরান 'কিং পিং' ৷
টেলিগ্রামের মাধ্যমেই একটা বড় চক্র গ্রাহক খুঁজে ভুয়ো ক্রিপ্টো কারেন্সির ফাঁদে ফেলেন ৷ ক্রিপ্টো কারেন্সি হল বিট কয়েনে লগ্নির মতোই একটি অনলাইনে লগ্নি । ভুয়ো কারেন্সিতে লগ্নির ফাঁদ রয়েছে দুনিয়াজুড়ে । এই চক্রের শিকার হয়েছিলেন বিশ্বভারতীর ছাত্রী অনামিকা । আর সেই চাপ সহ্য করতে না-পেরেই তিনি আত্মহত্যা করেন বলে জানিয়েছেন বীরভূমের জেলা পুলিশ সুপার ৷
তিনি জানান, "এর পিছনে আরও বড় চক্র আছে ৷ আমরা তাদের খোঁজ জারি রেখেছি ৷ তবে ভুয়ো ক্রিপ্টো কারেন্সি জাতীয় প্রতারণার দুনিয়ায় মূল মাথা পর্যন্ত পৌঁছনো সহজ নয় ৷ ছাত্রীটি যখন তাঁর ইনভেস্ট করা টাকা ফেরত পাচ্ছিলেন না, তখন পরিবার বা যাঁদের কাছ থেকে টাকা নিয়েছিলেন তাঁদের কী বলবেন এই চাপ সহ্য করতে না-পেরেই তিনি আত্মহত্যা করেন ।"
উত্তরপ্রদেশের বারাণসী থেকে বিশ্বভারতীতে পড়তে এসেছিলেন অনামিকা সিং ৷ বিশ্বভারতীর আম্রপালি ছাত্রী নিবাসে থেকে পড়াশোনা করতেন শিল্প সদনের স্নাতক তৃতীয় বর্ষের এই ছাত্রী ৷ 5 সেপ্টেম্বর ছাত্রী নিবাসেই বিষ খান তিনি ৷ পরে বোলপুর মহকুমা হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয় ৷ আরজি কর কাণ্ডের আবহে আবাসিক ছাত্রীর অস্বাভাবিক মৃত্যু ঘিরে উত্তাল হয়েছিল বিশ্বভারতী ৷ ছাত্রীর পরিবারের তরফে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগ দায়ের করা হয়েছিল শান্তিনিকেতন থানায় ৷ সেই অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তে নামে পুলিশ ৷