কুলতলি, 7 অক্টোবর: রোজকার মতোই পড়ার পর বাড়ি ফিরছিল ছোট্ট মেয়েটা ৷ গৃহশিক্ষিকার বাড়ি থেকে তার বাড়ির পথ তিন কিলোমিটার ৷ এই রাস্তাটাই আর সে পার করতে পারেনি ৷ তার মাঝেই নিখোঁজ হয়ে যায় ৷ এরপর মাঝরাতে তার বাড়ির থেকে মাত্র 500 মিটার দূরে মেলে চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রীর মৃতদেহ ৷ পুলিশ সেই রাতে শুধু দায় ঠেলেছে ! রাতেই ঠিকমতো খোঁজ করলে মেয়েটা হয়তো আজ বেঁচে থাকত ৷ আক্ষেপের সঙ্গেই ক্ষোভের সুর শোনা গেল নির্যাতিতার গৃহশিক্ষিকার গলায় ৷
প্রথম শ্রেণি থেকেই গৃহশিক্ষিকা প্রতিমা বৈদ্যের কাছে টিউশন পড়তে যেত জয়নগরের শিশুকন্যাটি ৷ শিক্ষিকার কথায়, "ও খুব মেধাবী ছাত্রী ছিল । আমি তো ভাবতেই পারছি না । আমার কাছ থেকে পড়ে বেরলো ৷ তারপর শুনছি আর বাড়ি ফেরেনি ৷ পরদিন সকালে শুনি এই খবর ৷"
পুলিশের বিরুদ্ধে ক্ষোভ নির্যাতিতার গৃহশিক্ষিকার (নিজস্ব ভিডিয়ো) এদিন পুলিশের বিরুদ্ধে তীব্র ক্ষোভ ঝড়ে পড়ে শিক্ষিকার গলায় ৷ তাঁর আক্ষেপ, পুলিশ একটু তৎপর হলে হয়তো মেয়েটাকে বাঁচানো যেত ৷ তিনি বলেন, "পুলিশ তো কোনও দায়িত্ব নেয়নি । ওর বাবারা যখন মহিষমারি ক্যাম্পে অভিযোগ জমা করতে যান, তখন ওঁদের পাঠানো হয় জয়নগরে । তারপর পাঠানো হয় কুলতলি । পুলিশ তো কোনও দায়িত্ব নেয়নি । রাতের বেলাতেই যদি পুলিশ খুঁজত, তাহলে হয়তো ও আজ বেঁচে থাকত।"
এমনকি, এত বড় ঘটনা ঘটে যাওয়ার পর এখনও পর্যন্ত তাকে পুলিশের তরফে কোনও জিজ্ঞাসাবাদই করা হয়নি বলে অভিযোগ করেছেন নির্যাতিতার গৃহশিক্ষিকা ৷ অথচ তাঁর বাড়ি থেকে বেরিয়েই নিখোঁজ হয়ে গিয়েছিল ওই নাবালিকা ৷ যারা এই ঘটনা ঘটিয়েছে, তাদের ফাঁসির দাবি জানিয়েছেন গৃহশিক্ষিকা প্রতিমা বৈদ্য ৷
উল্লেখ্য, জয়নগরের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রীকে ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনায় শনিবার সকাল থেকে রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় জয়নগরের মহিষামারি হাট এলাকা । পুলিশ ফাঁড়িতে ভাঙচুর চালিয়ে আগুন জ্বালিয়ে দেন উত্তেজিত জনতা ৷ নাবালিকা টিউশন পড়তে গিয়ে আর সেদিন বাড়ি ফেরেনি ৷ সময় পেরিয়ে যাওয়ার পরও সে বাড়ি না-ফেরায় খোঁজ শুরু করেন পরিবারের লোকজন । এরপর মাঝরাতে নাবালিকার দেহ উদ্ধার হয় ৷ আজ হাইকোর্টের নির্দেশে কল্যাণী জেএনএম হাসপাতালে তার দেহের ময়নাতদন্ত করবেন কল্যাণী এইমসের বিশেষজ্ঞরা ৷