কলকাতা, 24 ফেব্রুয়ারি: দেখতে দেখতে কলকাতার ট্রাম পরিষেবার বয়স পেরিয়ে গেল দেড়শো বছর। বৃদ্ধ হলেও কলকাতার বুকে এখনও চলছে ট্রাম। তবে রাজ্য প্রশাসনের মতে গতি পেয়েছে শহর ৷ তাই ট্রামের মন্থর গতি এখন অনেকটাই বেমানান। এছাড়াও রাস্তায় যানজটের সৃষ্টি থেকে শুরু করে ট্র্যাকের জন্য দুর্ঘটনা, ইত্যাদি যুক্তি সামনে রেখেছে প্রশাসন। যদিও বিভিন্ন যুক্তিকে সামনে এনে ট্রাম বন্ধের প্রচেষ্টা হলেও তা ভিত্তিহীন বলে দাবি ট্রামপ্রেমীদের ৷
ক্যালকাটা ইউজার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি তথা ট্রাম গবেষক ডক্টর দেবাশিস ভট্টাচার্য দাবি করেন যে, আদালতের নির্দেশের পরেও কলকাতা পুলিশ, কলকাতা পৌর সংস্থা এবং পরিবহন দফতর ট্রাম চালাতে চাইছে না। কলকাতা পুলিশের পক্ষে যে যুক্তিগুলো খাড়া করা হচ্ছে, তা একেবারেই ভিত্তিহীন। তিনি বলেন, "ভিত্তিহীনভাবে ট্রাম বন্ধ করে দেওয়ার চেষ্টা চলছে। তবে সুখবর হল যে, নতুন প্রজন্ম আবারও ট্রাম নিয়ে অনেক বেশি আগ্রহী। 151 বছর উপলক্ষে এবছর একটি ট্রাম যাত্রা করা হচ্ছে। এছাড়াও আগামী 15 মার্চ ট্রামকে বিষয় করে ধর্মতলার ওয়াই চ্যানেলে একটি সভার আয়োজন করা হবে।"
মূলত, 1873 সালের কলকাতার বুকে প্রথমবার চলেছিল ঘোড়ায় টানা ট্রাম। সেদিন শিয়ালদহ থেকে শুরু হয়ে ট্রাম যায় আর্মেনিয়ান ঘাট পর্যন্ত। তারপর কেটে গিয়েছে বহু বছর। শহরের বিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে বিবর্তন ঘটেছে ট্রামেরও। ঘোড়ায় টানা কাঠের ট্রেন থেকে হয়েছে শীততাপ নিয়ন্ত্রিত লোহার ট্রাম। 1902 সালে ট্রাম পরিষেবার বৈদ্যুতীকরণ শুরু হয়; যেটি ছিল এশিয়ার প্রথম বৈদ্যুতিক ট্রাম পরিষেবা। ট্রামকে ঘিরে কলকাতায় একটি বিশেষ পর্যটন আকর্ষণও গড়ে তোলা হয়েছে, যেটি দেশি-বিদেশি পর্যটকদের কাছে বেশ জনপ্রিয় ৷ এবছর সেই ট্রামের বয়স হল 151 বছর ৷
বর্তমানে সারা পৃথিবীতে দূষণমুক্ত পরিবেশবান্ধব যান ব্যবহার করার উপর অনেক বেশি জোর দেওয়া হচ্ছে। এই রাজ্যেও সিএনজি এবং বৈদ্যুতিক যানবাহন এসে গিয়েছে। এই যুক্তিকে সামনে রেখে শহরের ট্রামপ্রেমীদের দাবি এই বাহন পরিবেশ বান্ধব এবং তার আয়ুও দীর্ঘ।