চুঁচুড়া, 29 জুলাই: প্রসূতি বিভাগে চিকিৎসা পরিষেবা নিয়ে দিনকয়েক আগেই নানা অভিযোগ উঠেছিল হুগলির চুঁচুড়া ইমামবাড়া হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে ৷ সোমবার সেই হাসপাতালে গিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করলেন হুগলির সাংসদ তৃণমূলের রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ হাসপাতালের বিভিন্ন অংশের ছবি কী রকম, তা মোবাইলে ভিডিয়োও করতে রাখতে দেখা যায় সাংসদকে ৷ এমনকী, প্রকাশ্যেই হাসপাতালের পরিষেবার মান বৃদ্ধি নিয়ে নির্দেশ দেন সুপারকে ৷ যদিও এই নিয়ে চুঁচুড়ার ইমামবাড়া হাসপাতালের সুপার অমিতাভ মণ্ডল কোনও মন্তব্য করতে চাননি ৷
হুগলির ইমামবাড়া হাসপাতালের ‘অপরিচ্ছন্ন’ পরিবেশ দেখে ক্ষুব্ধ রচনা (ইটিভি ভারত) সোমবার হুগলির জেলাশাসকের সঙ্গে জেলার উন্নয়ন নিয়ে আলোচনা করেন স্থানীয় সাংসদ রচনা বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ তাঁর সংসদীয় এলাকার স্বাস্থ্য় পরিষেবার খোঁজ নিতে তিনি কথা বলেন হুগলির মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের সঙ্গেও ৷ তার পরই তিনি সোজা চলে যান হুগলির চুঁচুড়ার ইমামবাড়া হাসপাতালে ৷
সেখানে গিয়ে তিনি পুরো হাসপাতাল চত্বর ঘুরে দেখেন ৷ সামগ্রিক পরিস্থিতি দেখে ক্ষোভ প্রকাশ করেন ৷ প্রশ্ন তোলেন, কেন চারিদিক এত নোংরা ? প্রসূতি বিভাগে রোগীরা কেন বেড পাননি ? কেন তাঁদের মেঝেতে জায়গা দেওয়া হয়েছে, সেই প্রশ্নও তোলেন তিনি ৷
প্রকাশ্যেই তিনি হাসপাতালে সুপার অমিতাভ মণ্ডলকে বলেন, ‘‘এটা আমি আশা করিনি । এতদিন কে ছিল, আমার জানার দরকার নেই । এখন রচনা বন্দ্যোপাধ্যায় এখানে এসেছে । হাসপাতালের চিত্র যেন পালটে যায় । হাসপাতালে যেন কুকুর ছাগল না ঘোরে । ঝাঁ চকচকে হয়ে যায় ।’’
হাসপাতালের বিভিন্ন অংশের অব্যবস্থার ছবি তিনি মোবাইলে ভিডিয়ো করে রাখেন ৷ পরে প্রকাশ্যেই সেকথা তিনি সুপারকে জানান ৷ রচনা বলেন, ‘‘আমি ছবি তুলে রাখলাম । হাসপাতালের চেহারা যেন পালটে যায় । তারপর আপনাদের কী প্রয়োজন সেটা বলবেন ৷ রচনা বন্দ্যোপাধ্যায় আপনাদের পাশে থাকবে ।’’
হুগলির ইমামবাড়া হাসপাতালে সাংসদ রচনা বন্দ্যোপাধ্যায় (নিজস্ব চিত্র) যদিও হাসপাতাল সুপার অমিতাভ মণ্ডল বলেন, ‘‘হাসপাতালের পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা যতটা পারছি করছি । আমাদের কর্মী অনুযায়ী যতটা পারব পরিষ্কার রাখার চেষ্টা করব ।’’ কর্মীর অভাব নিয়েও কিছু বলতে চাননি তিনি । রচনার বক্তব্য নিয়েও তিনি মন্তব্য করা থেকে নিজেকে বিরত রাখেন ৷
অন্যদিকে হাসপাতাল ছাড়ার আগে রচনা বলে যান, "আমি হাসপাতাল সুপারকে বলে গেলাম যাতে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখা জন্য । এতো মানুষ প্রত্যেকদিন আসছেন । তাঁদের সুস্বাস্থ্য আমরা কামনা করি । প্রসূতি মায়েদের যেভাবে মেঝেতে রাখা হয়েছে, তাঁদের নোংরাভাবে পরিষেবা দেওয়া হচ্ছে । এগুলো সবকিছু ঠিক করা দরকার । এতো ডাক্তার ও এতো বড় হাসপাতালে এতো সুযোগ সুবিধা দেওয়া হয়েছে । মুখ্যমন্ত্রী এতো করেছেন ৷ কিন্ত সঠিক পরিচর্যা করা হচ্ছে না ৷’’
তিনি সাধারণ মানুষের উদ্দেশ্যে আরও বলেন, ‘‘সকলের পরিষ্কারের ব্যাপারে সজাগ হওয়া দরকার ৷’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘আমি হাসপাতাল সুপারকে বলে গিয়েছি সব যাতে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন হয় । যত্রতত্র মাংস, কলার খোসা ও পানের পিক পড়া যেন বন্ধ হয়, সেটা দেখার জন্য বলেছি । হাসপাতালের মধ্যে কুকুর বেড়াল না ঘোরে, সেটা অবশ্যই দেখতে হবে ৷ আমি আবারও আসব ৷"