কলকাতা, 20 জুলাই:'তৈলাক্ত বাঁশে দু'ফুট উঠছি, এক ফুট নামছি' । এজলাসে ইডির তদন্ত নিয়ে এভাবেই অসন্তোষ প্রকাশ প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতির। অসন্তুষ্ট মানিক ভট্টাচার্য বললেন, "এ তো সপ্তম-অষ্টম শ্রেণির অঙ্কের মতো ব্যাপার হচ্ছে। বারবার চার্জ গঠনের সময় ইডি দাবি করছে তদন্ত চলছে।"
প্রাথমিকের নিয়োগ মামলায় তদন্ত কেন এগোচ্ছে না সেই প্রশ্ন তুললেন তিনি। এদিন আদালতে হাজির হয়ে বিচারক প্রশান্ত মুখোপাধ্যায়ের এজলাসে নিজেই সওয়াল করেন তিনি। সেখানেই ইডির তদন্তের সঙ্গে স্কুলের তৈলাক্ত বাঁশ ও বাঁদরের উঠাপড়ার অঙ্কের তুলনা করেন তিনি। মানিকবাবু জানান, যে কোনও অভিযুক্তকে জেল হেফাজতে পাঠানোর আগে তাঁর বিরুদ্ধে কী কী তথ্য রয়েছে, তা জানাতে হয় তদন্তকারী সংস্থাকে। আগেও এই ধরনের নির্দেশের উদাহরণ রয়েছে। আদালত চাইলে এবিষয়ে ইডির কাছে ব্যাখ্যা চাইতে পারে। কারণ, দিনের পর দিন ইডি দাবি করছে, তদন্ত চলছে। কিন্তু তদন্তের নামে আদতে কিছুই হচ্ছে না।
কলকাতার বিশেষ ইডি আদালতে হাজির করা হয় প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতিতে গ্রেফতার হওয়ার প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি মানিক ভট্টাচার্যকে। একইসঙ্গে প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও তাঁর বান্ধবী অর্পিতা মুখোপাধ্যায়কেও এদিন ভার্চুয়ালি হাজির করা হয় বিচারক প্রশান্ত মুখোপাধ্যায়ের এজলাসে। পাশাপাশি তৃণমূলের প্রাক্তন যুবনেতা কুন্তল ঘোষ ও 'কালীঘাটের কাকু' সুজয় কৃষ্ণ ভদ্র ও এদিন হাজির হয়েছিলেন নগর দায়রা আদালতের বিশেষ ইডির আদালতে।
অন্যদিকে, পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের কিছু নথি তাঁর আইনজীবী ইডিকে দেওয়ার আর্জি জানিয়েছিলেন। যদিও ইডির যুক্তি তাঁরা পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ব্যাপারে নতুন আর একটি রিপোর্ট তৈরি করছে ফলে এই নথি দেওয়া সম্ভব নয়। বিচারক ইডির এই যুক্তি গ্রহণযোগ্য নয় বলে জানিয়েছেন। 17 অগস্ট পরবর্তী শুনানির দিন ইডিকে ওই নথি দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। এছাড়াও অর্পিতার আইনজীবী জানান, ইডি তদন্তের নামে এভাবে আটকে রাখতে পারে না কাউকেই। অর্পিতার নানারকম শারীরিক সমস্যা রয়েছে।
কুন্তল ঘোষের আইনজীবী ইডির তদন্ত নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেন। বিচারককে জানান, বারবার ইডি দাবি করছে, তাদের তদন্ত চলছে। আবার সাপ্লিমেন্টারি চার্জশিটের কথাও বলা হচ্ছে। তদন্ত শেষ না-হলে বিচার কবে হবে? আদালত থেকে বেরোনোর সময়ে কুন্তল জানান, রবিবার 21 জুলাইয়ের মঞ্চে থাকতে পারবেন না বলে তাঁর খারাপ লাগছে। বলেন, "ফাঁদে পড়ে আছি। বিচার পাচ্ছি না।"