মালদা, 25 অক্টোবর: দলীয় পতাকা হাতে তৃণমূল বিধায়কের দাদাগিরি ! শুক্রবার লোকজন নিয়ে রতুয়া 1 নম্বর ব্লকের রাঙামাটিয়া জলকর দখল করলেন রতুয়ার বিধায়ক সমর মুখোপাধ্যায় ! শুধু জলকর দখল করাই নয়, মাছ চাষের লিজ পাওয়া ফিশারম্যান কো-অপারেটিভ সোসাইটির অস্থায়ী ঘরেও ভাঙচুর চালান তাঁরা ৷
বিধায়কের দাবি, বেআইনিভাবে রাঙামাটিয়া জলকর দখল করেছে কিছু দুষ্কৃতী ৷ এতে এলাকার মৎস্যজীবীরা আর্থিক সংকটে পড়েছেন ৷ এই ঘটনায় ফিশারম্যান কোঅপারেটিভ সোসাইটির তরফে বিধায়কের বিরুদ্ধে রতুয়া থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে ৷ তদন্ত শুরু হলেও ঘটনা সম্পর্কে কোনও পুলিশ কর্তাই প্রতিক্রিয়া দিতে চাননি ৷
মালদার রতুয়ায় ফিশারম্যান কো-অপারেটিভ সোসাইটির অস্থায়ী ঘরে ভাঙচুর (ইটিভি ভারত) রতুয়া 1 নম্বর ব্লকে রাঙামাটিয়ায় মরা কালিন্দ্রী নদীতে 89 একর এলাকাজুড়ে জলকরের অস্তিত্ব ৷ জলকরের অর্থ সরকারি নিয়ম মেনে কোনও নদী কিংবা খালের বিস্তীর্ণ অংশ ঘিরে মাছ চাষ করা ৷ এর জন্য জলকরের লিজ দেয় প্রশাসন ৷ কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে এই জলকরের লিজ পেয়েছে বাজিতপুর ফিশারম্যান কোঅপারেটিভ সোসাইটি ৷ লিজ পাওয়ার পর সেখানে অন্তত এক কোটি টাকার মাছও ছাড়া হয়েছে ৷ এদিন দুপুরে লোকজন নিয়ে সেখানে উপস্থিত হন তৃণমূল বিধায়ক সমর মুখোপাধ্যায় ৷ হাতে তৃণমূলের পতাকা নিয়ে জলকরে এসে তাঁরা ভাঙচুর শুরু করে দেন ৷
দলীয় ঝান্ডা হাতে বিধায়কের বক্তব্য, "চাঁচলের মহকুমাশাসক, ফিশারম্যানের অ্যাডিশনাল ডিরেক্টর, আমি নিজে এবং বিডিও সবাই জানি বাজিতপুর সোসাইটির অধীনে থাকা জলকর স্থানীয় মৎস্যজীবীদের সহায়তার জন্য লিজ দেওয়া হয়েছে ৷ কিন্তু সে কথা বাজিতপুর সোসাইটির কোনও লোক জানে না ৷ উজ্জ্বলকুমার দাস নামে এক ব্যক্তি কিছু গুন্ডাকে ওই জলকর বিক্রি করে দেয় ৷ আর তার জেরে এলাকার হাজার হাজার মৎস্যজীবী না খেয়ে মরছেন ৷ এসডিও জানিয়ে দিয়েছেন, এখানে কোনও জোগানদার রাখা যাবে না ৷ "
এদিকে বাজিতপুর ফিশারম্যান কোঅপারেটিভ সোসাইটির ম্যানেজার উজ্জ্বলকুমার দাস বলেন, "গত 3 মে হাইকোর্টের নির্দেশে আমরা রাঙামাটিয়া জলকর সাত বছরের জন্য লিজে পাই ৷ সমস্ত সরকারি নিয়ম মেনে আমরা সেখানে মাছ চাষ শুরু করি ৷ এখন সেখানে প্রায় এক কোটি টাকার মাছ ছাড়া আছে ৷ জোগানদার এবং মাছ চাষের সামগ্রী রাখার ঘর এবং সেখানে থাকা জোগানদারদের দু'টি মোটর বাইক সহ সবকিছু ভাঙচুর করা হয়েছে ৷ লুটপাট চালানো হয়েছে ৷ জাল দিয়ে জলকরের মাছও লুট করা হয়েছে ৷ জোগানদাররা পালিয়ে প্রাণে বেঁচেছেন ৷ গোটা ঘটনার জন্য দায়ী বিধয়ক সমর মুখোপাধ্যায় ৷ তাঁর বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করছি ৷" এদিকে, এই ঘটনায় তৃণমূলকেও বিঁধেছেন বিজেপির দক্ষিণ মালদা সাংগঠনিক জেলার সাধারণ সম্পাদক অম্লান ভাদুড়ি ৷ তিনি বলেন, “তৃণমূলের বিধায়ক তাঁর হার্মাদদের নিয়ে দলের ঝান্ডা হাতে দিঘি দখল করছেন ৷"