পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

ETV Bharat / state

তিরানব্বইয়ের 21 জুলাই মহাকরণ অভিযানে গুলি খেয়েছিলেন সুশান্ত ঘোষ

তৃণমূল কাউন্সিলর সুশান্ত ঘোষকে খুনের চেষ্টা করা হয় শুক্রবার সন্ধ্যায় ৷ এই তৃণমূল নেতা 1993 সালের 21 জুলাই গুলি খেয়েছিলেন ৷

SUSHANTA GHOSH
তিরানব্বইয়ের 21 জুলাই মহাকরণ অভিযানে গুলি খেয়েছিলেন সুশান্ত ঘোষ (নিজস্ব চিত্র)

By ETV Bharat Bangla Team

Published : 4 hours ago

কলকাতা, 16 নভেম্বর: সুশান্ত ঘোষ ৷ রাজনীতির আঙিনায় এই নামটা শুনলেই কঙ্কাল-কাণ্ডে গ্রেফতার হওয়া সিপিএম নেতার ছবিটা সামনে ভেসে ওঠে ৷ কিন্তু শুক্রবারের সন্ধ্যার পর সেই ছবিটা বদলাতে বাধ্য ৷ কারণ, ওই সময় থেকে সংবাদ শিরোনামে রয়েছেন তৃণমূলের সুশান্ত ঘোষ ৷ পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জ থেকে বন্দুক তাক করেও যাঁকে মারতে পারেনি আততায়ী ৷ বরাতজোরে বেঁচে গিয়েছেন তিনি ৷

তবে এমন ঘটনা তাঁর সঙ্গে যে এই প্রথমবার ঘটল, তা নয় ৷ 31 বছর আগেও একবার বন্দুকের নলের সামনে পড়তে হয়েছিল তাঁকে ৷ যুব কংগ্রেসের তৎকালীন নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডাকে যে মহাকরণ অভিযান ঘিরে রণক্ষেত্রের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল ধর্মতলায়, প্রাণ হারিয়েছিলেন 13 জন, যাঁদের স্মরণে প্রতিবছর 21 জুলাই শহিদ দিবস পালিত হয়, সেই রাজনৈতিক কর্মসূচিতে গিয়ে বন্দুকের নলের সামনে পড়েও বরাতজোরে বেঁচে গিয়েছিলেন সুশান্ত ঘোষ ৷

তবে সেবার গুলি খেতে হয়েছিল সেই সময়ের কংগ্রেস, বর্তমানে তৃণমূলের এই নেতাকে ৷ আর সেই কারণেই সম্ভবত বন্দুকের নলের সামনেও তিনি অবিচল ছিলেন শুক্রবার সন্ধ্যায় ৷ আততায়ীকে ধরতে তৎপরতা দেখাতে পেরেছিলেন ৷ তাঁর সেই অবিচল মনোভাবের আঁচ শনিবারও মিলল, যখন তিনি অবলীলায় বললেন, ‘‘গুলি-বন্দুক নিয়ে ভয় পাচ্ছি না ।’’

কলকাতা পুরনিগমের 108 নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সুশান্ত ঘোষের রাজনীতিতে হাতেখড়ি দক্ষিণ কলকাতায় ছাত্র আন্দোলনের মাধ্যমে ৷ ছাত্র পরিষদ নেতা হিসেবে কসবা-সহ দক্ষিণ কলকাতায় তাঁর যথেষ্ট পরিচিতি ছিল । 1993 সালে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডাকে মহাকরণ অভিযানে শামিল হয়ে গুলিবিদ্ধ হয়েছিলেন তিনি । সেদিনও মৃত্যু তাঁকে ছুঁয়েও ছুঁতে পারেনি । গুলি লেগেছিল বাম দিকের বুকের উপরের অংশে । ভর্তি করা হয়েছিল এসএসকেএম হাসপাতালে । দেড় মাস ভর্তি ছিলেন অস্ত্রোপচারের পরে । সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরলেও স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে কেটেছিল আরও ছয়মাস ।

বাম জামানার শেষে 2010 সালের ভোটে 107 নম্বর ওয়ার্ডে তৃণমূল কংগ্রেসের টিকিট লড়াই করে কাউন্সিলর নির্বাচিত হন তিনি । 2015 ফের তিনি নির্বাচিত হন । কলকাতা কর্পোরেশন তৃণমূল বোর্ডের মেয়র পরিষদ করা হয় তাঁকে । রাস্তা বিভাগের দায়িত্ব পান। ফের তাঁকে সরিয়ে দেওয়া হয় । তাঁকে বরো চেয়ারম্যান করা হয় ।

2021 সালে তাঁর 107 নম্বর ওয়ার্ড মহিলা সংরক্ষিত হলে তাঁকে 108 নম্বর ওয়ার্ডে টিকিট দেওয়া হয় । সেখান থেকেও তিনি জয়ী হন । তবে 107 নম্বর ওয়ার্ডে মহিলা কাউন্সিলর লিপিকা মান্নার সঙ্গে নানা বিষয় মতানৈক্য হওয়াতে সম্পর্ক তলানিতে ঠেকেছে বলে অভিযোগ উঠেছে একাধিকবার । বিভিন্ন সময় দেখা গিয়েছে দুই গোষ্ঠীর সংঘর্ষ । তবে তাঁকে খুন করার জন্য সুপারি কিলার পাঠানো হবে, এমনটা ভাবতে পারেননি সুশান্ত ঘোষ ।

মহাকরণ অভিযানের 31 বছর পর ফের তাঁকে বন্দুকের নলের সম্মুখে দাঁড়াতে হল । তখন যেমন তৎকালীন বিরোধী নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পাশে ছিলেন, আজও তৃণমূল নেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রীকে পাশে পেয়েছেন সুশান্ত । ঘটনার পরেই তাঁকে ফোন করে কথা বলেন পাশে থাকার আশ্বাস দেন ।

সুশান্ত ঘোষ বলেন, ‘‘রাজনৈতিক লড়াই 21 জুলাই মহাকরণ অভিযানে গুলিবিদ্ধ হয়েছিলাম । গুলি বন্দুক নিয়ে ভয় পাচ্ছি না । খারাপ লাগছে নিজের পাড়ায় নিজের বাড়ির সামনে এমন ঘটনায় । তবে মুখ্যমন্ত্রী আমার নেত্রী তিনি ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ফোন করে পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন ।’’

ABOUT THE AUTHOR

...view details