সদাইপুর (বীরভূম), 3 নভেম্বর: জেলা পরিষদের সভাধিপতি কাজল শেখের সঙ্গে চা-খাওয়ার 'অপরাধে' পদ খোয়ালেন দলেরই বুথ সভাপতি। এমনই অভিযোগ, বীরভূমের সদাইপুর থানার লালমোহনপুর এলাকার একটি বুথের অপসারিত সভাপতি শেখ খয়রাতের ৷ সিউড়ির বিধায়ক তথা তৃণমূলের কোর কমিটির আহ্বায়ক বিকাশ রায়চৌধুরীর নির্দেশে দলীয় পদ থেকে তাঁকে অপসারণ করা হয়েছে বলে খবর। যদিও, এই মর্মে বীরভূমের তৃণমূল নেতারা মুখ খুলতে নারাজ।
পদ খোয়ানো পর শেখ খয়রাত বলেন, "বিধায়ক বিকাশ রায়চৌধুরী ও সদাইপুর থানার ওসি মিখাইল মিয়া আমাকে পদ থেকে সরিয়েছেন। আমরা অপরাধ, জেলা সভাধিপতি কাজল শেখের সঙ্গে চা-খাওয়া ৷ বিধায়ককে জানালে তিনি বললেন, কাজল শেখের লোক হয়েছিস, কী আর করা যাবে! কাজল শেখকে বিষয়টা জানাব ৷ 12 বছর ধরে আমি দলের বুথ সভাপতির পদ সামলেছি। ভোটে লিড দিয়েছি ৷ আর দলেরই নেতার সঙ্গে চা খাওয়ার জন্য আমায় সরিয়ে দেওয়া হল।"
সভাধিপতির সঙ্গে চা খেয়ে পদ গেল বুথ সভাপতির (ইটিভি ভারত) গরু পাচার ও আর্থিক তছরুপের মামলায় জামিন পেয়ে 2 বছর পর বীরভূমে ফিরেছেন অনুব্রত মণ্ডল। অনুব্রতর অনুপস্থিতিতে তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কোর কমিটি গঠন করে দিয়েছিলেন ৷ অনুব্রত ফিরে আসার পরও কোর কমিটি একইভাবে রয়ে গিয়েছে। এই কোর কমিটিতে রয়েছেন, রাজ্যের কারামন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিনহা, বিধানসভার উপাধ্যক্ষ আশিষ বন্দ্যোপাধ্যায়, জেলা পরিষদের সভাধিপতি কাজল শেখ, সিউড়ির বিধায়ক বিকাশ রায়চৌধুরী, লাভপুরের বিধায়ক অভিজিৎ সিংহ ও জেলার তৃণমূল নেতা সুদীপ্ত ঘোষ ৷
কাজল শেখের সঙ্গে বুথ সভাপতি শেখ খয়রাত (নিজস্ব ছবি) এই কমিটি এখনও থাকবে নাকি তার অবলুপ্তি ঘটানো হবে তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে দলের অন্দরেই। পাশাপাশি অনুব্রতকে কমিটি নিয়ে আসার দাবিও তুলেছেন তাঁর ঘনিষ্ঠরা। এখান থেকেই নতুন করে কাজল-কেষ্টর মধ্যে দ্বন্দ্ব শুরু হয়েছে বলে মনে করে রাজনৈতিক মহলের একটা বড় অংশ। এর আগে 17 অক্টোবর থেকে 30 অক্টোবর পর্যন্ত জেলার বিভিন্ন প্রান্তে বিজয়া সম্মিলনীর আয়োজন করেছিল তৃণমূল। কোনও মঞ্চে কাজল-কেষ্টকে এক সঙ্গে দেখা যায়নি ৷ বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অনুব্রতর সঙ্গে কোর কমিটির বাকি সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন ৷
বুথ সভাপতি শেখ খয়রাতের সঙ্গে গ্রামবাসী (নিজস্ব ছবি) কাজল-কেষ্ট ও কাজলের সঙ্গে কোর কমিটির বাকিদের সংঘাত যে বাড়ছে তা এখন কার্যত সর্বজনবিদিত। সম্প্রতি সিউড়ি 1 নম্বর ব্লকের কচুজোড়ে সারদা সন্তান সংঘের কালীপুজোর উদ্বোধন করতে গিয়েছিলেন জেলা পরিষদের সভাধিপতি কাজল শেখ ৷ পরে তিনি একটা চা-চক্রের আয়োজন করেন ৷ সেখানেই হাজির ছিলেন শেখ খয়রাত। এরপরই তাঁর পদ যায়। এ ব্যাপারে তৃণমূলের তরফে আনুষ্ঠানিকভাবে কী জানানো হয় তার দিকেই তাকিয়ে রাজনৈতিক মহল।