পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

ETV Bharat / state

বাংলাদেশের নাগরিক! তৃণমূল প্রধানের ওবিসি শংসাপত্র বাতিল - SDO REJECTS CASTE CERTIFICATE

বুধবার মহকুমাশাসক তৃণমূল নেত্রী লাভলি খাতুনের ওবিসি শংসাপত্র বাতিলের নির্দেশ দেন। এরপর কি পদ হারাবেন শাসক দলের নেত্রী?

SDO REJECTS CASTE CERTIFICATE
তৃণমূল প্রধানের ওবিসি শংসাপত্র বাতিল (নিজস্ব চিত্র)

By ETV Bharat Bangla Team

Published : Jan 29, 2025, 9:36 PM IST

মালদা, 29 জানুয়ারি: অভিযোগ ছিল, তিনি বাংলাদেশের নাগরিক ৷ ভারতে এসে বিয়ে করে জাল ভোটার, আধার-সহ বিভিন্ন পরিচয়পত্র, এমনকী ওবিসি শংসাপত্রও পেয়েছেন ৷ সেই শংসাপত্রের সাহায্যে গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে কংগ্রেসের প্রতীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে জয়ী হন ৷ পরে তৃণমূলে যোগ দিয়ে পঞ্চায়েত প্রধানও হয়ে যান ৷ এনিয়ে হরিশ্চন্দ্রপুর রশিদাবাদ গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান লাভলি খাতুনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী তৃণমূল প্রার্থী ৷ তাতে কোনও কাজ না হওয়ায় শেষে লাভলি খাতুনের বিরুদ্ধে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা দায়ের করেন ৷ এবার মহকুমাশাসক বুধবার লাভলি খাতুনের ওবিসি শংসাপত্র বাতিলের নির্দেশ দিয়েছেন ৷

হাইকোর্টে দায়ের হওয়া মামলা এখনও বিচারপতি অমৃতা সিনহার বেঞ্চে বিচারাধীন ৷ হাইকোর্টের নির্দেশে এই মামলায় দু’বার শুনানির আয়োজন করেন চাঁচলের মহকুমাশাসক সৌভিক মুখোপাধ্যায় ৷ বুধবার তিনি লাভলি খাতুনের ওবিসি শংসাপত্র বাতিলের নির্দেশ দিয়েছেন ৷ তবে কি লাভলি খাতুনের প্রধান পদ এবার বাতিল হতে চলেছে ? যদিও তাঁর স্বামীর দাবি, এমন কোনও নির্দেশিকার কথা তাঁদের জানা নেই ৷

তৃণমূল প্রধানের ওবিসি শংসাপত্র বাতিল (ইটিভি ভারত)

তাঁদের কাছে এই নির্দেশিকার কোনও কপিও আসেনি ৷ কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে, লাভলি খাতুন যদি সত্যিই বাংলাদেশি হন তবে তিনি কীভাবে ভারতীয় নাগরিকত্ব পেলেন ? কীভাবে তাঁর ভোটার, আধার, রেশন কার্ড হল ? সরকারি নথি বলছে, তাঁর বাবার নাম মোস্তাফা হোসেন ৷ তিনি রশিদাবাদ পঞ্চায়েতের শালদহ গ্রামের বাসিন্দা ৷ কিন্তু মোস্তাফা যে তাঁর বাবা নন তা জানিয়ে দিয়েছিলেন ওই এলাকার বাসিন্দারা ৷ মোস্তাফার দুই ছেলে, এক মেয়ে ৷ মেয়ের নাম লাভলি নয় ৷ যদিও এই ঘটনার মামলাকারী রাহেনা সুলতানা বলছেন, এর পিছনে তৃণমূলের নেতাদেরই মদত রয়েছে ৷

রাহেনা সুলতানার বক্তব্য, "ওবিসির জাল সার্টিফিকেট দেখিয়ে উনি প্রধান হয়েছেন ৷ এনিয়ে এসডিও, বিডিও, থানা, সব জায়গায় অভিযোগ করেছিলাম ৷ হাইকোর্টেও মামলা করেছিলাম ৷ ওঁর বাড়ি আমাদের গ্রামেই ৷ মনোনয়ন জমা দেওয়ার সময়ই জানতাম ভুয়ো ওবিসি শংসাপত্র জমা দিয়েছেন ৷ তাই অভিযোগ জানিয়েছিলাম ৷ ওঁর সমস্ত নথিই জাল ৷ মহকুমাশাসকের রায়ে খুব ভালো লাগছে ৷ তিনি যখন প্রধান হয় তখন দলকে সবকিছু জানিয়েছিলাম ৷ কিন্তু আমার কথায় কেউ গুরুত্ব দেয়নি ৷ ব্যবস্থাও নেয়নি ৷ ওঁর রেশন, ভোটার, আধার কার্ড কীভাবে হল সেটাও আশ্চর্যের ৷ ওর এই কাজের পিছনে নিশ্চয়ই তৃণমূলের একাংশের নেতাদের মদত রয়েছে ৷”

এদিকে হরিশ্চন্দ্রপুর পঞ্চায়েত সমিতির বিরোধী দলনেতা তথা তৃণমূল নেতা স্বপন আলি বলছেন, "এক্ষেত্রে প্রশাসনের চোখে ধুলো দেওয়া হয়েছে ৷ তবে লাভলি খাতুন কিন্তু কংগ্রেসের প্রতীকে প্রার্থী হয়েছিলেন ৷ তিনি কংগ্রেসের সদস্য ৷ কংগ্রেসই জাল শংসাপত্র বের করার জন্য যা যা সহযোগিতা করা প্রয়োজন সেটা করেছিল ৷ এটা কংগ্রেস-সিপিআইএম জোটের বিষয় ৷ এখানে তৃণমূলের কিছু নেই ৷ ভোটের নমিনেশনের সময় তৃণমূলই এনিয়ে অভিযোগ করেছিল ৷ প্রশাসন কোনও পদক্ষেপ না নেওয়ায় আমরা ভেবেছিলাম কাগজপত্র ঠিক আছে ৷ যদি প্রথমেই জালিয়াতির বিষয়টি প্রমাণিত হত তবে ওকে আমরা চেয়ারে বসাতাম না ৷" এদিন লাভলি খাতুনের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি ৷ তাঁর মোবাইল ফোন সুইচড অফ ৷ তবে তাঁর স্বামী রবিউল আলমের দাবি, “আমি এসব কিছু জানি না ৷ আমার কাছে কোনও অর্ডার কপি আসেনি ৷ সেই কপি পেলে যা বলার বলতে পারব ৷”

ABOUT THE AUTHOR

...view details