আসানসোল, 24 নভেম্বর: বাংলা-ঝাড়খণ্ড সীমানায় অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ অস্ত্রভাণ্ডার হাতে এল রাজ্য পুলিশের এসটিএফের ৷ তাও আবার পুলিশের চেকপোস্টের নাকের ডগায় ! শনিবার রাতের অভিযানে দুই রাজ্যের সীমানা লাগোয়া একটি পরিত্যক্ত বাড়ি থেকে 10টি ওয়ান শটার এবং বিপুল পরিমাণ কার্তুজ উদ্ধার করেছেন স্পেশাল টাস্ক ফোর্সের গোয়েন্দারা ৷ ঘটনায় দুই অস্ত্রকারবারীকে গ্রেফতার করা হয়েছে ৷ আজ তাঁদের ট্রানজিট রিমান্ডে কলকাতায় আনা হয়েছে ৷
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, শনিবার রাতে কলকাতা থেকে রাজ্য পুলিশের এসটিএফের একটি দল কুলটি থানা এলাকার ডুবুরডি চেকপোস্টের কাছে একটি পরিত্যক্ত বাড়িতে হানা দেয় ৷ 19 নম্বর জাতীয় সড়ক সংলগ্ন পুরনো কল্যাণেশ্বরী মন্দির সংলগ্ন সার্ভিস রোডের ওই বাড়ি থেকে 10টি ওয়ান শটার, 50 রাউন্ড এইট এমএম কার্তুজ এবং 4 রাউন্ড নাইন এমএম কার্তুজ উদ্ধার করা হয় ৷
রাজ্য পুলিশের এসটিএফের হানায় উদ্ধার 10টি ওয়ান শটার ও বিপুল পরিমাণ কার্তুজ ৷ (নিজস্ব চিত্র) এই বাড়ি থেকে মীনারুল ইসলাম ও সফিকুল মণ্ডল নামে দুই অস্ত্রকারবারিকেও গ্রেফতার করা হয়েছে ৷ পুলিশ সূত্রে খবর, তাঁদের বাড়ি মুর্শিদাবাদ জেলায় ৷ প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, ঝাড়খণ্ড থেকে এরাজ্যে পাচারের উদ্দেশ্যে নিয়ে আসা হয়েছিল আগ্নেয়াস্ত্রগুলি ৷ দুই রাজ্যের সীমানা লাগোয়া অঞ্চলের ওই পরিত্যক্ত বাড়িতে মজুত করা হচ্ছিল আগ্নেয়াস্ত্রগুলি ৷
কিন্তু, আশ্চর্যের বিষয় বাংলা ও ঝাড়খণ্ডের সীমানা হওয়ায় সেখানে কুলটি থানার চেকপোস্ট রয়েছে ৷ ঢিল ছোড়া দূরত্বে রয়েছে কুলটি থানার অন্তর্গত চৌরঙ্গি ফাঁড়ি ৷ তারপরেও স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনের কাছে এই বিপুল পরিমাণ অস্ত্র মজুত হওয়ার কোনও তথ্যই ছিল না ! যা ফের রাজ্য পুলিশ প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিয়েছে ৷
রবিবার সকালে ধৃতদের আদালতে পেশ করা হয় ৷ সেখান থেকে ট্রানজিট রিমান্ডে কলকাতায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে ধৃত মীনারুল ও সফিকুলকে ৷ ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করে অস্ত্রপাচার সংক্রান্ত আরও বিভিন্ন তথ্য জানতে চাইছে এসটিএফ ৷ এই অস্ত্রপাচারের সঙ্গে আর কারা যুক্ত আছে, কোথায় এই অস্ত্রপাচার হত, তা জানতে চাইছেন গোয়েন্দারা ৷
উল্লেখ্য, সাম্প্রতিক সময়ে কলকাতা তথা রাজ্যের বিভিন্ন জায়গা থেকে বেআইনি অস্ত্র উদ্ধার হয়েছে ৷ যার মধ্যে সবচেয়ে বড় ঘটনা কলকাতা পুরনিগমের 108 নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সুশান্ত ঘোষকে খুনের চেষ্টায় উদ্ধার হওয়া অস্ত্র ৷ তদন্তে নেমে কলকাতা পুলিশের গুন্ডা দমন শাখার গোয়েন্দারা জানতে পেরেছে, সুশান্ত ঘোষকে মারতে ভিনরাজ্য থেকে সুপারি কিলার এবং আগ্নেয়াস্ত্র আনা হয়েছিল ৷ যে ঘটনায় অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচে যান এই তৃণমূল কাউন্সিলর ৷