দার্জিলিং, 18 জুন: আর বাড়ি ফেরা হল না 6 বছরের স্নেহা মণ্ডলের। সোমবার শিলিগুড়ি থেকে বাবা মায়ের সঙ্গে কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসে চড়ে আত্মীয়ের বাড়ি থেকে ফিরছিল স্নেহা ৷ জানা গিয়েছে, স্নেহারা মালদহের বাসিন্দা। কিন্তু কে জানত, সেই ট্রেনই কেড়ে নেবে তার প্রাণ। শিলিগুড়ি সংলগ্ন ফাঁসিদেওয়া ব্লকের নিজবাড়ি এলাকায় দুর্ঘটনার কবলে পরে কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস। সেই দুর্ঘটনাই কাড়ল স্নেহার প্রাণ।
ট্রেন দুর্ঘনটায় শিশুর মৃত্যু (ইটিভি ভারত) উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের ডিন সন্দীপ সেনগুপ্ত বলেন, "শিশুটির লিভার থেকে রক্তক্ষরণ হচ্ছিল। রাতে অপারেশনও করা হয়। কিন্তু তাঁকে আমরা বাঁচাতে পারিনি। পাশাপাশি আটজনকে মৃত অবস্থায় আনা হয়েছিল। 37 জন চিকিৎসাধীন রয়েছেন। চারজনের অপারেশন হয়েছে। বাকিদের অবস্থা স্থিতিশীল রয়েছে।" স্নেহার মৃত্যুর খবর শোনার পর কাকা শ্যামল মণ্ডল বলেন, "শিলিগুড়িতে আত্মীয়ের বাড়ি থেকে ফিরছিল। ট্রেনটি দুর্ঘটনার কবলে পরে। জানি না কী করব।"
'মনে হচ্ছিল ট্রেনে বাজ পড়েছে, বাড়ি ফিরেও সেই ঝাঁকুনি অনুভব করছি'
সন্দীপ সেনগুপ্ত জানান, যে সকল দেহ আনা হয়েছিল তাঁদের ময়নাতদন্ত হয়ে গিয়েছে ৷ আর একজনের শরীরে অংশ এসেছিল, তা ফরেন্সিক ল্যাবে পাঠানো হয়েছে ৷ অপারেশন চার জনের হয়েছিল ৷ এখনও তিন জন ট্রমাকেয়ারে ভর্তি রয়েছেন ৷ তাঁদের অবস্থা আপাতত স্থিতিশীল ৷ কিন্তু অনেকের শরীর ভিতর থেকেও আঘাত পেয়েছে ৷ তাই পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে ৷ কালকের ঘটনায় বোর্ড গঠন করা হয়েছে ৷ সেই সকল চিকিৎসকদের পরামর্শ মেনে পুরো পরিষেবা দেওয়া হচ্ছে ৷ অর্থাৎ সোমবার কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস ট্রেন দুর্ঘটনায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল 10 ৷
জানা গিয়েছে, সোমবার গুরুতর অবস্থায় জেনারেল কামরা থেকে স্নেহাকে উদ্ধার করে বিপর্যয় মোকাবিলা দলের কর্মীরা। দ্রুত তাকে ভর্তি করা হয় উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে। তার দু'পায়ের হাড় সম্পর্ণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। পাশাপাশি জোর ধাক্কায় তার লিভারও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। রাতেই তার লিভার থেকে রক্তক্ষরণ বন্ধ করতে অপারেশন করা হয়। কিন্তু তাতে কোনও লাভ হল না।
মঙ্গলবার সকালে মৃত্যু হয় শিশুটির। শিশুটির মা-বাবাও আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। অন্যদিকে, এদিন দুর্ঘটনায় মৃত সোদপুরের বাসিন্দা শুভজিৎ মালির দেহ নিতে পৌঁছয় তাঁর পরিবার। তাঁদেরকে সবরকম সাহায্য করা হয় আরপিএফের তরফে। ময়নাতদন্তের পর দেহ পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে।