সন্দেশখালি, 17 ফেব্রুয়ারি: সন্দেশখালিকাণ্ডে গণধর্ষণ এবং খুনের চেষ্টার ধারা যুক্ত হতেই গ্রেফতার করা হল শেখ শাহজাহান ঘনিষ্ঠ তৃণমূলের ব্লক সভাপতি শিবপ্রসাদ হাজরা ওরফে শিবুকে। পুলিশ সূত্রে খবর, শনিবার সন্ধ্যায় ন্যাজাট থানা এলাকা থেকে প্রথমে আটক করা হয় তৃণমূলের এই দাপুটে নেতাকে। এরপর থানায় নিয়ে এসে শিবুকে দফায় দফায় জেরা করেন পুলিশের শীর্ষ কর্তারা। তারপরই তাঁকে সরকারিভাবে গ্রেফতার করা হয় ৷
এদিনই সন্দেশখালিকাণ্ডে নির্যাতিতা এক মহিলার গোপন জবানবন্দির (164 ধারা) ভিত্তিতে পুলিশ শাহজাহান ঘনিষ্ঠ তৃণমূল নেতা শিবু হাজরা এবং দলের বহিষ্কৃত নেতা উত্তম সর্দারের বিরুদ্ধে গণধর্ষণ এবং খুনের চেষ্টার মামলা রুজু করে। দু'জনের বিরুদ্ধেই ভারতীয় দণ্ডবিধির 376 (ডি) ও 307 ধারায় মামলা রুজু করেছে পুলিশ ৷ এরপরই পুলিশ শাহজাহানের শাগরেদ, সন্দেশখালি 2 নম্বর ব্লকের তৃণমূল সভাপতি শিবু হাজরার বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিতে কোমর বেঁধে নামে।
সাংবাদিক বৈঠক করে শিবুর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার ইঙ্গিতও দেন বসিরহাট জেলার পুলিশ সুপার মেহেদি হাসান রহমান। তিনি স্পষ্টত জানান, শীঘ্রই তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কোনও অভিযোগ থাকলে সেটাও খতিয়ে দেখা হবে। এরপর রাজ্য পুলিশের ডিজি রাজীব কুমারও জানান পুলিশ অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেবে ৷ এরপর সন্ধ্যায় শাহজাহান ঘনিষ্ঠ তৃণমূল নেতা শিবু হাজরা গ্রেফতার হয়। তার গ্রেফতারের দাবিতেই গত কয়েকদিন ধরে সন্দেশখালি উত্তাল ছিল। পুলিশের কাছে নির্যাতিত মহিলারা অভিযোগ জানালেও পুলিশ এতদিন শিবুর টিঁকিও ছুঁতে পারেনি। সেই শিবু হাজরার বিরুদ্ধে গণধর্ষণ এবং খুনের চেষ্টা ধারা যুক্ত হতেই পুলিশের হাতে গ্রেফতার হলেন শাহজাহান ঘনিষ্ঠ এই তৃণমূল নেতা।
অনেকেই মনে করছেন সন্দেশখালিকাণ্ড নিয়ে এমনিতেই চাপে রয়েছে শাসকদল। তার উপর শিবুর গ্রেফতারের দাবিতে যেভাবে গ্রামবাসীদের ক্ষোভ-বিক্ষোভ দিনদিন বাড়ছে তাতে ক্ষতে প্রলেপ দিতে এছাড়া আর কোনও উপায় ছিল না শাসকদলের কাছে। তবে শিবু-উত্তমরা গ্রেফতার হলেও সন্দেশখালিকাণ্ডের 'মাস্টারমাইন্ড' ফেরার তৃণমূলের বাহুবলী নেতা শেখ শাহজাহান কিন্তু অধরাই রয়ে গিয়েছেন পুলিশের থেকে। এদিকে, সন্দেশখালির মহিলাদের নির্দ্বিধায় এবং নির্ভয়ে থানায় অথবা পুলিশের বিশেষ টিমের কাছে অভিযোগ দায়ের করার পরামর্শ দিয়েছেন বসিরহাটের পুলিশ সুপার।