কলকাতা, 12 অক্টোবর: জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলনের পাশে দাঁড়িয়ে সরকারি চিকিৎসকদের পর এবার কর্মবিরতির পথে হাঁটলেন বেসরকারি হাসপাতালের চিকিৎসকরাও ৷ সোম ও মঙ্গলবার ওপিডি-সহ কয়েকটি পরিষেবা বন্ধ থাকছে।
শনিবার বিকেলে অনশন মঞ্চের সামনে সাংবাদিক বৈঠক করে এ কথা ঘোষণা করেন ফেডারেশন অফ মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন-এর চিকিৎসকরা ৷ চিকিৎসকদের অভিযোগ, পুলিশ এই সাংবাদিক বৈঠক করতে বাধা দিয়েছে ৷ তাই বাধ্য হয়ে রাস্তায় দাঁড়িয়েই সাংবাদিকদের বিষয়টি জানাতে হচ্ছে ৷
সিনিয়র চিকিৎসকদের কর্মবিরতি (ইটিভি ভারত) সিনিয়র চিকিৎসক স্বর্ণেন্দু সামন্ত বলেন, "14-15 অক্টোবর এই দু'দিন আমরা সমস্ত ওপিডি বন্ধ রাখব ৷ তাছাড়া জরুরি নয় এমন চিকিৎসাও হবে না। আমাদের ছেলেমেয়েগুলোকে বাঁচাতেই হবে ৷ আজ ওঁরা আমরণ অনশনে রয়েছেন ৷ ওঁরা আমাদের ছেলেমেয়ের মতো ৷"
বেসরকারি হাসপাতালে জরুরি পরিষেবা চালু থাকবে, জানান চিকিৎসক ৷ এই প্রসঙ্গে জরুরি পরিষেবা বলতে কী বোঝোলেন তার ব্যাখ্যাও দিয়েছেন । তিনি জানান, হৃদরোগ সংক্রান্ত সমস্যা আছেন এমন রোগীর চিকিৎসা যেভাবে হওয়া উচিত সেভাবেই হবে। নেফ্রোলজির সমস্যা রয়েছে এমন রোগীর ডায়ালসিসও হবে। আচমকা আঘাত পেয়ে কেউ হাসপাতালে এলে তাঁকেও চিকিৎসা না পেয়ে ফিরে যেতে হবে না।
স্বর্ণেন্দুর কথায়, "যাঁদের জীবন-মরণ সমস্যা আছে তাঁদের চিকিৎসা যেভাবে হওয়ার সেভাবে হবে ৷ সেক্ষেত্রে আমরা রোগীদের ফিরিয়ে দিতে পারি না ৷ ডাক্তার হিসেবে এটা করতেও পারি না ৷" এর বাইরে আউটডোর থেকে শুরু করে পরে করলে সমস্য়া হবে না এমন অস্ত্রোপচার 14 ও 15 অক্টোবর বন্ধ থাকবে ৷"
সিনিয়র চিকিৎসকদের তরফে চিকিৎসক স্বর্ণেন্দু সামন্ত হুঁশিয়ারি দেন, রাজ্য সরকার দাবি না-মানলে এই আন্দোলন দীর্ঘায়িত হবে ৷ তিনি বলেন, "সরকার যদি নমনীয় না হয়, তাহলে এই আন্দোলন অনির্দিষ্টকাল ধরে চলবে ৷ আমরা শুধু ডাক্তার হিসেবে মেরুদণ্ড সোজা করছি, তা নয় ৷ আমরা চাইছি সমাজের সর্বস্তরে, যেখানে যেখানে হুমকি সংস্কৃতি চলছে, সেই সব জায়গায় এই কালচার বন্ধ করতে হবে ৷ আজ হাসপাতালে যে কেউ আমাদের মেরে দিয়ে চলে যাচ্ছে ৷ আমরা চাই প্রতিটি রোগী সমান গুরুত্ব দিয়ে চিকিৎসা পান ৷ আমরা চাই না, কারও খারাপ হোক ৷"
আরজি কর হাসপাতালের পড়ুয়া চিকিৎসকের ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় দোষীর উপযুক্ত শাস্তির দাবি-সহ 10 দফা দাবিতে আমরণ অনশন শুরু করেন জুনিয়র ডাক্তাররা ৷ গত 6 অক্টোবর ধর্মতলায় বিভিন্ন সরকারি মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের 7 জন জুনিয়র চিকিৎসক অনশন করেন ৷ পরে সেই সংখ্যা আরও বাড়ে। রাজ্য সরকার তাঁদের দাবি না মানা পর্যন্ত অনির্দিষ্টকালীন অনশন চলবে বলেই বারবার জানান তাঁরা ৷ এর মধ্যে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় আরজি করের আইসিইউ-তে ভর্তি হন চিকিৎসক আন্দোলনের অন্যতম মুখ অনিকেত মাহাতো ৷ বাকি জুনিয়র চিকিৎসকদেরও স্বাস্থ্যের অবনতি হচ্ছে বলেই জানা গিয়েছে ৷ তাঁদের আন্দোলনকে সমর্থন জানিয়ে এবার পাশে দাঁড়ালেন বেসরকারি হাসপাতালের সিনিয়র চিকিৎসকরা ৷