এসএসসি নিয়ে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে যাচ্ছে কমিশন কলকাতা, 22 এপ্রিল: সুপ্রিম কোর্টে যাচ্ছে স্কুল সার্ভিস কমিশন ৷ কলকাতা হাইকোর্টের 2016 সালের এসএসসি পুরো প্যানেল বাতিলের রায়তে খুশি নয় তারা ৷ আজ সাংবাদিক বৈঠক করে এমনটাই জানিয়েছেন স্কুল সার্ভিস কমিশনের চেয়ারম্যান সিদ্ধার্থ মজুমদার ৷ তিনি প্রশ্ন তুলেছেন, কীসের ভিত্তিতে ও কেন প্রায় 26 হাজার চাকরি বাতিল হল ?
কলকাতা হাইকোর্ট 2016 সালের এসএসসি নিয়োগের পুরো প্যানেল বাতিল করে দিয়েছে ৷ যে রায় ঘোষণার সময় ডিভিশন বেঞ্চ মন্তব্য করে, "সতেরো রকম উপায় জালিয়াতি করে চাকরি চুরি করা হয়েছে ৷" রায় নিয়ে স্কুল সার্ভিস কমিশনের বর্তমান চেয়ারম্যান সিদ্ধার্থ মজুমদার বলেন, "দেড় বছর ধরে চলছে সিবিআইয়ের এই তদন্ত ৷ সেখানে তারা পাঁচ হাজার জনের বিষয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছে ৷ এবার সম্পূর্ণ প্যানেল বাতিল করে দেওয়া হল ৷ মানে প্রায় 26 হাজার চাকরি বাতিল হয়েছে ৷ সেটা কেন, কীভাবে, কোন গ্রাউন্ড হল ? সেটা জানতে অবশ্যই আমরা শীর্ষ আদালতে যাব ৷"
কলকাতা হাইকোর্ট আজকের রায়ে নতুন করে টেন্ডার ডেকে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করতে নির্দেশ দিয়েছে ৷ এই নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়া কবে থেকে শুরু হবে ? এর প্রেক্ষিতে এসএসসি চেয়ারম্যান বলেন, "নতুন করে কোনও বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের কথা ভাবছি না ৷ কোর্ট নির্দেশ দিলেই সেটা করতে হবে, তার কিছু পূর্ব শর্ত আছে ৷ সেই শর্ত মেনে সরকারের তরফে গ্রিন সিগন্যাল মিললে আমরা কাজ শুরু করব ৷" তবে, লোকসভা নির্বাচন চলাকালীন কিছুই হবে না ৷ নিয়োগ সংক্রান্ত প্রক্রিয়া ও টেন্ডারের বিজ্ঞপ্ত সব ভোট মিটলে হবে বলে জানিয়েছেন সিদ্ধার্থ মজুমদার ৷
আজ 2016 সালের এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতি মামলার রায় দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ ৷ যে রায়ে নবম-দ্বাদশ এবং এসএলএসটি বা গ্রুপ-সি ও গ্রুপ-ডি’র নিয়োগের পুরো প্যানেল বাতিল করেছে আদালত ৷ পাশাপাশি, সিবিআইকে এই মামলায় তদন্ত জারি রাখতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে ৷ বেআইনিভাবে যারা চাকরি পেয়েছিলেন, প্রয়োজনে তাদের হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের নির্দেশ দিয়েছে আদালত ৷ এদিনের রায় ঘোষণার সময় ডিভিশন বেঞ্চ মন্তব্য করে, সতেরো রকমভাবে এসএসসির চাকরি চুরির জন্য জালিয়াতি করা হয়েছিল ৷
এমনকি বেআইনি নিয়োগের জন্য অবৈধ চাকরিপ্রার্থীরা সুপার নিউমারিক পোস্ট করেছিলেন ৷ তাঁদের প্রয়োজনে গ্রেফতার করা যাবে বলে জানিয়েছে আদালত ৷ রাজ্য সরকার ও তার মন্ত্রিসভার ভূমিকা নিয়েও ক্ষোভপ্রকাশ করা হয়েছে কলকাতা হাইকোর্টের রায়ে ৷ আদালত 287 পাতার রায়ের কপিতে উল্লেখ করেছে, মোট চারটি ক্যাটাগরিতে বেআইনি নিয়োগের জন্য শূন্যপদ তৈরি করা হয়েছিল ৷ এমনকি এসএসসি উত্তীর্ণদের তালিকায় নাম না সত্ত্বেও নিয়োগপত্র পেয়েছেন অনেকে ৷ আর এদের নিয়োগের জন্য এসএসসি অতিরিক্ত শূন্যপদ তৈরি করেছিল ৷ সব মিলিয়ে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধেই 2016 সালের এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতিতে মদতের অভিযোগ তুলেছে কলকাতা হাইকোর্ট ৷ এবার তার ভিত্তিতেই দুর্নীতিতে যুক্তদের ধরতে সিবিআই তদন্ত শুরু করবে ৷
আরও পড়ুন:
- 25,753 জনের নিয়োগ বাতিল, হাইকোর্টের রায়ে অখুশি এসএসসি যাচ্ছে শীর্ষ আদালতে
- বাতিল 2016 এসএসসি'র সম্পূর্ণ নিয়োগ প্রক্রিয়া, একনজরে নির্দেশনামায় কী বলল হাইকোর্ট