পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

ETV Bharat / state

'ভূতের গ্রাম' জনশূন্য ! একমাত্র লক্ষ্মীপুজোয় ফিরে আসে মানুষ, কোথায় ?

'ভূতের গ্রাম' নামে পরিচিত বাংলার এই গ্রাম ৷ এটি একেবারে জনশূন্য ৷ একমাত্র লক্ষ্মীপুজোর দিনই নিজেদের গ্রামে ফিরে আসেন গ্রামবাসীরা ৷

By ETV Bharat Bangla Team

Published : 4 hours ago

ETV BHARAT
'ভূতের গ্রাম' জনশূন্য ! (নিজস্ব চিত্র)

আসানসোল, 16 অক্টোবর: সারাবছর থাকে জনমানবশূন্য ৷ তবে সেই গ্রামেই একটা দিন ফিরে আসেন গ্রামবাসীরা ৷ লক্ষ্মীপুজোর দিন । ধুমধাম করে পুজো হয় । পুজো শেষে আবার সবাই গ্রাম ছেড়ে চলে যান । এমনই আশ্চর্য লক্ষ্মীপুজো হয়ে আসছে এই বাংলায় । কুলটির নিয়ামতপুর শহরের কাছে 'ভূতের গ্রাম' বলে পরিচিত বেনাগ্রামের ঘটনা ৷

2008-09 সালে হঠাৎই গুজব ছড়ায় যে, ভূতের ভয়ে গ্রামছাড়া হচ্ছেন কুলটির বেনাগ্রামের বাসিন্দারা । রাতারাতি নিজেদের পাকা ভিটে ছেড়ে, গ্রাম ছেড়ে লোকজন উধাও হয়ে যায় । আর তাঁরা কেউ গ্রামে স্থায়ীভাবে ফিরে আসেননি । কিন্তু কেনই বা গ্রামের লোক গ্রাম ছেড়ে চলে গেলেন তা রহস্যই রয়ে যায় ।

একমাত্র লক্ষ্মীপুজোয় 'ভূতের গ্রাম'-এ ফিরে আসে মানুষ (নিজস্ব ভিডিয়ো)

গুজব ছড়িয়েছিল, ভূতের ভয়ে নাকি গ্রামছাড়া হয়েছেন গ্রামের মানুষজন । কিন্তু বাসিন্দারা তা মানতে নারাজ ৷ তাঁদের কথায়, সেই সময় গ্রামে কোনও উন্নয়ন হয়নি । গ্রামে ছিল না রাস্তাঘাট, পানীয় জল, বিদ্যুৎ । গ্রামের পাশ দিয়ে গিয়েছে রেললাইন, সেখানে চলত ওয়াগন ব্রেকিং । তা ছিল সমাজবিরোধীদের মুক্তাঞ্চল । এক কথায় অনুন্নয়ন এবং নিরাপত্তার কারণেই গ্রামের মানুষজন গ্রাম ছেড়ে চলে গিয়েছেন বলে গ্রামবাসীদের দাবি ।

কিন্তু এই ঘটনা জানাজানির পর প্রশাসন উদ্যোগী হয় । গ্রামে বিদ্যুতের খুঁটি পোঁতা হয় । বাসিন্দাদের জানানো হয়, যদি তাঁরা গ্রামে ফিরে বিদ্যুতের লাইন নিতে ইচ্ছুক হন, তাহলে গ্রামে বিদ্যুৎ আসবে । আসানসোল পুরনিগমের পক্ষ থেকে গ্রামের রাস্তাটিকেও পাকা করে দেওয়া হয় । বাসিন্দারা ফিরে এলে সবার ঘরেই পানীয় জলের লাইন হবে, এমন কথাও দিয়েছিলেন তৎকালীন মেয়র জিতেন্দ্র তেওয়ারি । কিন্তু তারপরেও বাসিন্দারা ফিরে আসেননি । রহস্য এখানেই থেকে যায় ।

গ্রামের লক্ষ্মী মন্দির (নিজস্ব চিত্র)

বেনাগ্রামের আশপাশের অঞ্চলে প্রচুর উন্নতি হয়েছে । হচ্ছে কলকারখানা । তবুও গোটা একটা গ্রামের মানুষজন বাইরে ভাড়া বাড়িতে রয়েছেন, তবু গ্রামে কেন ফিরতে চান না, সে উত্তর সঠিকভাবে মেলে না । তবে তাঁরা একদিনের জন্য গ্রামে ফেরেন । সেই দিনটা হল এই কোজাগরী লক্ষ্মীপুজোর দিন ।

কুলটির নিয়ামতপুর শহরের কাছে এই গ্রাম (নিজস্ব চিত্র)

এদিন গ্রামের মাঝখানে বড় লক্ষ্মী মন্দিরে প্রতিমা নিয়ে আসা হয় । জেনারেটর নিয়ে আসা হয় । আলো দিয়ে সাজানো হয় গোটা গ্রাম । সন্ধ্যায় কোজাগরীর আরাধনায় মেতে ওঠেন গ্রামের মানুষজন । এরপর রাত্রে সবাই মিলে একসঙ্গে পাত পেড়ে খান ভোগের খিচুড়ি । সারারাত গ্রামের মানুষজন জেগে বসে থাকেন গ্রামে । পরদিন সকালে লক্ষ্মী মূর্তির বিসর্জন হলে আবার গ্রাম ছেড়ে চলে যান বেনাগ্রামের মানুষজন । গোটা গ্রাম পড়ে থাকে জনশূন্য হয়ে ।

ABOUT THE AUTHOR

...view details