সোদপুর, 2 সেপ্টেম্বর: জুনিয়র ডাক্তারদের লালবাজার অভিযানকে সমর্থন জানালেন আরজি করে নির্যাতিতার বাবা ৷ সোমবার সন্ধ্যায় সোদপুরের বাড়িতে তিনি বলেন, "কলকাতা পুলিশ কমিশনারের পদত্যাগের দাবি যথাযথ ! সৎ সাহস থাকলে উনি জুনিয়র ডাক্তারদের সঙ্গে দেখা করতে পারতেন। জুনিয়র ডাক্তাররা নিরস্ত্র অবস্থায় আন্দোলন করতে গিয়েছিলেন । তাঁদের সঙ্গে একবার হলেও দেখা করা উচিত ছিল পুলিশ কমিশনারের । কিন্তু, সেটা না করে লোহার ব্যারিকেড দিয়ে জুনিয়র ডাক্তারদের আটকানোর চেষ্টা করলেন ! এটা অমানবিক ছাড়া আর কিছুই নয় ।"
একই সুর শোনা গেল নির্যাতিতা ছাত্রীর মায়ের গলাতেও । তাঁর কথায়,"জুনিয়র ডাক্তারদের হাতে না ছিল অস্ত্র । না ছিল তরোয়াল ! শুধু তাঁদের হাতে ছিল ফুল । সেই অবস্থায় তাঁরা গিয়েছিলেন লালবাজারে অভিযান করতে । পুলিশ কমিশনারের সৎ সাহস থাকলে তিনি অবশ্যই আন্দোলনকারীদের সঙ্গে দেখা করতে পারতেন । আমরা চাই, এভাবেই যেন জুনিয়র ডাক্তাররা আমাদের পাশে থাকেন । তাঁদের আন্দোলনকে পূর্ণ সমর্থন জানাচ্ছি ।"
কোন পরিস্থিতিতে জুনিয়র ডাক্তারদের পথে নেমে আন্দোলন করতে হচ্ছে, এদিন তারও ব্যাখা দেওয়ার চেষ্টা করেছেন নির্যাতিতা চিকিৎসক ছাত্রীর মা । তাঁর কথায়, "ডাক্তারদের ভগবানের সঙ্গে তুলনা করা হয় । তাঁদের সময় অত্যন্ত মূল্যবান । কিন্তু তাঁরাও আমার মেয়ের মৃত্যুর প্রতিকার চেয়ে পথে নামতে বাধ্য হয়েছেন । আমার মেয়ে মরে গিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে স্বাস্থ্যভবনে দুর্নীতির ঘুঘুর বাসা বেঁধেছে । সেটা ধীরে ধীরে প্রমাণও হতে শুরু করেছে । আমার মেয়ের মতো যেন আর কোনও মেয়েকে এভাবে জীবন দিতে না হয় । সঠিকভাবে তদন্ত করে প্রত্যেক অপরাধীকে যেন শাস্তি দেওয়া হয় । সেটাই প্রার্থনা আমাদের ।"
বিনীতের পদত্যাগের দাবি যথাযথ, জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলনকে সমর্থন নির্যাতিতার পরিবারের - RG Kar Doctor Rape and Murder
RG Kar Victims Family on Movement of Junior Doctors : জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলনকে সমর্থন জানালেন আরজি করে নির্যাতিতা চিকিৎসকের বাবা-মা ৷ এভাবে আন্দোলন চালিয়ে পাশে থাকার জন্য জুনিয়র চিকিৎসকদের ধন্যবাদও দিয়েছেন তাঁরা ৷
Published : Sep 2, 2024, 10:50 PM IST
এদিকে, আরজি করের সেমিনার হলে অপরাধস্থলে একাধিক ব্যক্তির উপস্থিতি নিয়ে প্রথম থেকেই বিতর্ক দানা বেঁধেছিল । এই নিয়ে খোদ প্রশ্ন তুলেছিলেন নির্যাতিতা ছাত্রীর বাবা-মা । বিশেষ করে সেমিনার হলে লাল গেঞ্জি পরা এক ব্যক্তির ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন নির্যাতিতার মা । সেই প্রসঙ্গ উত্থাপন করে এদিন নির্যাতিতা ছাত্রীর বাবা বলেন, "এনিয়ে আমার স্ত্রীও প্রশ্ন তুলেছিলেন ঘটনার পরপরই । এই লাল গেঞ্জি পরা ব্যক্তির ভূমিকা ছিল সন্দেহজনক । এখন তো মনে হচ্ছে এর সঙ্গে উনিও জড়িত আছেন । কলকাতার পুলিশ কমিশনারের উপর ভরসা রাখতে না পেরেই আমরা হাইকোর্টে গিয়েছিলাম সিবিআই তদন্তের দাবিতে । সিবিআই তদন্ত করছে ঠিকই। তবে, তদন্তে পজিটিভ কিছু এলে আমরা আরও দৃঢ় হতে পারতাম ।ওরা আশ্বাস দিচ্ছে, ওদের দিক থেকে সর্বশক্তি দিয়ে যতটা করা প্রয়োজন, ততটাই করবেন ।"
অন্যদিকে, ডাক্তারের পরিবর্তে সমাজে কোনও দুষ্কৃতী যেন তৈরি না হয় প্রশাসনকে সেদিকে দেখার পরামর্শও দিয়েছেন নির্যাতিতা ছাত্রীর বাবা । এই বিষয়ে তাঁর বক্তব্য,"ডাক্তারদের একাংশের এই ভূমিকা যদি আগে জানতে পারতাম তাহলে কখনই মেয়েকে চিকিৎসক হতে দিতাম না । আমরা জানি ডাক্তার মানে দেবতা । কিন্তু, এখন দেখছি তাঁদের মধ্য থেকেই কেউ কেউ দুর্বৃত্ত তৈরি হয়েছে । সমাজ আজকে কোন জায়গায় গিয়ে পৌঁছেছে, ভাবলে অবাক লাগে ।"