সোদপুর, 3 সেপ্টম্বর: আরজি কর-কাণ্ডে 24 দিন পর গ্রেফতার হয়েছেন হাসপাতালের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ ৷ 15 দিন ধরে জেরা করার পর সোমবার তাঁকে গ্রেফতার করেন সিবিআই আধিকারিকরা ৷ সন্দীপ ঘোষের গ্রেফতারিতে খুশি নির্যাতিতা ছাত্রীর পরিবার ৷ একে নৈতিক জয় হিসেবেই দেখছেন তাঁরা ৷
সন্দীপ ঘোষের গ্রেফতারির পর বিস্ফোরক নির্যাতিতার পরিবার (ইটিভি ভারত) সন্দীপ ঘোষের গ্রেফতারি নিয়ে সোমবার রাতে মুখ খোলেন আরজি করে নির্যাতিতা চিকিৎসক পড়ুয়ার কাকিমা ৷ তিনি বলেন,"ঘটনার পর থেকে যেভাবে ছাত্র ও ডাক্তাররা একটানা 25 দিন ধরে আন্দোলন করে গিয়েছেন, এটা সেই আন্দোলনেরই জয় ৷ একই সঙ্গে আমাদেরও নৈতিক জয় ৷ এখন সব দেখে মনে হচ্ছে, তদন্ত সঠিক পথেই এগোচ্ছে ৷ আমরা সুবিচার পাব এবার।"
সিবিআইয়ের প্রতি আস্থা আছে ? সন্দীপের পর আর কোনও রাঘববোয়াল কি ধরা পড়বে ? এই প্রশ্নের উত্তরে নির্যাতিতার কাকিমা বলেন, "সিবিআইয়ের উপর আমাদের পূর্ণ আস্থা রয়েছে ৷ আশা তো আছেই ৷ আরও রাঘববোয়াল ধরা পড়বে ৷ একজন (সন্দীপ ঘোষ) গ্রেফতার হয়েছে । আরও নাম সামনে আসবে ৷ সেই অপেক্ষাতেই দিন গুনছি আমরা।"
ঘটনার পর থেকেই সন্দীপ ঘোষকে গ্রেফতারের দাবিতে আন্দোলন করে আসছে জুনিয়র চিকিৎসকরা ৷ একই দাবিতে পথে নেমেছে সমাজের সর্বস্তরের মানুষ ৷ 15 দিন ধরে টানা জেরা করার পর অবশষে আরজি হাসপাতালের প্রাক্তন অধ্যক্ষকে গ্রেফতার করে সিবিআই ৷ যদিও আরজি কর হাসপাতালে আর্থিক দুর্নীতির কারণে সন্দীপ ঘোষকে গ্রেফতার করেছেন সিবিআই-এর আর্থিক দুর্নীতিদমন শাখার আধিকারিকরা ৷ এই ঘটনায় সন্দীপের পাশাপাশি আরও তিন জনকে গ্রেফতার করেছে সিবিআই ৷
সন্দীপ ঘোষকে কি আরও আগে গ্রেফতার করা উচিত ছিল ? সেই প্রশ্নের জবাবে নির্যাতিতা ছাত্রীর কাকিমা বলেন, "আগে গ্রেফতার করা উচিত ছিল, কি ছিল না, তা বলতে পারব না। তবে এখন যেটা হয়েছে, তাতে আমরা খুশি ৷ স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছি ৷ এটুকু বুঝতে পেরেছি আমাদের পরিবারের মেয়ে দুর্নীতির বলি হয়েছেন ৷ এ নিয়ে কারোর মনে কোনও সন্দেহ নেই ।"
আরজি করের প্রাক্তন অধ্যক্ষের গ্রেফতারিতে কি নির্যাতিতা ছাত্রীর আত্মার শান্তি পেল ? এর উত্তর দিতে গিয়ে নিহত চিকিৎসক পড়ুয়ার কাকিমা বলেন," এখনও ওর আত্মার শান্তি পায়নি ৷ যেদিন এই নৃশংস ঘটনায় প্রত্যেক অপরাধী ফাঁসি কাঠে ঝুলবে কিংবা তাদের কঠোর শাস্তি হবে, সেদিনই আমাদের পরিবারের মেয়ের আত্মার শান্তি পাবে। আমরাও শান্তিতে ঘুমতে পারব।"
গত 9 আগস্ট আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের চিকিৎসক পড়ুয়ার ধর্ষণ ও খুনের ঘটনার পর থেকেই হাসপাতালের তৎকালীন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করে নানামহলে । কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই এই ঘটনার তদন্তভার হাতে নেওয়ার পর, গত 16 অগস্ট থেকে টানা 15 দিন লাগাতার জেরা করা হয় সন্দীপ ঘোষকে ৷ মাঝে শুধু গত শনি এবং রবিবার তাঁকে জেরা করা হয়নি। সোমবার তাঁকে ফের তলব করা হয় সল্টলেকের সিজিও কমপ্লেক্সে ৷ সন্ধ্যায় সেখান থেকে বার করে সিবিআই আধিকারিকেরা সন্দীপকে নিয়ে যান নিজ়াম প্যালেসে ৷ তার পরেই কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার তরফে জানানো হয় সন্দীপ ঘোষকে গ্রেফতার করা হয়েছে ৷