আসানসোল, 8 ফেব্রুয়ারি:রানিগঞ্জের সরকারি স্কুলে বাংলা মাধ্যমে পড়াশোনা করা গ্রামের ছেলে আজ ব্ল্যাকহোল নিয়ে গবেষণায় বিশ্বের নজর কেড়েছে । কৃষ্ণ গহ্বরের রশ্মি নিয়ে গবেষণায় যেখানে সারা বিশ্বের তাবড় বিজ্ঞানীরা গত 30-40 বছরে তেমন সফলতা পাননি, সেখানে একদা রানিগঞ্জের বাসিন্দা বাঙালি যুবক তন্ময় চট্টোপাধ্যায় দুরন্ত গতিতে ব্ল্যাকহোলের রহস্য উদঘাটনে এগিয়ে চলেছেন । ব্ল্যাকহোলের এক্স-রে, গামা-রে'র পোলারাইজেশনে এসেছে সাফল্য । জানা যাচ্ছে, ব্ল্যাকহোলের অনেক কিছুই ।
তন্ময় চট্টোপাধ্যায় বর্তমানে ক্যালিফোর্নিয়াস স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিজিক্স এবং অ্যাস্ট্রো ফিজিক্সের বিজ্ঞানী । এই দুনিয়া কাঁপানো বিজ্ঞানীর পড়াশোনা শুরু হয়েছিল রানিগঞ্জের বাংলা মাধ্যম স্কুলে । ছোটবেলায় বাঁকুড়ার মেজিয়ার কাছে অর্ধগ্রাম এলাকার কালিকাপুরের বাসিন্দা ছিলেন তন্ময় ।
তাঁর মা বনানী চট্টোপাধ্যায় বর্তমানে আসানসোলের চেলিডাঙা এলাকায় থাকেন । তিনি জানান, তাঁর স্বামী প্রয়াত গোবর্ধন চট্টোপাধ্যায় ছিলেন আসানসোল আদালতের আইনজীবী । ছেলেমেয়ের পড়াশোনার জন্য রানিগঞ্জ শহরে ভাড়া বাড়িতে চলে এসেছিলেন তাঁরা । সেখানেই বড় হয়ে ওঠা তন্ময়ের । রানিগঞ্জ বয়েজ হাইস্কুল থেকে 2005 সালে মাধ্যমিক পাশ করেন তন্ময় । 2008 সালে রানিগঞ্জের টিডিবি কলেজ থেকে ফিজিক্সে অনার্স নিয়ে গ্র্যাজুয়েশন করেন তিনি । এরপর বেনারস হিন্দু ইউনিভার্সিটি থেকে হাই এনার্জি ফিজিক্স নিয়ে স্নাতকোত্তর । পিএইচডি করতে 2010 সাল থেকে 2016 সাল পর্যন্ত ইসরোর রিসার্চ লাইব্রেরিতে ছিলেন তিনি । 2015 সাল থেকেই মহাকাশে পাঠানো ইসরোর অ্যাস্ট্রোস্যাট নিয়ে নানা কাজকর্মে যুক্ত হন । 2016 সালে পাড়ি দেন আমেরিকা । বর্তমানে স্ত্রী সুরভী মুখোপাধ্যায়কে নিয়ে তিনি ক্যালিফোর্নিয়ায় আছেন ।
কৃষ্ণ গহ্বর নিয়ে তাঁর গবেষণার কথা বলতে গিয়ে তন্ময় জানালেন, "আমাদের গ্রুপ নাসার ফিউচার অ্যাস্ট্রোফিজিক্যাল স্পেস টেলিস্কোপে ইন্সট্রুমেন্টাল ডেভলপের কাজ করে । ভারতের ইসরোতে একমাত্র স্পেস টেলিস্কোপ 'অ্যাস্ট্রোস্যাট'-এর সঙ্গেও দীর্ঘদিন ধরে যুক্ত আছি । অ্যাস্ট্রোস্যাটের একটি যন্ত্র ক্যাডমিয়াম জিঙ্ক টেলিরাইড ইমেজারের মাধ্যমে আমরা পোলারাইজেশন মেপেছি 'সিগনাস এক্স ওয়ান' নামক একটি ব্ল্যাকহোলের । এই পোলারাইজেশন মাপার জন্য যে টেকনিকের দরকার, সেই টেকনিকগুলো আমি ডেভলপ করেছি আমার পিএইচডি'র সময় থেকে । এখনও সেই কাজ চলছে ।"
এই গবেষক আরও জানান, "2015 সালে অ্যাস্ট্রোস্যাট আসার পরে আমরা সিগনাস এক্স ওয়ান ব্ল্যাকহোল থেকে এক্স রে ও গামা রে ডাটা সংগ্রহ করি । সেই ডাটা থেকে নানা টেকনিকের মাধ্যমে আমরা সম্প্রতি পোলারাইজেশন মাপতে পেরেছি ।"