কলকাতা, 1 এপ্রিল: সম্প্রতি গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে বৈঠক করেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু ৷ শিক্ষামন্ত্রীর এই বৈঠকের পরই অপসারিত হলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য রজত কিশোর দে। রবিবার রাতে গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে একটি নোটিফিকেশন পাঠানো হয় রাজভবনের তরফে। যেখানে তাঁকে উপাচার্য পদ থেকে অপসারণ করা হচ্ছে বলেই জানায় রাজভবন। তবে রাজভবন সিদ্ধান্ত নেওয়ার পরপরই ফের রজত কিশোর দে-কেই উপাচার্য পদে বহাল করে রাজ্য সরকার।
দিনকয়েক আগে গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়েছিলেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। সেখানে শিক্ষক সংগঠনের সদস্যরা ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন তৃণমূলের লোকসভা ভোটের দুই প্রার্থী। জানা গিয়েছে, শিক্ষকদের ওই সভা থেকে একাধিক বিষয়ে তৃণমূল সরকারের গুণগান করা হয়। পাশাপাশি বিজেপির বিরুদ্ধেও একাধিক কথাও বলা হয়।
গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে পাঠানো রাজভবনের নোটিশ সূত্রের খবর, গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য রজত কিশোর দে ওয়েবকুপার সদস্য। তবে ওইদিন তিনি অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন না। কিন্তু তাঁর অনুমতিতেই ওইদিনের অনুষ্ঠানটি হয়েছিল । বিভিন্ন মহলের অনুমান, সেই কারণেই এই অপসারণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। যদিও বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে দাবি, উপাচার্যের কাছে এই সংক্রান্ত কোনও মেল আসেনি । একাধিকবার উপাচার্যকে ফোন করলেও তিনি ফোন ধরেননি । পরবর্তীতে তাঁর ফোন বন্ধ পাওয়া যায় ।
প্রসঙ্গত, দীর্ঘদিন ধরেই রাজ্য-রাজ্যপাল সংঘাত বিভিন্ন কারণে বারবার সংবাদ শিরোনামে উঠে এসেছে। এই সংঘাত প্রকটভাবে ধরা পড়েছে রাজ্যের উচ্চশিক্ষা ও বিশ্ববিদ্যালয় স্তরে ৷ শিক্ষা দফতরের অভিযোগ, রাজ্যপাল শিক্ষা দফতরের সঙ্গে কোনও রকম যোগাযোগ না-করেই একের পর এক উপাচার্য নিয়োগ করছেন। এই বিষয়টি নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ শিক্ষা দফতর। সুপ্রিম কোর্ট দু'পক্ষকে আলোচনায় বসতে বলেছিল। সেই নির্দেশ অনুযায়ী অ্যাডভোকেট জেনারেলের সামনে একাধিকবার বৈঠক করেছে রাজ্যপাল এবং শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। তবে শিক্ষামন্ত্রীর দাবি, তাতেও কোনও রফাসূত্র মেলেনি । এই বিতর্কের মাঝেই রাজ্যপাল তথা আচার্য সিভি আনন্দ বোস আরও একটি কড়া পদক্ষেপ নেন, ফলত বেশ ক্ষুব্ধ শিক্ষামন্ত্রী ৷ যদিও রাজভবন সূত্রের খবর, এই তালিকায় আরও বেশ কিছু উপাচার্যের নাম রয়েছে ।
প্রসঙ্গত, গত বছরের সেপ্টেম্বরের শেষের দিকে গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসাবে রাজভবন থেকে নিযুক্ত হন রজত কিশোর দে ৷ রবিবার রাতে রাজভবনের তরফে চিঠি পাঠিয়ে এই দায়িত্ব থেকে অপসারণ করা হল তাঁকে ৷
এর আগে গত বছর যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তনের মুখে অস্থায়ী উপাচার্যের পদ থেকে অপসারিত করা হয় বুদ্ধদেব সাউকে। সমাবর্তনের ঠিক আগের দিন চিঠি পাঠিয়ে তাঁকে অপসারণ করেন রাজ্যপাল তথা রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলির আচার্য সিভি আনন্দ বোস।
আরও পড়ুন:
- বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপক পেটানোয় অভিযুক্ত তৃণমূল, অপমানে আত্মহত্যার হুমকি নিগৃহীতের
- রাম-নামে মমতার সংহতি মিছিলকে স্বাগত রাজ্যপালের
- বাবা সাহেব আম্বেদকর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের নিরাপত্তার নির্দেশ রাজ্যপালের