মালদা, 5 ফেব্রুয়ারি: অবশেষে বোধোদয় পুলিশের! মালদা শহরের কিশোরীকে অপহরণ করে গলা কেটে খুনের এক সপ্তাহ পর অকুস্থল কর্ডন করল পুলিশ ৷ তবে এখনও অকুস্থলেই পড়ে রয়েছে নিহত কিশোরীর চশমা, মদের বোতল-সহ আরও কিছু সামগ্রী ৷ এই ঘটনার তদন্তে এখনও পর্যন্ত পুলিশের নিষ্পৃহতায় প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছে শহরবাসী ৷ পুলিশি তদন্ত নিয়ে প্রকাশ্যেই নিজেদের বিরক্তি প্রকাশ করেছে জাতীয় শিশু সুরক্ষা কমিশন ৷ এরই মধ্যে শোনা যাচ্ছে, আগামিকাল মঙ্গলবার ঘটনার তদন্তে মালদায় আসতে পারে ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞ দল ৷
গত 29 জানুয়ারি সন্ধেয় মালদা শহরের 11 বছরের এক কিশোরীকে অপহরণ করা হয় ৷ সেই রাতেই কিশোরীর বাবা ইংরেজবাজার থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন ৷ ঘটনার তদন্তে নেমে এক যুবককে আটক করে ইংরেজবাজার থানার পুলিশ ৷ ওই যুবককে জেরা করে নাম উঠে আসে কিশোরীর জ্যেঠতুতো দাদার ৷ পুলিশ তাঁকে আটক করে জেরা শুরু করে ৷ জেরার মুখে দাদা স্বীকার করে নেন, তিনিই এই ঘটনা ঘটিয়েছেন ৷ 29 তারিখই তিনি বোনের গলা কেটে ধড় ও মুণ্ডু আলাদা করে দিয়েছেন ৷ 31 জানুয়ারি রাতে দাদাকে নিয়ে গিয়ে শহরের মুখে থাকা ইংরেজবাজার নিয়ন্ত্রিত বাজার সমিতি চত্বর থেকে নাবালিকার ধড় ও মুণ্ডু উদ্ধার করে পুলিশ ৷ গ্রেফতার করা হয় দাদাকে ৷ আদালত তাঁকে 12 দিনের পুলিশি হেফাজতে পাঠিয়েছে ৷
মালদায় কিশোরী খুনের ঘটনাস্থল এই ঘটনায় আলোড়ন পড়ে যায় গোটা রাজ্যে ৷ কিন্তু তদন্তে পুলিশের নিষ্পৃহতা চোখ এড়ায়নি কারও ৷ মাত্র চারজন সিভিক ভলান্টিয়ারের দায়িত্বে ছেড়ে দেওয়া হয় অকুস্থল ৷ সেখান থেকে কোনও নমুনাও সংগ্রহ করা হয়নি বলেই পুলিশ সূত্রে খবর ৷ এখনও ঘটনাস্থলে পড়ে রয়েছে নাবালিকার চশমা, মদের বোতল-সহ আরও কিছু জিনিস ৷ তবে সোমবার অকুস্থল গার্ডরেল দিয়ে ঘেরা হয়েছে ৷ এই নিয়ে প্রশ্ন করা হলে মালদার পুলিশ সুপার প্রদীপকুমার যাদব বলেন, “আইনি ব্যবস্থায় তদন্তের প্রক্রিয়া চলছে ৷ আমরা তদন্তের স্বার্থে ফরেন্সিক দলের আবেদন জানিয়েছি ৷ এর থেকে বেশি কিছু বলা সম্ভব নয় ৷”
মালদায় কিশোরী খুনের ঘটনাস্থল এদিকে এ দিন সকালে খানিকটা বৃষ্টি হয়েছে মালদা জেলায় ৷ বৃষ্টিতে অকুস্থলে থাকা প্রমাণ নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা করছেন পশ্চিমবঙ্গ পুলিশেরই এক ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞ ৷ তিনি বলেন, “যেকোনও খুনের তদন্তে সময় সবচেয়ে দামি ৷ এই খুনটি হয়েছে খোলা জায়গায় ৷ ঘটনাস্থলে ঘাসের উপর প্রচুর রক্ত পড়ে ছিল বলে শুনেছি ৷ সময় যত গড়াবে, সেই রক্ত ডিকম্পোজ হবে ৷ অকুস্থলে ঘাস থাকলে, তাও বড় হবে৷ তাতে প্রমাণ নষ্ট হওয়ার প্রভূত সম্ভাবনা ৷ ঘটনাস্থলে কোনও নমুনা পড়ে থাকলে বৃষ্টিতে ফিঙ্গারপ্রিন্ট নষ্ট হতে পারে ৷ অকুস্থলে ফুটপ্রিন্টেরও ক্ষতি হবে ৷”
আরও পড়ুন:
- উদ্ধার মুণ্ডহীন দেহ, নাবালিকাকে খুনের প্রতিবাদে অগ্নিগর্ভ মালদা
- নিখোঁজ নাবালিকার মুণ্ডহীন দেহ উদ্ধার, অভিযুক্তের বাড়ি ভাঙচুর উত্তেজিত জনতার