কলকাতা, 28 সেপ্টেম্বর: দেড়শো বছর ধরে কলকাতার রাস্তা কাঁপাচ্ছে ট্রাম ৷ কিন্তু গণপরিবহণের অন্যতম অংশ এই ট্রাম চিরদিনের জন্য বন্ধ হয়ে যাচ্ছে ! সম্প্রতি রাজ্য পরিবহণ মন্ত্রী স্নেহাশীষ চক্রবর্তীর মন্তব্যের পর এই নিয়ে শুরু হয়েছে গুঞ্জন ৷ সংবাদমাধ্যম ও সামাজিক মাধ্যমে রাজ্য পরিবহণ দফতরের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগড়ে দিয়েছেন অনেকে ৷ এবার কলকাতার ঐতিহ্যবাহী ট্রাম পরিষেবা বাঁচাতে পথে নামার সিদ্ধান্ত নিল একাধিক সংগঠন ৷
ট্রামপ্রেমী সংগঠনগুলি ও ক্যালকাটা ট্রাম ইউজারস্ অ্য়াসোসিয়েশনের তরফে আগামী 5 অক্টোবর কলেজ স্কোয়ার থেকে শ্যামবাজার পর্যন্ত মহামিছিলের ডাক দেওয়া হয়েছে ৷ শুক্রবার কলকাতা হাইকোর্টে ট্রাম সংক্রান্ত মামলার শুনানি হওয়ার কথা থাকলেও, তা পিছিয়ে গিয়েছে ৷
ক্যালকাটা ট্রাম ইউজারস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি (ইটিভি ভারত) পরিবহণ মন্ত্রী স্নেহাশীষ চক্রবর্তীর ট্রাম বন্ধ হয়ে যাওয়া নিয়ে মন্তব্যের পরই কলকাতার ট্রামপ্রেমীরা সরকারের সেই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে এগিয়ে এসেছেন । প্রতিবাদ জানিয়েছেন । এমনকী, প্রতিবাদের উদ্দেশে নাগরিক সংগঠনও তৈরি হয়েছে । সবাই চান ট্রাম বাঁচুক । শহরের ঐতিহ্য বাঁচুক ।
এদিকে, ট্রাম রক্ষার দাবি নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে একটি মামলা করা হয়েছে ৷ মামলার শুনানিতে রাজ্য সরকারকে ট্রাম চালানোর উপায় খুঁজে বের করার কথা ভাবা হয়েছে ৷ এরপরই রাজ্য সরকারের বক্তব্য, শুধুমাত্র একটি রুটে অর্থাৎ এসপ্ল্যানেড থেকে ময়দান পর্যন্ত চলবে ট্রাম । এছাড়া বাকি রুট গুলিতে ট্রাম পরিষেবা বন্ধ করে দেওয়া হবে ৷
সত্যি কী বন্ধ হয়ে যাচ্ছে ট্রাম ! (নিজস্ব চিত্র) এই বিষয়ে ক্যালকাটা ট্রাম ইউজারস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি দেবাশিস ভট্টাচার্য বলেন, "কলকাতা হাইকোর্টের তরফে দেওয়া নির্দেশে ট্রাম চালানো এবং ট্রাম সংরক্ষণ নিয়ে কথা বলা হয়েছে । ট্রাম চালানোর জন্য রাজ্য সরকার কী কী পদক্ষেপ নিতে পারবে ৷ সেই বিষয়টি জানাতে বলা হয়েছে ৷ তাই কলকাতা পুলিশ ও রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে যে প্রপোজাল জমা দেওয়া হয়েছে, তা মোটেই যুক্তিযুক্ত নয় । বরং কীভাবে যানজট নিয়ন্ত্রণে রেখে ট্রাম চালানো যায়, সেটাই কলকাতা পুলিশের দেখা উচিত ছিল ৷"
সাংবাদিক বৈঠকে ক্যালকাটা ট্রাম ইউজারস্ অ্যাসোসিয়েশন (নিজস্ব চিত্র) অন্যদিকে, ট্রাম শহরে যানজট সৃষ্টি করে তাই ট্রাম শহরতলিতে চালানো যায় কি না, সেই বিষয়ে দেবাশিস জানান, শহরতলিতে ট্রাম চালানোর প্রস্তাব খুব ভালো ৷ তবে শহরের মধ্যে ট্রাম পরিষেবা বন্ধ করে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া একেবারই ঠিক নয় ৷