পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

ETV Bharat / state

মুখ্যমন্ত্রীর ক্ষোভ ! পরিবহণমন্ত্রীর সারপ্রাইজ ভিজিট, তবুও চাঙ্গা হচ্ছে না রুগ্ন বাস রুটগুলি - AILING BUS ROUTES IN KOLKATA

বন্ধ হয়ে যাওয়া রুটে বাস চালু করার আবেদন প্রত্যাখ্যান মালিক সংগঠনের ৷ ধুঁকতে থাকা রুটগুলিতেও নতুন বাস নামানোয় অনীহা ৷

AILING BUS ROUTES IN KOLKATA
মুখ্যমন্ত্রীর ক্ষোভ, পরিবহণমন্ত্রীর সারপ্রাইজ ভিজিট, তবুও চাঙ্গা হচ্ছে না রুগ্ন বাস রুটগুলি ৷ (ইটিভি ভারত)

By ETV Bharat Bangla Team

Published : Jan 19, 2025, 9:53 PM IST

কলকাতা, 19 জানুয়ারি: কেন রাত 8 টার পর রাস্তায় আর দেখা মেলে না বাসের ? মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নবান্ন থেকে এই প্রশ্নই করেছিলেন পরিবহণমন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তীকে ৷ সেই ভর্ৎসনার পর কলকাতা ও শহরতলির রাস্তায় তদন্ত করতে নেমেছিলেন মন্ত্রী ৷ তিনিও দেখেছিলেন, হাতে গোনা কয়েকটি লাভজনক রুট ছাড়া, অন্য রুটগুলিতে গাড়ি চালাতে একেবারেই অনিচ্ছুক বেসরকারি বাসের মালিকরা ৷ এমনকী সরকারের তরফে শত আবেদনেও সাড়া মিলছে না বেসরকারি বাস মালিক সংগঠনগুলির তরফে ৷

রুগ্ন রুটগুলিকে চাঙ্গা করতে ইচ্ছুক মালিকদের রুটে বাস নামাতে আহ্বান জানিয়ে বিজ্ঞপ্তিও জারি করেছে পাবলিক ভেহিকেল ডিপার্টমেন্ট ৷ তবে, সেই আবেদনেও সাড়া মেলেনি মালিকদের তরফে ৷

মুখ্যমন্ত্রীর ধমকের পর, প্রতিটি রুটে পর্যাপ্ত সরকারি এবং বেসরকারি বাস নামাতে উদ্যোগী হয়েছে পরিবহণ দফতর ৷ এমনকী একাধিকবার বেসরকারি বাসমালিক পক্ষকে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে বাস নামানোর কথা বলা হলেও, কেউ তাতে আমল করেনি ৷ বাসের পারমিট দেওয়া সংস্থা পিভিডি এ নিয়ে বিজ্ঞপ্তিও প্রকাশ করেছিল ৷ তাতেও কোনও লাভ হয়নি ৷

মুখ্যমন্ত্রীর ক্ষোভ, পরিবহণমন্ত্রীর সারপ্রাইজ ভিজিট, তবুও চাঙ্গা হচ্ছে না রুগ্ন বাস রুটগুলি ৷ (ইটিভি ভারত)

এমনটা কেন হচ্ছে জানতে চেয়ে সম্প্রতি পিভিডি-র আধিকারিকরা মালিক পক্ষের একাংশের সঙ্গে একটি বৈঠকে বসেছিলেন ৷ এই বিষয় ওয়েস্ট বেঙ্গল বাস অ্যান্ড মিনিবাস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক প্রদীপনারায়ণ বসু বলেন, "বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হলেও রুগ্ন রুটে বাস নামাতে কেউ ইচ্ছুক নন । কারণ বহু মানুষ এখন নিজেদের গাড়িতে যাতায়াত করেন ৷ আবার উত্তর থেকে দক্ষিণ, পূর্ব থেকে পশ্চিম কলকাতা জুড়ে ছড়িয়ে পড়ছে মেট্রো নেটওয়ার্ক ৷ অ্যাপ ক্যাব থেকে শুরু করে যাত্রী সাথী, বাইক, ট্যাক্সি বা শাটেল বাস- আছে সবই ৷ গন্তব্যে পৌঁছতে মানুষের কাছে এখন অনেক পরিবহণ মাধ্যম এসে গেছে ৷ তাই এখন যাত্রীরা আগের মতো বাসে চড়ে না ৷"

তাঁর দাবি, "করোনা পরবর্তী সময় অনেক রুট বন্ধ হয়ে গিয়েছে ৷ কিংবা বহু রুটে যাত্রী কমে যাওয়ার ফলে বাসের সংখ্যাও কমেছে ৷ হাতে গোনা মাত্র কয়েকটি লাভজনক রুট রয়েছে কলকাতা ও শহরতলিতে ৷ তাই স্বাভাবিকভাবেই অ-লাভজনক রুটে বাস চালিয়ে, বাসের ইএমআই শোধ করে, কর্মচারীদের বেতন দিয়ে, বাসের রক্ষণাবেক্ষণ করে, জ্বালানির খরচ বহনের পর হাতে আর বিশেষ কিছু থাকবে না-মালিকদের ৷ তাই তাঁরা ওইসব রুটগুলোতে আর বাস নামাতে চাইছেন না ৷"

জয়েন্ট কাউন্সিল অফ সিন্ডিকেটের সাধারণ সম্পাদক তপন বন্দোপাধ্যায় জানিয়েছেন, "2020 সালের পর শহরে যত সংখ্যায় সরকারি ই-বাস এবং সিএনজি বাস নেমেছে, তত সংখ্যক বেসরকারি বাস কিন্তু নামেনি ৷ বেসরকারি বাস মালিকদের গৌরী সেন নেই ৷ রাজ্যে বাসের ভাড়া শেষবার বৃদ্ধি হয়েছিল 2018 সালে ৷ আজ থেকে সাত বছর আগে ৷ এর মধ্যে ডিজেলের মূল্যবৃদ্ধি থেকে শুরু করে টোল ট্যাক্স সব বেড়েছে ৷"

এর পাশাপাশি তিনি অভিযোগ করেছেন, "জাতীয় সড়কে বেআইনি অটো-টোটোর সংখ্যা বেড়েছে ৷ এর পাশাপাশি, ইন্সুরেন্সের খরচে বৃদ্ধি, যন্ত্রাংশের দাম বৃদ্ধি, অস্বাভাবিক এবং অন্যায়ভাবে পুলিশি অত্যাচার ও বিনা কারণে জরিমানা করা এইসব কারণগুলি তো রয়েছেই ৷ তাই বাস মালিকরা আর নতুন বাস কিনতে চাইছেন না ৷"

তবে, সংগঠনের তরফে এ কথাও বলা হয়েছে, লাভজনক রুটগুলিতে আরও বাস নামাতে ইচ্ছুক একাংশের মালিক ৷ উল্লেখ্য, করোনার আগে শুধু কলকাতায় প্রায় 7,500 বাস চলত ৷ বর্তমানে চলছে দুই থেকে আড়াই হাজারের মতো বাস ৷ মিনিবাস চলে তিনশোর কাছাকাছি ৷ ভবিষ্যতে এই সংখ্যা বৃদ্ধির বদলে কমার আশঙ্কাই করছে বিভিন্ন মালিক সংগঠন ৷

ABOUT THE AUTHOR

...view details