হাওড়া, 27 অগস্ট: নবান্ন অভিযানে পুলিশি অনুমতি নেওয়া নিয়ে জটিলতা তৈরি হলেও পশ্চিমবঙ্গ ছাত্র সমাজের নেতৃত্বে সেই অভিযান হচ্ছে ৷ এই অবস্থায় মঙ্গলবার সকাল থেকে হাওড়ায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করেছে জেলা প্রশাসন ৷ বৃষ্টি উপেক্ষা করে পুলিশের উচ্চপদস্থ কর্তারা হাওড়া থেকে শুরু করে নবান্নে পৌঁছনোর বিভিন্ন রাস্তা সরেজমিনে পরিদর্শন করছেন ৷
নবান্ন অভিযানের সকালে হাওড়া ব্রিজ ও দ্বিতীয় হুগলি সেতুতে যান চলাচল বন্ধ হল (ইটিভি ভারত) বেলা বাড়তেই বন্ধ করে দেওয়া হল হাওড়া ব্রিজের উপর যান চলাচল ৷ সম্পূর্ণ বন্ধ দ্বিতীয় হুগলি সেতু । পুলিশের পক্ষ থেকে জারি করা হয়েছে নির্দেশিকা ৷ এদিকে হাওড়া স্টেশনে উপস্থিত বিক্ষোভকারীরা জাতীয় পতাকা হাতে স্লোগান দিতে শুরু করেছেন ৷ পুলিশ সূত্রে খবর, একাধিক পয়েন্টে বড় ব্যারিকেড দিয়ে রাস্তা বন্ধ করা হয়েছে ৷ পুলিশের পাশাপাশি নামানো হয়েছে র্যাফ এবং কমব্যাট ফোর্সও ৷ যার মধ্যে সাঁতরাগাছি, হাওড়া ময়দান, ফরশোর রোড এবং লক্ষ্মীনারায়ণতলা, মন্দিরতলায় ব্যারিকেড, গার্ডরেল দেওয়া হয়েছে ৷
এছাড়া নবান্নের আশেপাশে গলির মুখগুলি ব্যারিকেড দিয়ে ঘিরে ফেলা হয়েছে ৷ বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে জল কামান এসেছে ৷ ড্রোনের ব্যবস্থাও রয়েছে ৷ পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, নিরাপত্তা ব্যবস্থা দেখভালের জন্য চারজন আইজি পদমর্যাদার পুলিশ আধিকারিক রয়েছেন ৷ এছাড়া ডিআইজি এবং এসপি পদমর্যাদার পুলিশ আধিকারিকরাও নিরাপত্তার দায়িত্বে আছেন ৷ দু'হাজারেরও বেশি পুলিশ কর্মীকে রাস্তায় নামানো হয়েছে ৷
এর জন্যে হাওড়ার পাশাপাশি কলকাতা-সহ বিভিন্ন পুলিশ কমিশনারেটের পুলিশ কর্মীদের মোতায়েন করা হয়েছে ৷ এদিন সকালে সাঁতরাগাছি বাসস্ট্যান্ড, হাওড়া ময়দানের কাছে ব্যারিকেড তৈরির কাজ পুরোদমে চলতে দেখা গেল ৷ হাওড়া সিটি পুলিশের উচ্চাধিকারিকরা ব্যারিকেড তৈরির কাজ দেখাশোনা করছেন ৷
একই চিত্র দেখা গেল হাওড়া ব্রিজ-সহ স্টেশন ও বাসস্ট্যান্ড লাগোয়া এলাকাগুলিতেও ৷ বিজেপির পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়, রাত থেকেই নবান্ন অভিযানে সামিল হওয়ার জন্য যাঁরা হাওড়া স্টেশনে আসতে শুরু করেছেন, তাঁদের স্টেশনের বাইরে বেরতে জিআরপি আধিকারিকরা আটকে দেন ৷ তাঁদের উপর লাঠি নিয়ে তেড়ে যাওয়ার অভিযোগ তুলেছে বিজেপি ৷
এদিকে এদিনের অভিযানে পুলিশের অনুমতি নেওয়া নিয়ে জটিলতা তৈরি হয়েছে ৷ সোমবার এডিজি আইন শৃঙ্খলা সুপ্রতিম সরকার জানান, নবান্ন অভিযানের জন্য তাঁদের কাছ থেকে কোনও অনুমতি চাওয়া হয়নি ৷ তাই এই কর্মসূচি অবৈধ ৷ পুলিশের কাছে খবর আছে, এই মিছিলে সামনের সারিতে ছাত্রছাত্রী এবং মহিলাদের রেখে পিছনে কয়েকজন দুষ্কৃতীরা সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে ৷ পুলিশের কাছ থেকে অনুমতি না-নেওয়ার জন্য এই অভিযানকে 'বেআইনি' বলে আখ্যা দেয় পুলিশ ৷ এমনকী, 'পশ্চিমবঙ্গ ছাত্র সমাজ' নামের কোনও সংগঠন আদৌ আছে কি না, সে নিয়েও প্রশ্ন তোলা হয় ৷
এর পালটা সাংবাদিক বৈঠক করে পশ্চিমবঙ্গ ছাত্র সমাজ ৷ তারা দাবি করে, নবান্ন চলো অভিযানের জন্য আগাম অনুমতি নেওয়া রয়েছে ৷ এমনকী তাদের কাছে বারবার হাওড়া পুলিশ কমিশনরেট থেকে ফোন করে 27 তারিখের রুটের কথা জানতে চাওয়া হয়েছে ৷ দাবি করা হয়, এই আন্দোলনের সঙ্গে কোনও রাজনৈতিক দলের যোগাযোগ নেই ৷