কলকাতা, 19 ডিসেম্বর: সিবিআইয়ের তদন্তে আর ভরসা রাখতে পারছেন না আরজি কর-কাণ্ডে নির্যাতিতা চিকিৎসক পড়ুয়ার বাবা-মা ৷ তাই নতুন করে তদন্তের দাবিতে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করতে চেয়ে আবেদন করলেন তাঁরা ৷ তবে, কোনোভাবে বিচার প্রক্রিয়া বন্ধ করা যাবে না বলে জানালেন বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ ৷ আগামী 24 ডিসেম্বর সিবিআইকে তদন্ত নিয়ে রিপোর্ট পেশ করতে নির্দেশ ৷
বৃহস্পতিবার সকালে প্রথম ধাপে বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষের সিঙ্গল বেঞ্চে মামলা দায়ের করতে চেয়ে আবেদন জানান নির্যাতিতার বাবা-মা’র আইনজীবী ৷ সেই মতো মামলা দায়ের করতে অনুমতি দেন বিচারপতি ৷ সঙ্গে সিবিআই-কে মামলায় যুক্ত করতে নির্দেশ দেন তিনি ৷ এরপর দুপুরে দ্বিতীয় ধাপে মামলার শুনানি শুরু হয় ৷
শুনানিতে নির্যাতিতার পরিবারের আইনজীবী আদালতে জানান, আরজি করের ধর্ষণ ও খুনের মামলায় একাধিক দিক রয়েছে তদন্তের আওতায় ৷ কিন্তু, সবদিকে তদন্তকারীরা নজর দিচ্ছেন না ৷ তাই এই মামলায় নতুন করে তদন্তের নির্দেশ দিক আদালত ৷
তবে, বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ স্পষ্ট নির্দেশ দেন, "কোনোভাবেই ট্রায়াল বন্ধ করা যাবে না ৷ সুপ্রিম কোর্ট এই তদন্তে নজরদারি করছে ৷ তবে, পরিবারের যদি সেই তদন্ত নিয়ে কোনও আপত্তি থাকে, সে ব্যাপারে হাইকোর্ট নজরদারি করবে ৷ তাতে কোনও বাধা নেই ৷ আগামিদিনে 15 দিন পরপর তদন্তে অগ্রগতির রিপোর্ট নেওয়া যায় কি না, সে ব্যাপারে 24 ডিসেম্বর আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেবে হাইকোর্ট।"
এ দিনের শুনানিতে সিবিআইয়ের আইনজীবী বলেন, "ইতিমধ্যে তদন্তে অগ্রগতির ব্যাপারে আটটি স্ট্যাটাস রিপোর্ট দেওয়া হয়েছে আদালতকে ৷" যার প্রেক্ষিতে বিচারপতি আইনজীবীকে নির্দেশ দেন, এ নিয়ে পরবর্তী কী পদক্ষেপ করা হবে, সে ব্যাপারে সিবিআইয়ের থেকে ইন্সট্রাকশন নিতে ৷
সাংবাদিকদের নির্যাতিতার বাবা-মায়ের আইনজীবী গার্গী গোস্বামী বলেন, "আমাদের মনে হয়েছে সিবিআইয়ের তদন্তে অনেকগুলি দিক এড়িয়ে যাওয়া হয়েছে ৷ যেমন একজন অ্যাসিসটেন্ট সুপারিন্টেডেন্টের বয়ান নেওয়া হয়নি ৷ এমন অনেকদিকে গুরুত্ব দেওয়া হয়নি ৷ তাই আমরা চেয়েছিলাম হাইকোর্ট বিষয়টিকে দেখুক ৷ আমরা কখনোই চাই না ট্রায়াল কোর্টের প্রক্রিয়া বন্ধ হোক ৷ সেটা যেমন চলছে চলবে ৷ তেমনটাই হাইকোর্ট বলেছেন ৷ প্রয়োজনে হাইকোর্ট নজরদারি চালাবে তদন্তে ৷"
সিবিআই তদন্তে অনাস্থা নিয়ে নির্যাতিতার বাবা-মা বলেন, "সিবিআই তদন্তে ঢিলে দিচ্ছে ৷ তা না-হলে সন্দীপ ঘোষ ও অভিজিৎ মণ্ডল কীভাবে জামিন পান ! সিবিআই তো আমারা (নির্যাতিতার মা) বয়ান নিল না ৷ বাড়িতে এসে কথা বলেছে ৷ কিন্তু, বয়ান নেয়নি ৷ আপাতত সিবিআই-তে ভরসা রাখতে হবে ৷ কারণ, হাইকোর্ট বলেছে, তারা নজরদারি চালাবে ৷ এখন এর বেশি কিছু বলতে পারব না ৷"