কলকাতা, 6 অক্টোবর: উৎসবের আবহে গোটা শহর । তবে ইচ্ছে থাকলেও আর্থিক অভাবের কারণে সেই উৎসবে গা ভাসাতে পারেন না অনেকেই । গার্ডেনরিচ সংলগ্ন নাদিয়াল থানার বদরতলা এলাকায় তেমনই প্রায় 200 মহিলা ও শিশুর মুখে হাসি ফোটাতে প্রস্তুত মহম্মদ ওয়ারিশরা । তাঁদের হাতে তাঁরা তুলে দিচ্ছেন নতুন জামাকাপড় ৷ এর মাধ্যমে মূলত পুজোর মরশুমে সম্প্রীতির বার্তা ছড়িয়ে দিতে চান তাঁরা ।
শারদোৎসবের আলোয় মুড়েছে মহানগর । কিন্তু সেই আলো পৌঁছয়নি বহু প্রান্তিক মানুষের ঘরে । বদরতলায় রয়েছে তেমনই প্রায় 200টি পরিবার ৷ যাদের আর্থিক অবস্থা স্বচ্ছল নয় ৷ তাই হয়তো পুজোয় তাঁদের নতুন জামাকাপড়ও কেনা হয় না ৷ তাঁদের মধ্যে 100 মহিলাকে দেওয়া হচ্ছে শাড়ি । 100 শিশুকে নতুন জামা । আর এই নতুন পোশাক দেওয়া হচ্ছে বদরতলা শান্তি কমিটির তরফে ।
দুর্গাপুজোয় সম্প্রীতির বার্তা দিচ্ছে বদরতলা শান্তি কমিটি (নিজস্ব ছবি) দীর্ঘদিন ধরেই দুর্গাপুজোর উৎসব হোক বা ঈদ, ধর্মের বেড়াজাল ভেঙে সকলে মিলে অন্যান্য এলাকার মতো খুশিতে মাতেন বদরতলার বাসিন্দারাও । তবে 2020 সালে কিছু কারণে এলাকায় উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছিল । তবে ফের একে অপরের সঙ্গে বন্ধন অটুট করতে নাদিয়াল থানার উদ্যোগে একটি কমিটি গঠন করা হয় ।
ওই কমিটির নাম শান্তি ৷ তাতে আছেন হিন্দু ও মুসলিম প্রতিনিধিরা । যুগ্ম সম্পাদক মহম্মদ ওয়ারিশ ও রুদ্রেন্দ্র পাল । 2020 সালের ঘটনার পর থেকেই সম্প্রীতির বার্তা দিয়ে এই কমিটির তরফে খুশির ঈদে যেমন মুসলমান ধর্মাবলম্বী মানুষজনকে জামাকাপড় দেওয়া হয়, একইভাবে হিন্দু মানুষজনকে দুর্গাপুজো উপলক্ষে দেওয়া হয় নতুন জামাকাপড় ৷
200 মহিলা ও শিশুকে নতুন জামাকাপড় দিচ্ছে তারা (নিজস্ব ছবি) কমিটির যুগ্ম সম্পাদক মহম্মদ ওয়ারিশ বলেন, "দীর্ঘদিন ধরেই এই সমস্ত এলাকায় আমরা সব ধর্মের মানুষ একসঙ্গেই বসবাস করি । এক সঙ্গেই ওঠাবসা আমাদের । তবে 2020 সালের ঘটনায় সেই পরিবেশে খানিক বিঘ্ন ঘটেছিল । তারপর আমাদের মধ্যে সম্প্রীতি আরও দৃঢ় করতে আমার দুই সম্প্রদায়ের উৎসবেই এই কর্মসূচি নিয়ে থাকি । শুধু তাই নয়, এলাকায় কেউ যাতে উত্তেজনা ছড়াতে না পারে সেদিকে নজর রেখে ঈদের নামাজে যেমন হিন্দু ভাইরা স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে পাহারা দেয়, তেমন দুর্গাপুজোয় মুসলিম মানুষজন স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে পাহারা দেন । একে অপরের উৎসবের দিনে মুখে হাসি ফোটাতে পারলে আমাদেরও ভালো লাগে ।"