জলপাইগুড়ি, 11 সেপ্টেম্বর: রোগীর আত্মীয়দের বিরুদ্ধে মহিলা চিকিৎসককে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ । নিরাপত্তাহীনতার অভিযোগে মঙ্গলবার মাঝরাতে আন্দোলনে বসেন চিকিৎসক পড়ুয়ারা ৷ হাসপাতালের এমারজেন্সি ওয়ার্ডের সামনে বসে সিনিয়র ডাক্তারদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করলেন তাঁরা ৷ খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে হাসপাতালের অ্যাসিস্ট্যান্ট সুপার ও কোতয়ালি থানার পুলিশ ৷ ঘটনাকে কেন্দ্র করে চরম উত্তেজনা জলপাইগুড়ি সরকারি মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে ৷
উত্তপ্ত জলপাইগুড়ি হাসপাতাল (ইটিভি ভারত) জানা গিয়েছে, মাসকালাইবাড়ির এক ক্যানসার আক্রান্ত মহিলা লিপিকা দাস বীরকে মৃত অবস্থায় সরকারি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে নিয়ে আসা হয় ৷ নিয়ম অনুযায়ী, কর্তব্যরত চিকিৎসক ময়নাতদন্তের কথা বলেন ৷ আর তাতেই বেঁকে বসেন রোগীর আত্মীয়রা । পুলিশের উপস্থিতিতেই ডাক্তারদের হেনস্থা ও হুমকি দেওয়া হয় বলে অভিযোগ । রোগীর আত্মীয়দের সঙ্গে ছিলেন জলপাইগুড়ি পুরসভার 22 নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর পিঙ্কু বিশ্বাসও ৷ অভিযোগ, তিনিও সেই বচসায় জড়িয়ে পড়েন ৷
এরপরই নিরাপত্তা হীনতা বোধ করে আন্দোলন শুরু করেন চিকিৎসক পড়ুয়ারা । যদিও অভিযোগ অস্বীকার করেছেন স্থানীয় তৃণমূল কাউন্সিলর ৷ তিনি বলেন, "এক ক্যানসার মৃত রোগীকে আনা হয় হাসপাতালে ৷ পরিবারের লোকেরা ময়নাতদন্ত করতে রাজি হয় না ৷ আর তা নিয়েই শুরু হয় বচসা ৷ কে কী বলেছে, আমি জানি না । তবে ডাক্তারদের সঙ্গে আমি দেখা করে ক্ষমা চেয়ে গেলাম । আমি কাউকে গালিগালাজ বা হুমকি দিইনি ।"
ডাক্তার পৌলমী সাহার অভিযোগ, রাত আড়াইটে থেকে তাঁর এমারজেন্সিতে ডিউটি ছিল ৷ আর সেই মতো তিনি হাসপাতালে আসেন ৷ সেই সময়, এক মহিলা রোগীকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে আসা হয় । ময়নাতদন্ত করার কথা বলা হলে রোগীর আত্মীয়রা মানতে রাজি হননি ৷ এরপরই তাঁর সঙ্গে বচসা বেঁধে যায়, বলে জানিয়েছেন ডাক্তার পৌলমী । 'কীভাবে জলপাইগুড়িতে ডাক্তারি করবেন', 'দেখে নেব', বলে হুমকি দেওয়া হয় অভিযোগ তাঁর । মহিলা চিকিৎসক বলেন, "আমি শিলিগুড়ি থেকে আসি ৷ এই হুমকির পর আমার এখন আসতেও ভয় লাগবে ।"
জলপাইগুড়ি মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের অ্যাসিস্ট্যান্ট সুপার ডাক্তার সুরজিৎ সেন বলেন, "ময়নাতদন্ত না করেই রোগীর পরিবার মৃতদেহ জোড় করে নিয়ে চলে গিয়েছে । চিকিৎসক পৌলমী সাহা ও ডাক্তার সব্যসাচী সেনগুপ্তকে হেনস্থা ও হুমকি দেয় । আমরা কোতয়ালি থানায় অভিযোগ দায়ের করব । সিসিটিভি দেখে দোষীদের চিহ্নিত করা হবে ৷ আগামিকাল বৈঠকে বসব । পুলিশ থেকেও আমাদের নিরাপত্তা দিতে পারছে না ৷ আমরা তা আইসি-কে জানিয়েছি ।"