কলকাতা, 29 এপ্রিল:গরমে জেরবার গোটা দেশ । এর মধ্যেই তীব্র জলসঙ্কটের ছবি ফুটে উঠেছে চেন্নাই, বেঙ্গালুরুর মতো শহরগুলিতে । কলকাতায় সার্বিকভাবে তেমন সঙ্কট নেই ৷ তবে গরম পড়তেই কলকাতার দক্ষিণ ও সংযুক্ত বিস্তীর্ণ এলাকায় তীব্র হচ্ছে জলসঙ্কট । মেয়র ফিরহাদ হাকিম জানান, পরিশ্রুত পানীয় জল উৎপাদনই বাধা পাচ্ছেন তাঁরা । কারণ, তীব্র দাবদাহের জেরে জল প্রকল্পের যেখান থেকে জল তোলা হয়, সেখানে জোয়ার ছাড়া আর জল তোলা সম্ভব হচ্ছে না । জলস্তর এক্কেবারে নীচে চলে গিয়েছে । এই নিয়ে যথেষ্ট উদ্বেগ প্রকাশ করেন তিনি ।
জলের ট্যাঙ্কের উপর নির্ভর করে চলছে চেন্নাই, বেঙ্গালুরুর মতো বেশ কিছু শহর । জল অপচয় নিয়ে সেখানে রীতিমতো কড়াকড়ি মনোভাব প্রশাসনের । পরিস্থিতি এমন যে নাগরিক বা বাসিন্দারা হারে হারে টের পাচ্ছেন প্রতি ফোঁটা জলের গুরুত্ব । সেই ছবি কি এবার ফুটে উঠবে কলকাতার বুকেও ? দ্রুত কি সেই দিন ঘনিয়ে আসছে তিলোত্তমায় ? শুকিয়েছে গঙ্গা । তীব্র দাবদাহে সেখানেও কমেছে জলস্তর । এই পরিস্থিতিতে ধাক্কা খাচ্ছে কলকাতার পরিশুদ্ধ পানীয় জলের উৎপাদন । তাই আগামি দিনে শহরের জনজীবন স্বাভাবিক রাখতে জল অপচয় বন্ধ করার আর্জি জানালেন কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম । নাগরিকদের প্রতি তার অনুরোধ, আমরা সর্বত্র পানীয় জল সরবরাহ পর্যাপ্ত রাখার চেষ্টা করছি । বর্তমান পরিস্থিতিতে সেটা নিয়মিত চালানো সম্ভব না-ও হতে পারে । তাই জলের অপচয় রুখতেই হবে ।
কলকাতা কর্পোরেশন সূত্রে খবর, প্রতিদিনে গড়ে 500 মিলিয়ন লিটার জল উৎপাদন হয় । কিন্তু গত কয়েক সপ্তাহ ধরে তীব্র গরমে জল উৎপাদন মাঝে মধ্যেই ধাক্কা খাচ্ছে । সম্প্রতি দু-এক দিন খিদিরপুরের তক্তা ঘাটে পর্যাপ্ত জল গঙ্গা থেকে তোলা যায়নি । ফলে উৎপাদন ব্যাহত হয়েছে । পলতায় জল প্রকল্পটি এমনভাবে তৈরি সেটি জোয়ার এবং ভাটার সময় খুব একটা জলস্তরের পরিবর্তন হয় না । তাই কলকাতার উত্তর অংশ ও তার আশপাশের পৌর এলাকাও প্রস্তুত জল দিতে সেই সঙ্কট এখনই হবে না । কিন্তু শহরের অভ্যন্তরে বয়ে যাওয়া গঙ্গা নদী বিভিন্ন জায়গায় চড়া পড়েছে ৷ সেই সঙ্গে কাঠফাটা রোদে অনেক জায়গায় জলস্তর আংশিক কমে গিয়েছে । তার জেরে দক্ষিণ কলকাতা, যাদবপুর, টালিগঞ্জ, বেহালা, বাইপাস এলাকায় ব্যাপক প্রভাব পড়ছে । সেই সংকট আরও তীব্র হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে ।