আসানসোল, 25 ফেব্রুয়ারি: বাঁকুড়ার মেজিয়া পেরোনোর পর রানিগঞ্জ ঢুকতেই সূত্রপাত। প্রথমে একটি স্কুলবাসের সঙ্গে সংঘর্ষ হতে গিয়ে বাঁচে ৷ এরপর 19 নম্বর জাতীয় সড়কে দু'বার রোড ডিভাইডারে ধাক্কা। একটি লরির সঙ্গে ঠোকাঠুকি। শেষে অন্য আরেকটি লরির পিছনে গিয়ে সজোরে ধাক্কা ! এর জেরে বাংলা-ঝাড়খণ্ড সীমানায় ডুবুরডিহি চেকপোস্টের কাছে কুম্ভগামী বাস দুর্ঘটনার কবলে। পথ দুর্ঘটনায় 15 জন যাত্রী আহত হয়েছেন।
আহতদের মধ্যে 4 জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। বাসযাত্রী থেকে শুরু করে খালাসি জানিয়েছেন মদ্যপ চালকের জন্যই এমন ঘটনা ঘটেছে। মঙ্গলবার সকালে 19 নম্বর জাতীয় সড়কে কুলটি থানার অন্তর্গত ডুবরডিহি চেকপোষ্টে কুম্ভগামী একটি বাস দুর্ঘটনাগ্রস্ত হয়। এই ঘটনায় 15 জন পুণ্যার্থী আহত হয়েছেন।
ডুবুরডিহি চেকপোস্টের কাছে কুম্ভগামী বাস যার জেরে দুর্ঘটনার কবলে (ইটিভি ভারত) তাঁদেরকে জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের অ্যাম্বুলেন্স এবং মোবাইল ভ্যানে আসানসোল জেলা হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসার পর বেশ কয়েকজনকে ছেড়ে দেওয়া হলেও 4 জন গুরুতর আহত অবস্থায় চিকিৎসাধীন। জানা গিয়েছে, বাসটি পশ্চিম মেদিনীপুরের এগারার ঝালদা থেকে আসছিল।
বারবার দুর্ঘটনায় কুম্ভগামী বাস (নিজস্ব ছবি) বাসযাত্রীদের দাবি, চালক মদ্যপ অবস্থায় বাসটি চালাচ্ছিল, এবং অত্যন্ত খারাপভাবেই বাসটি চালাচ্ছিল সে। সেই কারণেই এই দুর্ঘটনা ঘটেছে। এমন কথা স্বীকার করে নিয়েছেন বাসের খালাসি রবীন কর।
রবীন কর ইটিভি ভারতকে বলেন, "গতকাল রাত থেকেই ড্রাইভার মদ খাচ্ছিল। আমি বারবার বারণ করি। কিন্তু, কথা শোনেনি। এছাড়াও, খুব জোরে বাস চালাচ্ছিল। রানিগঞ্জে একটি স্কুল বাসকে ধাক্কা মারতে গিয়ে প্রথমে বেঁচে যায় বাসটি। সেই স্কুল বাসের চালকের সঙ্গে বচসাও হয়। এরপর আরও দু'তিনবার ডিভাইডারে ধাক্কা মারে। আমি তাকে মানা করছিলাম। যদি বাস চালাতে না-পারে তাহলে কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে বিশ্রাম নিক। কিন্তু, ও কারও কথা শোনেনি। শেষে একটি লরির পিছনে গিয়ে ধাক্কা মেরে দেয়।"
আহত হয়েছেন যাত্রীরা (নিজস্ব ছবি) ওই বাসে ছিলেন বাঁকুড়ার শুভদীপ সৎপতি। শুভদীপ বলেন, "রানিগঞ্জের পর থেকেই আমাদের বাস দুর্ঘটনার কবলে পড়তে শুরু করে। বারবার একই ঘটনা ঘটায় আমরা চালককে সাবধানে বাস চালাতে বলি। কিন্তু, সে কথা শোনেনি। এরপরই একটি লরির পিছনে বাসটি ধাক্কা মারে। দুর্ঘটনায় আমার হাত ভেঙে গিয়েছে।"
বাসের খালাসি রবিন কর আহত (নিজস্ব ছবি) জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের অ্যাম্বুলেন্স ও মোবাইল ভ্যানের দায়িত্বে থাকা কর্মী সোমনাথ সিংহ জানান, একটি কুম্ভগামী বাস খুব দ্রুত গতিতে এসে একটি লরির পিছনে ধাক্কা মারে। প্রায় 15 জন আহতকে আমরা হাসপাতালে নিয়ে এসেছি।" কুলটি থানা চৌরঙ্গী ফাঁড়ির পুলিশ জানিয়েছে, দুর্ঘটনাগ্রস্থ বাসটিকে ক্রেনে করে রাস্তার একপাশে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। যাত্রীদের জন্য আশ্রয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে। আহত যাত্রীদের হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। চালকের সন্ধান চলছে। ঘটনার পর থেকেই সে পলাতক।