কলকাতা, 10 জুলাই: পেঁয়াজ উৎপাদনে বাংলা আত্মনির্ভর হোক, চাইছেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়। তিনি চান বাংলার মানুষের নাসিকের উপর নির্ভরতা কমুক। তার বদলে, রাজ্যে উৎপাদিত পেঁয়াজেই রাজ্যের মানুষের চাহিদা মিটুক।
মঙ্গলবার নবান্নে বাজার দর নিয়ে পর্যালোচনা করতে বসেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এখানে আলু, পেঁয়াজ-সহ সবজির মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে সরব হয়েছেন রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান। বিশেষ করে যেভাবে সাম্প্রতিক সময়ে বাজারে আলু এবং পেঁয়াজের দাম বাড়ছে তাতে রীতিমত উদ্বিগ্ন মুখ্যমন্ত্রী।
মমতা বলেন, "গত বছর এই সময় পেঁয়াজের দাম ছিল 35 টাকা। এবছর তা বেড়ে হয়েছে 50 টাকা। এটাকে আগের দামে ফিরিয়ে আনতে হবে।" পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রীর প্রশ্ন, "পেঁয়াজ আপনারা নাসিক থেকে কেন আনেন ? যখন আমাদের রাজ্যে পেঁয়াজের উৎপাদন হচ্ছে, তখন আমি নাসিক থেকে কেন পেঁয়াজ আনব!" মুখ্যমন্ত্রীর আরও প্রশ্ন, "নাসিক থেকে পেঁয়াজ আনতে গিয়ে আমাদের পরিবহণ খরচ কি বাড়ছে না ? বিগত দিনে ডিমও অন্য রাজ্য থেকে আনা হত। তবে আগামী ডিসেম্বর মাসের মধ্যে আমরা ডিম উৎপাদনে আত্মনির্ভর হয়ে যাব। কেউ কখনও বিকল্পের কথা ভাবেনি কেন ? বাংলা কি পেঁয়াজ উৎপাদন করতে পারে না ?"
একই সঙ্গে, মুখ্যমন্ত্রী এদিন নির্দেশ দিয়েছেন বাজারে পেঁয়াজের যে দাম বেড়েছে, এটা কমিয়ে আনতে হবে। মুখ্যমন্ত্রী এদিন কৃষি বিপণন দফতরকে নির্দেশ দিয়েছেন, পেঁয়াজের জন্য নাসিকের উপর ভরসা না-করে রাজ্যে উৎপাদিত পেঁয়াজ বাজারে ব্যবহার করতে হবে। তিনি বলেন, "বাঁকুড়া, মুর্শিদাবাদ-সহ বিভিন্ন জেলায় এই সুখসাগর পেঁয়াজ উৎপাদন হয় ৷ আমরা কেন সেগুলি চাষীদের কাছ থেকে আরও বেশি করে কিনছি না। এরাজ্যের চাষিরা দাম পাচ্ছে না। আমি জানি না, নাসিক থেকে পেঁয়াজ আমদানি করলে আপনারা কি কমিশন পান!" মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, "এরাজ্যের পেঁয়াজ বাংলাদেশে চলে যাচ্ছে। আমরা কেন সেগুলি ব্যবহার করছি না।"
মুখ্যমন্ত্রীর এদিন এও জানিয়েছেন, সুফল বাংলায় বাজারদরের থেকে কম দামে পেঁয়াজ দেয়া হচ্ছে। রাজ্যে 468টি সুফল বাংলা স্টল রয়েছে। কলকাতা সংলগ্ন এলাকায় 378টি এবং জেলাতে 90টি। এখানে আলু, পেঁয়াজ থেকে শুরু করে সব সবজি 10 থেকে 15 শতাংশ কম দামে পাওয়া যাচ্ছে। এদিন আলুর দাম বৃদ্ধি নিয়েও নিয়েও এদিন সরব হয়েছেন মমতা। আলুর দাম অস্বাভাবিক হারে বাড়ায় উদ্বিগ্ন মমতা। রাজ্যের কোলস্টোরেজে পর্যাপ্ত পরিমাণে আলু থাকা সত্ত্বেও কেন দাম বাড়ছে, তা নিয়ে সরব হয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
তিনি বলেন, "নতুন আলু আস্তে আস্তে এ বছর ডিসেম্বর মাস লেগে যাবে। আমাদের হিমঘরে পর্যাপ্ত আলু রয়েছে। তাও কেন দাম বাড়ছে !" তিনি বলেন, "আলু চাষীদের সুবিধার জন্য আলুকেও শস্য বীমার আওতায় নিয়ে আসা হয়েছে। এই বছরই শুধু আলু চাষীদের 322 কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়েছে। তারপরেও আমাদের রাজ্যে আলুর দাম কেন বাড়ছে ?"