কলকাতা, 3 অক্টোবর:মহালয়ায় একাধিকদুর্গাপুজার উদ্বোধন করেছেন । বুধবারের পর আজ বৃহস্পতিবারও উত্তর থেকে দক্ষিণ বৃষ্টি মাথাতেই পুজো উদ্বোধন করলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ।
এদিন তিনি পুজো উদ্বোধন শুরু করেন উত্তর কলকাতার ঐতিহ্যবাহী পুজো টালা প্রত্যয় দিয়ে । প্রত্যেক বছরই দুর্গাপুজোর অন্যতম প্রধান আকর্ষণ হয় উত্তরের এই পুজো । মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও নিয়ম করে এই পুজোর উদ্বোধনে আসেন । মুখ্যমন্ত্রী বৃষ্টি মাথায় টালা প্রত্যয়ের প্রাক শতবর্ষের পুজোতে এসে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, "চিন্তা করবেন না । দুর্যোগ কেটে যাবে ।" আবহাওয়া দফতর যদিও শনিবার পর্যন্ত বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে ৷ মূলত সেটাকে সামনে রেখেই মুখ্যমন্ত্রী এদিন উৎসবপ্রিয় বাঙালিকে চিন্তা না-করার পরামর্শ দিলেন ।
মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, "দুর্যোগ শব্দ শুনলেই কেমন যেন একটা ভয় করে । আগামী শনিবার পর্যন্ত দুর্যোগ চলবে । মায়ের কাছে প্রার্থনা করি এই পরিস্থিতি যেন তাড়াতাড়ি কেটে যায় । বৃষ্টি হবে আবার রোদ্দুরও উঠবে । কিন্তু উৎসব আটকাবে না ।"
শুধু টালা প্রত্যয় নয়, উত্তর থেকে দক্ষিণে যে সমস্ত পুজোয় এদিন তিনি গিয়েছেন, অধিকাংশতেই ঘুরে ফিরে এসেছে বৃষ্টির প্রসঙ্গ । বিশেষত, বেহালার ঐতিহ্যবাহী বরিশা ক্লাবের পুজোয় গিয়ে মমতা বলেন, "12 মাসে তেরো পার্বন। সঙ্গে থাকে আষাঢ় শ্রাবণ । এখন দু-তিন দিন বৃষ্টি হবে ৷ তবে পুজোর সময় রোদ হবে, বৃষ্টিও হবে । উৎসব থেমে থাকে না । উৎসব এগিয়ে যাবে ।"
এদিন মুখ্যমন্ত্রী বলেন, "বন্যার জন্য আশঙ্কা ছিল পুজোর উদ্বোধন করতে পারব কি না । বিভিন্ন জেলা ঘুরে বন্যা দুর্গতদের সাহায্য করার চেষ্টা করেছে সরকার । তবে সবকিছুর পর যখন অফিসে খোঁজ নিলাম, তখন অন্যান্যবারের থেকে অনেক বেশি আবেদন পড়েছিল এবার । আমি কয়েকটা জায়গাতেই যাই, একটা ধারা মেনে ।" তাঁর কথায়, "এই বেহালা থেকেই আমার রাজনৈতিক আন্দোলনের শুরু আপনারা বলতে পারেন । আর সে কারণেই আপনাদের এখানে প্রত্যেকবার আসি ।"
মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, আগামিকাল শ্রীধারা থেকে ভার্চুয়াল মাধ্যমে 400 পুজোর উদ্বোধন করবেন তিনি । একইভাবে শনিবার আলিপুর বডিগার্ড লাইন থেকে জেলার 400 পুজোর উদ্বোধন করবেন মুখ্যমন্ত্রী । মুখ্যমন্ত্রী বলেন, "ওরাও চায় আমি পুজো উদ্বোধন করি । আমি সকলের সঙ্গে থাকতে চাই ।"
এদিন বরিশা নতুন দল ক্লাব থেকে মুখ্যমন্ত্রীর হাতে বন্যাদুর্গত মানুষদের জন্য ত্রাণ তুলে দেওয়ার কথা বলা হয় । মুখ্যমন্ত্রী বলেন, "আমি ইতিমধ্যেই ত্রাণ পাঠিয়ে দিয়েছি । এক্ষেত্রে যদি প্রয়োজন হয় আমি আপনাদের থেকে চেয়ে নেব । সরকারের থেকে দেওয়া হয়েছে । দলের তরফ থেকেও সাহায্য করা হয়েছে । আমাদের সহকর্মীরাও বিভিন্ন জায়গায় গিয়েছেন । চাল, ডাল, আলু, ড্রাই ফুড, সরষের তেল, বাচ্চাদের জন্য বিস্কুট, দুধ সবকিছুরই ব্যবস্থা করা হয়েছে ।"
প্রসঙ্গত, উত্তর কলকাতার টালা প্রত্যয় থেকে শুরু করে আলিপুর সর্বজনীন, খিদিরপুর 25 পল্লি, কোলাহল, বেহালা নতুন দল, বেহালা বরিশা ক্লাব, অজেয় সংহতি, 41 পল্লি হয়ে উদ্বোধন শেষ হয় মুখ্যমন্ত্রীর পাড়ার পুজো মিলন সংঘে ।