রামপুরহাট, 2 এপ্রিল: শীতলকুচি কাণ্ডে 'বলির পাঁঠা' করে অপদস্ত করা হয়েছে তাঁকে ! বিস্ফোরক প্রাক্তন আইপিএস তথা বীরভূম লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী দেবাশিস ধর ৷ 2021 বিধানসভা ভোটের সময় শীতলকুচি কাণ্ড থেকে শুরু করে, বিজেপিতে যোগ দেওয়ার কারণ, ইটিভি ভারতের মুখোমুখি হয়ে অকপট 2010 ব্যাচের আইপিএস ৷ তাঁর অভিযোগ শীতলকুচি ঘটনার পর রাজ্যের প্রশাসনের শীর্ষে থাকা ব্যক্তি বলেছিলেন, "এই অফিসারকে ফাঁসাও ৷" পুলিশের চাকরিতে কার্যত হেনস্তার শিকার হয়েই তাঁর ইস্তফা দেওয়া ৷
2001 সাল থেকে 2004 পর্যন্ত বাঁকুড়ার বিভিন্ন জায়গায় জয়েন্ট বিডিও পদে কাজ করেছেন দেবাশিস ধর ৷ 2004 সালে পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে পুলিশে যোগ দেন ৷ পরে 2010 ব্যাচে আইপিএস ৷ জানা গিয়েছে, ছাত্র জীবনে এসএফআই করতেন ৷ 'বামমনস্ক' এই পুলিশ অফিসার 2021 সালে প্রথম বিতর্কে জড়ান ৷ রাজ্য বিধানসভা নির্বাচনের সময় তিনি কোচবিহার জেলার পুলিশ সুপার ছিলেন ৷ শীতলকুচিতে কেন্দ্রীয় বাহিনীরগুলিতে 4 জনের মৃত্যু হয় ৷
তবে, সেই ঘটনায় পুলিশ সুপারের রিপোর্টে অসন্তোষ প্রকাশ করেছিল রাজ্য সরকার ৷ এরপরেই তাঁকে সাসপেন্ড করে, কমপালসারি ওয়েটিংয়ে পাঠানো হয়েছিল ৷ মাঝে তিনবছর লোকচক্ষুর আড়ালে ছিলেন তিনি ৷ আর লোকসভা নির্বাচনের আগে হঠাৎই, পুলিশের চাকরি থেকে ইস্তফা দেন আইপিএস দেবাশিস ধর ৷ আর তার কিছুদিনের মধ্যেই বীরভূম লোকসভা কেন্দ্র থেকে বিজেপির টিকিটে প্রার্থী তিনি ৷ প্রচারের প্রথমদিনে তারাপীঠ মন্দিরে পুজো দিলেন ৷ এরই ফাঁকে ইটিভি ভারতের মুখোমুখি হলেন প্রাক্তন পুলিশকর্তা ৷
ইটিভি ভারত- পুলিশের চাকরি ছেড়ে বিজেপিতে কেন?
দেবাশিস ধর- "তিন বছরের যে জার্নি তাতেই মনস্থির করেছিলাম পুলিশের চাকরি ছেড়ে দেব ৷ মেডিক্যাল চাইলেও মিলছিল না, একটার পর একটা হেনস্থা। রাজনীতিতে না-এলেও পুলিশের চাকরি করতাম না।"
ইটিভি ভারত- আপনাকে আনুষ্ঠানিকভাবে বিজেপিতে যোগ দিতে দেখা যায়নি ৷ পুলিশের চাকরি ছেড়েই প্রার্থী ৷ আগের থেকেই কি বিজেপি করতেন ?
দেবাশিস ধর- এটা আমাদের অফিসিয়াল সিদ্ধান্ত ৷ আমাদের নেতৃত্ব ভার্চুয়ালিই সব করেছে ৷ আজকাল ভার্চুয়ালিই সব কাজ হয় ৷ আমাকেও রাজ্য ও কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব সব কাজ ভার্চুয়ালি করিয়েছেন ৷
ইটিভি ভারত- শীতলকুচি কাণ্ড ও আপনার সম্পত্তি নিয়ে সিআইডি তদন্তও চলছে ৷ এসব থেকে গা বাঁচাতেই কি বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন ?
দেবাশিস ধর- এটা ভালো হয়েছে ৷ আমার কথাগুলো আমি সঠিকভাবে বলতে পারছিলাম না ৷ আমার সম্পত্তি যদি মাইনাস দু’শো শতাংশ থেকে বাড়িয়ে প্লাস 200 শতাংশ করে দেওয়া হয়, কাহলে কি করা যাবে ! এই সরকারের বিরুদ্ধে যেই কথা বলেছে, তারই বিরুদ্ধে এই রকম মিথ্যা সাজানো হয়েছে ৷ এতদিন এগুলি সামনে আসেনি ৷ এতদিন সংখ্যালঘু মানুষদের বোকা বানিয়ে, তাদের লাশকে ভোট ব্যাঙ্ক বানিয়েছে ৷ এই বগটুয়ে মানুষকে পুড়িয়ে মেরেছে ৷ গাজার যুদ্ধের মতো, সাধারণ মানুষ একদিকে, আর সরকার এক দিকে ৷ সরকার যতসব গুন্ডামি চাপা দিয়েছে ৷ শাহজাহান, জাহাঙ্গীর সব এখন বেরোচ্ছে ৷