তারাপীঠ, 16 অক্টোবর: আজ শুক্লা চতুর্দশী। মা তারার আবির্ভাব দিবস। কথিত আছে শুক্লা চতুর্দশীর তিথিতেই মা তারার আবির্ভাব হয়েছিল। সেই আবির্ভাব দিবসে মা তারাকে পুজো দেওয়ার ভক্তদের ভিড় তারাপীঠে।
তারাপীঠ মন্দির কমিটির সভাপতি তারাময় মুখোপাধ্যায় বলেন, "আজ ভোর 3টের সময় মাকে গর্ভগৃহ থেকে বের করে বিরামমঞ্চে নিয়ে আসা হয়েছে ৷ সেখানে মাকে স্নান করিয়ে, মঙ্গল আরতি করে ভক্তদের দর্শনের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে ৷ সারাদিন মা এখানেই থাকবেন ৷ সন্ধ্যার সময় মাকে গর্ভগৃহে এনে স্নান করিয়ে রাজবেশ পরিয়ে লক্ষ্মীরূপে পুজো করা হবে ৷" এ দিনটিতেই তারা মায়ের দর্শনের জন্য অনেক ভক্ত সমাগম হয় ৷
তারাপীঠে আজ লক্ষ্মীরূপে পূজিত হন মা (ইটিভি ভারত)
কথিত আছে জয় দত্ত নামে এক বণিক দ্বারকা নদীর উপর দিয়ে নৌকায় চড়ে বাণিজ্য করতে যাচ্ছিলেন। সেই সময় তিনি তারাপীঠে নোঙর করেছিলেন। সেখানে সাপের কামড়ে তাঁর পুত্রের মৃত্যু হয়েছিল। তারাপীঠে নোঙর করায় বণিকের ভৃত্য রান্না করার জন্য একটি কাটা শোল মাছ পাশের একটি পুকুরে ধুতে যায়। পুকুরের জলের সংস্পর্শে আসতেই কাটা শোল মাছটি জীবিত হয়ে পুকুরের গভীরে চলে যায়। ভৃত্যরা এই অলৌকিক ঘটনাটি বণিককে জানালে, তিনি সর্পদংশনে তাঁর মৃত পুত্রকে সেই পুকুরের জলে স্নান করাতে শুরু করেন। তখন মৃত পুত্র জয় তারা, জয় তারা উচ্চারণ করতে করতে বেঁচে ওঠেন। তখনই বণিক বুঝতে পারেন এই পুকুরে কোন ঐশ্বরিক শক্তি আছে ৷ বর্তমানের সেই পুকুরটি জীবিত কুণ্ড নামে খ্যাত। সেই রাতেই বণিককে স্বপ্ন দেন মা তারা। দিনটি ছিল শুক্লা চতুর্দশী। স্বপ্ন পেয়ে সেই দিনটিতেই তারাপীঠে মা তারার পুজো শুরু করেন বণিক জয় দত্ত ৷
আজ মা তারার আবির্ভাব দিবস (ইটিভি ভারত)
তাই প্রাচীনকাল থেকে এই দিনটিকে মা তারার আবির্ভাব দিবস হিসেবে পালন করা হয়ে থাকে। বছরের এই একটি দিনে মা তারাকে গর্ভগৃহ থেকে বের করে নিয়ে এসে মন্দিরের সামনে থাকা বিরামমঞ্চে অধিষ্ঠিত করা হয়। দিনভর সেখানেই মা তারাকে পুজো দিতে পারেন পুর্ণ্যার্থীরা। সন্ধ্যায় আরতির পর ফের মা তারাকে মূল মন্দিরে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। আজকের দিনে মা তারাকে দুপুরে কোন ভোগ নিবেদন করা হয় না। তাই এই দিনটিতে মা তারার সেবাইতেরাও উপবাস থাকেন। সন্ধ্যায় ভোগ নিবেদনের পর উপবাস ভঙ্গ করেন তাঁরা।