কলকাতা, 3 ডিসেম্বর:কালীপুজোর রাতে বাজি ফাটানোর প্রতিবাদ করছিলেন বাবা ৷ সেই কারণে শ্লীলতাহানির মিথ্য়া মামলা দায়ের করে ফাঁসানো হয় । পরে তাঁকে গ্রেফতার করে লেকটাউন থানার পুলিশ ৷ এক মাস ধরে মিথ্যে কেসে জেল খাটছেন বাবা ৷ সেই অপমান ও রাগে চরম সিদ্ধান্ত নাবালিকার ৷ তাতেই ফুঁসছেন প্রতিবেশীরা ৷ তাঁদের দাবি, যতক্ষণ না ওই ব্যক্তিকে মুক্তি দেওয়া হচ্ছে ততক্ষণ পর্যন্ত নাবালিকার দেহ নিয়ে যেতে দেবেন না তাঁরা ৷ ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা লেকটাউন দক্ষিণদাড়িতে ।
দেহ উদ্ধার করতে পুলিশ ঘটনাস্থলে এলে বিক্ষোভ দেখান স্থানীয় বাসিন্দারা ৷ তাঁদের অভিযোগ, মিথ্যা মামলায় ওই ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ । বহুবার থানায় গিয়ে বলা সত্ত্বেও অভিযোগের সত্যতা খতিয়ে দেখা হয়নি ৷ একতরফা মিথ্যা অভিযোগে এক মাস ধরে একজনকে জেলবন্দি করে রেখেছে ৷
নাবালিকার মৃত্যুতে মা ও স্থানীয় বাসিন্দাদের বক্তব্য (ইটিভি ভারত) জানা গিয়েছে, কালীপুজোর রাতে এলাকায় বাজি ফাটানোর প্রতিবাদ করেছিলেন বিরজু সাউ । তার প্রতিশোধ নিতে এক প্রতিবেশী যুবতি ও তার মা হুমকি দেয়, তাঁকে মিথ্যে মামলায় ফাঁসাবে ৷ সেই হুমকিই সত্যি হয় ৷ শ্লীলতাহানির অভিযোগে বিরজু সাউকে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ ৷ বহুবার স্থানীয় বাসিন্দাদের সকলের সই নিয়ে থানায় গিয়েছেন ধৃতের স্ত্রী ৷ কিন্তু তাতেও কর্ণপাত করেনি পুলিশ ৷ উল্টে বলা হয়েছে, তাঁদেরকেও গ্রেফতার করা হবে ৷ এরপর দমদম সংশোধনাগারে পাঠিয়ে দেওয়া হয় বিরজু সাউকে ।
বাবাকে মিথ্যে মামলায় ফাঁসানোর অভিযোগ ও জেল খাটা মেনে নিতে পারেনি বছর বারোর মেয়েটি ৷ তখন থেকেই অবসাদে ভুগছিল নাবালিকা ৷ মঙ্গলবার শেষ পরীক্ষা দিয়ে স্কুল থেকে বাড়ি ফিরে এই দুর্ঘটনা ঘটায় ৷ এমনটাই দাবি করেছেন নাবালিকার মা শিখা সাউ ও প্রতিবেশীরা ৷ তাঁদের বক্তব্য, পুলিশ সঠিক পদক্ষেপ নিলে আজ এমন একটা তরতাজা প্রাণ চলে যেত না ৷ যদিও এই বিষয় নিয়ে বিশদে কিছু জানায়নি বিধাননগর কমিশনারেট ৷
তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিধাননগর কমিশনারেটের এক আধিকারিক বলেন,"আজ আমরা খবর পাই বিরজু সাউয়ের মেয়ে অচৈতন্য অবস্থায় পড়ে আছে । ঘটনাস্থলে পুলিশ গিয়ে তাকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে তাকে চিকিৎসকরা মৃত বলে ঘোষণা করেন । দেহটি ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে । ময়নাতদন্তের রিপোর্ট আসার পর সঠিক কারণ জানা যাবে ।"
(আত্মহত্যা কোনও সমাধান নয়:যদি আপনার মধ্যে কখনও আত্মহত্যার চিন্তা মাথাচাড়া দেয় বা আপনার কোনও বন্ধু বা পরিচিত এই সমস্যায় জর্জরিত হন, তাহলে ভেঙে পড়বেন না। জানবেন, এমন কেউ আছে যে আপনার যন্ত্রণা, আপনার হতাশা ভাগ করে নিতে সদা-প্রস্তুত। আপনার পাশে দাঁড়াতে তৎপর। সাহায্য পেতে দিনের যে কোনও সময়ে 044-24640050 এই নম্বরে কল করুন স্নেহা ফাউন্ডেশনে। টাটা ইন্সটিটিউট অফ সোশাল সায়েন্সের হেল্পলাইন নম্বরেও (9152987821) কল করতে পারেন। এখানে ফোন করতে হবে সোমবার থেকে শনিবার সকাল 8টা থেকে রাত 10টার মধ্যে।)