কলকাতা, 21 জুলাই: তৃণমূল জমানায় রাজ্যে দারিদ্রসীমা আট শতাংশে নেমে এসেছে বলে রবিবার 21 জুলাই-এর মঞ্চ থেকে দাবি করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ আর এই তথ্য নিয়ে ঘাসফুলকে তীব্র কটাক্ষ করল রাজ্যের বিরোধী বাম-কংগ্রেস নেতৃত্ব ৷ বামেদের কটাক্ষ, মুখ্যমন্ত্রী যে ধরনের মন্তব্য বা দাবি করছেন, তা গাঁজাখুরি গল্পকেও হার মানাবে ৷
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাবি নিয়ে কটাক্ষ বাম-কংগ্রেসের (ইটিভি ভারত) ধর্মতলার শহিদ মঞ্চ থেকে রবিবার মমতা বলেন, "আমরা দায়িত্বে আসার আগে দারিদ্রসীমার নীচে ছিলেন 57.60 শতাংশ মানুষ ৷ আমাদের জমানায় তা 40 শতাংশেরও বেশি কমেছে ৷" সিপিআই(এম) পলিটব্যুরো সদস্য সুজন চক্রবর্তী এর পালটা বলেন, "গাঁজাখুরি বলে একটা শব্দ আছে ৷ সেই গাঁজাখুরিও হার মেনে যাবে ৷ বর্তমান মুখ্যমন্ত্রীর সরকারের দেওয়া তথ্য দেখুন ৷ তাতে দেখা যাচ্ছে, 2010-11 সালে গোটা ভারতবর্ষের দারিদ্র্য সীমা যতটা ছিল তার থেকে অনেকটাই কম ছিল এ রাজ্যে। রাজ্যে বামফ্রন্ট ক্ষমতায় আসার আগে 56-57 শতাংশের উপরে দারিদ্র্য সীমা ছিল। তা কমতে কমতে বামফ্রন্ট সরকারের আমলে এসে 20 শতাংশে দাঁড়ায়। সেই তথ্যই তো বর্তমান সরকার তুলে ধরেছে। নিজের সরকারের দেওয়া তথ্যই তিনি মানছেন না। এটাকে গাঁজাখুরি গল্প ছাড়া আর কী বলা যেতে পারে !"
অন্যদিকে, প্রদেশ কংগ্রেসের মুখপাত্র সৌম্য আইচ রায় বলেন, "মুখ্যমন্ত্রীর এই কথা শুনলে ধর্মতলার ঘোড়াও হাসবে। হাজার হাজার বেকার মেধাবী ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যা বাড়ছে। চাকরি নেই। মমতা নিজে দাবি করছেন স্বাস্থ্য সাথীর সুবিধা পেতে লাইন বাড়ছে। 100 দিনের কাজের শ্রমিকের সংখ্যা বাড়ছে। তাহলে কোন যুক্তিতে রাজ্যের দারিদ্র্যসীমা কমছে ?"
এদিকে এদিনই উত্তরপ্রদেশের সমাজবাদী পার্টির নেতা আখিলেশ যাদব একুশের মঞ্চ থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দরাজ প্রশংসা করেছেন। আগামী দিনে বিজেপি বিরোধী ইন্ডিয়া জোটের সরকার গঠনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাশে থাকার আশ্বাসও দিয়েছেন।
এই প্রসঙ্গে সিপিএম-এর সুজন চক্রবর্তী বলেন, "কোনও রাজনৈতিক দলের নেতাকে অন্য রাজনৈতিক দল ডাকলে নিশ্চয়ই তাদের সম্পর্কে ভালো কথা বলবেন এটাই তো স্বাভাবিক। গোটা দেশে বিজেপি বিরোধী যে ইন্ডিয়া জোট তৈরি হয়েছে আঞ্চলিক দলগুলিকে নিয়ে তাতে সমাজবাদী পার্টি বা অন্যান্য আঞ্চলিক দল সঠিক ভূমিকা বা ঠিক জায়গায় দাঁড়িয়ে থাকলেও তৃণমূল একাধিকবার নিজের অবস্থান বদলেছে।" কংগ্রেস নেতা সৌম্য আইচ রায় বলেন, " ইন্ডিয়া জোটের অন্যতম শরিক কংগ্রেস। ফলে, কে কী বলল তা নিয়ে মাথা না ঘামানোই ভালো।"