জাঙ্গিপাড়া, 27 জানুয়ারি: ফুটবল দম্পতির ফু্টবলকে ঘিরে লড়াইয়ের গল্প। যা জীবন জীবিকার অন্য ধারার ছবি সামনে তুলে নিয়ে আসে। কবিতা সোরেন বাংলার মহিলা ফুটবলের নতুন কন্যাশ্রী। স্বামী নিরঞ্জয় মুর্মু ভাগচাষী। ফুটবল উৎসাহী। স্ত্রী কবিতার এগিয়ে যাওয়ার পথে প্রতিবন্ধক নন। বরং অনুপ্রেরনা। কবিতা পারিবারিক সমস্ত প্রতিকূলতা উপেক্ষা করে ফুটবলকে বাহন করে জীবনের রাজপথে দৌঁড়ে চলেছেন। লড়াই সংগ্রামের উপাখ্যান জড়িয়ে কবিতা এখন সুপার মম।আধো আধো কথায় সে মাকে উৎসাহ দেয়। যা কবিতার ভালো খেলার ভোকাল টনিক।
ফুটবলার কবিতা বলেন, "আমি শ্রীভূমি এফসির সুজাতা করের কাছেই প্র্যাক্টিস করছি। পরবর্তী লীগের জন্য ক্যাম শুরু হবে ৷ ডাক পড়েছে আমার। আগামী দিনে আমি চাই ভারতের জার্সি গায়ে দিয়ে মহিলা ফুটবল দলের হয়ে খেলতে। আমি যদি কিছু করতে পারি অন্যান্য মেয়েরাও আমাকে দেখে এগিয়ে আসবে । স্বামীর চাষবাস ও খেলে যে টাকা পাই তাই দিয়ে আমাদের কোনওরকমে সংসার চলে। যদি খেলা থেকে চাকরি সুযোগ আসে খুব সুবিধা হয়। সংসারে সচ্ছলতা ফেরে।"
কবিতার স্বামী নিরঞ্জয় মুর্মু নিজে একটা সময় সাইয়ের আবাসিক ফুটবলার ছিলেন। নিজের খেলা চালিয়ে যেতে পারেননি।ফুটবলের প্রতি ভালোবাসা থেকেই বিয়ের আগে থেকেই কবিতাকে উৎসাহ দিতেন। নিরঞ্জয় বলেন, "আমি চাষ-বাস করি।সেই রকম আমার আয় নেই। কবিতা আমায় অনেকটাই সাহায্য করে। খেলা থেকে যে টাকা-পয়সা পাওয়া যায় সবকিছুই সংসারের জন্য খরচ করে কবিতা। মহিলা ফুটবলার হওয়ায় প্রথমদিকে আমাদের গ্রামের প্রতিবেশি ও আমার মাও খেলা নিয়ে অনেক বিরোধিতা করেছে। আগামিদিনে আমরা চাই কবিতা ভারতের জার্সি পড়ে ফুটবল খেলুক। আমাদের কাছে এটাই গর্বের ব্যাপার। সকলের কাছেই আমার আবেদন খেলাধুলায় ক্ষেত্রে অনেক চাকরি হয়। যদি কোনওরকম চাকরির সুযোগ হয়, তাহলে আগামিদিনে অন্যান্য মেয়েরাও উৎসাহ পাবে।"
জাঙ্গিপাড়া থানার হিজুলি গ্রামে শ্বশুর বাড়ি কবিতা সোরেনের। স্বামী নিরঞ্জয় মুর্মু ভাগ চাষী। তাঁদের আড়াই বছরের এক পুত্র সন্তান সানিকে নিয়ে সংসার। সাঁওতাল পরিবারের মাটি ও টালির বাড়িতে কোনও রকমে দিন গুজরান করে চলেছে তাঁরা ৷ সংসারে অভাব অনটনের ছাপ স্পষ্ট। তা সত্বেও শত বাঁধার মধ্যেও সাইকেল চালিয়ে হরিপাল স্টেশন হয়ে কলকাতার মাঠে পৌঁছায় 26 বছরের কবিতা। সে কলকাতার একাধিক ক্লাবে ফুটবল খেলেছে। এছাড়াও দুটি ন্যাশনাল ও দুটি ইউনিভার্সিটি ফুটবল টিমে খেলেছে।