মালদা, 18 জুন: জেঠিমা তখনও জানতেন না, স্নেহা আর নেই ৷ কাঞ্চনজঙ্ঘা ট্রেন দুর্ঘটনার কবলে গতকাল থেকেই উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি ছিল 6 বছরের স্নেহা ৷ রাত থেকেই পরিবারের সকলের সময় কেটেছে উৎকণ্ঠায় ৷ মঙ্গলবার সকালে আসে দুঃসংবাদ ৷ জানতে পারলেন, তাঁর আদরের মেয়ে আর নেই ৷ কান্নায় ভেঙে পড়ে আর কোনও কথা বলতে পারেননি জেঠিমা রিনা মণ্ডল ৷ স্বজন হারিয়ে ভারাক্রান্ত মালদার কালীগঞ্জ গ্রাম ৷
রিনা মণ্ডল বলেন, "দেওর মাহিলাল মণ্ডল আর তাঁর স্ত্রী ছবি মণ্ডলের থেকে ভাইঝি স্নেহার অবস্থা বেশি খারাপ ছিল ৷ ওর পা টুকরো টুকরো হয়ে গিয়েছিল ৷ বুকের কাছে ফুটো হয়েছে বলে জানিয়েছিল চিকিৎসক ৷ প্রচুর রক্তক্ষরণ হয় ৷ 12 বোতল রক্ত দেওয়া হয়েছে ৷ বেলা 12টা নাগাদ ফোনে ভাইঝির মৃত্যুর খবর পাই ৷"
গ্রামের বাসিন্দা সুজিত মণ্ডল বলেন, "স্নেহার মৃত্যুর খবরে সকলে খুব ভেঙে পড়েছেন ৷ ওর বাবা-মাও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ৷ পাশাপাশি স্নেহার মা ছবিদেবী সম্পর্কে আমাদের কাকিমা ৷ তিনি পঞ্চায়েত সদস্য ৷ গ্রামে কারও কিছু হলে তিনি সবসময় সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন ৷ সকালে জানতে পারি, মেয়েটার রক্তক্ষরণ আটকানো যাচ্ছিল না ৷ তার পরেই ওর মৃত্যুর খবর গ্রামে আসে ৷" ছয় বছরের ছোট্ট স্নেহার মৃত্যুতে গ্রামে নেমেছে শোকের ছায়া ৷"
জানা গিয়েছে, চাঁচল 2 নম্বর ব্লকের ক্ষেমপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের কালীগঞ্জ গ্রামের বাসিন্দা তাঁরা ৷ মাহিলাল মণ্ডল গ্রামের দীর্ঘদিনের বাসিন্দা ৷ তিনি মানিকচক হাইস্কুলের শিক্ষক ৷ স্ত্রী ছবি মণ্ডল তৃণমূলের গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্যা ৷ ক’দিন আগে জলপাইগুড়িতে এক আত্মীয়র বাড়িতে গিয়েছিলেন তাঁরা ৷ সঙ্গে ছিল একমাত্র মেয়ে ৷ সে দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়ত ৷ মঙ্গলবার স্নেহার মৃত্যুর খবর ঘোষণা করেন উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজের চিকিৎসক ৷