মালদা, 16 সেপ্টেম্বর: অবশেষে পুলিশের জালে কালিয়াচকের বেতাজ বাদশা ৷ দিল্লি থেকে ডন আসাদুল্লা বিশ্বাসকে গ্রেফতার করে এনেছে মালদার কালিয়াচক থানার পুলিশ ৷ তাঁর গ্রেফতারিতে খানিকটা স্বস্তি, খানিকটা অস্বস্তিতে রয়েছেন কালিয়াচকের বাসিন্দারা ৷ অস্বস্তির কারণ ডনের সাগরেদরা ৷ যদিও এনিয়ে মুখে কুলুপ সবার ৷ তবে ডনের গ্রেফতারিতে খুশির হাওয়া পুলিশ মহলে ৷
কিন্তু কে এই আসাদুল্লা ? জেলার রাজনীতিতে তাঁর ভূমিকাই বা কী ? স্থানীয়রা বলছেন, আসাদুল্লার বাড়ি কালিয়াচক 1 নম্বর ব্লকের মোজমপুর গ্রামে৷ বাম আমলে ছিলেন সিপিএমের প্রভাবশালী নেতা ৷ জেলা পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন বেশ কয়েক দফায় ৷ অবশ্য সেই সময় মোজমপুর এলাকায় নির্বাচনের নামে প্রহসন হত বলে বারবার অভিযোগ তুলেছে বিরোধীরা ৷ শুধু তিনিই নন, তাঁর ভাই গোলাম কিবরিয়া বিশ্বাসও বিনা বাধায় জেলা পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন ৷ রাজ্যে পালাবদলের পর তিনিও ‘লাল জামা’ পালটে ফেলেন ৷ নাম লেখান ঘাসফুল শিবিরে ৷ কিন্তু এলাকায় তাঁর রাজত্ব চলতে থাকে ৷
একটা সময় বছরের বেশিরভাগ দিনই বোমা-গুলির শব্দে ঘুমোতে যেতেন ও ঘুম থেকে উঠতেন মোজমপুরের বাসিন্দারা ৷ এলাকার লোকের অভিযোগ, আসাদুল্লা বিশ্বাসের সঙ্গে স্থানীয় নারায়ণপুর এলাকার প্রভাবশালী কংগ্রেস নেতা তুহুর আলি বিশ্বাসের দ্বন্দ্বে কত যে খুন হয়েছে, তার ইয়ত্তা নেই ৷ তুহুর আলির দুই ছেলেও এই দ্বন্দ্বের শিকার ৷ যদিও পরবর্তীতে পুলিশের কড়া হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে ৷
শুধুই কি রাজনৈতিক ক্ষমতা দখলের লড়াই ? মাদক ব্যবসা, জাল নোট ও বেআইনি অস্ত্রের কারবার, সীমান্তে চোরাপাচার, গোটা এলাকায় নিজের নিয়ন্ত্রণ কায়েম রাখতে পরিকল্পিতভাবে হিংসা ছড়ানো, এমনকি নিজের স্বার্থে থানা পোড়ানোর মতো ঘটনাতেও মূল অভিযুক্ত তিনি ৷ এসবের জন্যও কালিয়াচকে খুনের ঘটনা কম ঘটেনি ৷
অভিযোগ, সম্প্রতি ব্রাউন সুগার ব্যবসায় এলাকা দখলকে কেন্দ্র করে তাঁর সঙ্গে দ্বন্দ্ব চলছিল ওয়াহিদুর শেখ আর ঝান্টু শেখের গ্রুপের সঙ্গে ৷ গত 18 অগস্ট গুলি করার পর কুপিয়ে খুন করা হয় ওয়াহিদুরকে ৷ আবারও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে মোজমপুর ৷ এই ঘটনাতেও মূল অভিযুক্ত আসাদুল্লা ৷