পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

ETV Bharat / state

অনশনের 13 দিন ! হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেলেন অনিকেত, বাকিরা কেমন আছেন?

অনশনের ত্রয়োদশতম দিনে চিন্তা বাড়ছে অনশনকারীদের পরিবারগুলির ৷ এদিকে, আজ হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়েছেন অনিকেত মাহাতো ৷ এখনও আশঙ্কাজনক অবস্থা তনয়া পাঁজার ৷

By ETV Bharat Bangla Team

Published : 4 hours ago

Updated : 3 hours ago

ETV BAHRAT
হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেলেন অনিকেত (নিজস্ব চিত্র)

কলকাতা, 17 অক্টোবর: অবিলম্বে দ্রুত পদক্ষেপ করা উচিত মুখ্যমন্ত্রী ও রাজ্য প্রশাসনের ৷ হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়ে একথা বললেন জুনিয়র চিকিৎসক অনিকেত মাহাতো । পরবর্তীতে তিনি আন্দোলনে কীভাবে ফিরবেন, সেবিষয়ে বাকিদের সঙ্গে কথা বলেই সিদ্ধান্ত নেবেন বলে জানিয়েছেন অনিকেত ৷

জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলনের অন্যতম মুখ অনিকেত মাহাতো ৷ বিভিন্ন কর্মসূচিতে যাঁদের আন্দোলনের অগ্রভাগে দেখা গিয়েছে, তাঁদের মধ্যে তিনি অন্যতম ৷ আরজি কর-কাণ্ডের ন্যায়বিচার-সহ 10 দফা দাবিতে আমরণ অনশনও শুরু করেছিলেন তিনি ৷ তবে 11 অক্টোবর তাঁকে ধর্মতলার অনশন মঞ্চ থেকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় অ্যাম্বুলান্সে করে আরজি কর হাসপাতালের সিসিইউ-তে নিয়ে যাওয়া হয় ।

অনশনকারীদের স্বাস্থ্যের রিপোর্ট (নিজস্ব চিত্র)

তাঁর শরীরে কিটোনের মাত্রা অত্যধিক বেড়ে যাওয়ায় উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন চিকিৎসকরা ৷ প্রায় এক সপ্তাহ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকার পর বর্তমানে তাঁর পরিস্থিতি স্বাভাবিক বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন । তবে এখনও তাঁর বিশ্রামের প্রয়োজন রয়েছে বলে জানিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ৷

অনশনের ত্রয়োদশতম দিন (নিজস্ব চিত্র)

আজ হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাওয়ার পর অনিকেত বলেন, "আমাদের 10 দফা দাবির যৌক্তিকতাকে মেনে নিয়ে রাজ্য প্রশাসন ও মুখ্যমন্ত্রীর অবিলম্বে হস্তক্ষেপ করা উচিত । সিবিআইয়ের চার্জশিট দেখে আমাদের মনে হচ্ছে, এখনও পর্যন্ত অভয়ার বিচার অধরা । সেমিনার ঘরের ভেতরে কী ঘটেছিল, মোটিভ কী ছিল, সেই বিষয়গুলি এখনও অধরা থেকে গেল ৷ মেডিক্যাল বোর্ডের পরামর্শগুলি আমি মেনে চলব, বাকিদের সঙ্গে কথা বলে আন্দোলনের পরবর্তী পদক্ষেপের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেব ।"

অনিকেত হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেলেও এখনও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন আরও কয়েকজন অনশনকারী জুনিয়র চিকিৎসক ৷ তাঁদের শারীরিক পরিস্থিতি ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হচ্ছে ৷ তবে অনশনমঞ্চে থাকা অনশনকারীদের শরীর ক্রমে দুর্বল হয়ে পড়ছে ৷ তাঁদের নিয়ে চিন্তা বাড়ছে তাঁদের পরিবার ও আন্দোলনকারীদের ৷

উদ্বিগ্ন অনশনকারীদের পরিবাররা (নিজস্ব চিত্র)

অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া অনশনকারী জুনিয়র চিকিৎসক পুলস্ত্য আচার্যের অবস্থা বর্তমানে স্থিতিশীল । আজ তাঁর লিভারের একটি পরীক্ষা করা হবে । তবে এখনও সিসিইউতেই আছেন পুলস্ত্য । ধীরে ধীরে তাঁর ব্লাড প্রেশার স্বাভাবিক হচ্ছে ৷

আরেক জুনিয়র চিকিৎসক অনুষ্টপ মুখোপাধ্যায়ও এখনও হাসপাতালে ৷ আজ থেকে তাঁকে সাধারণ খাবার দেওয়া হবে । যদি তিনি হালকা খাবার খেতে পারেন, তাহলে সিসিইউ থেকে তাঁকে জেনারেল বেডে স্থানান্তরিত করার কথা ভাবা হবে । নতুন করে আর কোনও পরীক্ষা তাঁকে করাতে হবে না । আগের থেকে তাঁর শারীরিক অবস্থার উন্নতি হয়েছে । রক্ত পরীক্ষা ছাড়া যে ইসিজি করা হয়েছিল, সেই রিপোর্টও স্বাভাবিক । তাঁর নতুন করে রক্তক্ষরণ হচ্ছে না । কালো মলও হয়নি ।

তবে জুনিয়র চিকিৎসক তনয়া পাঁজার অবস্থা এখনও আশঙ্কাজনক । তবে তাঁর জ্ঞান ফিরেছে । এখনও তাঁর শরীরে বেশকিছু সমস্যা রয়েছে । শরীরে পটাশিয়ামের মাত্রা স্বাভাবিক হচ্ছে ধীরে ধীরে । ফ্লুইড দেওয়া হচ্ছে তাঁকে । তবে নতুন করে আর কোনও সমস্যা তৈরি হয়নি বলে জানিয়েছেন মেডিক্যাল বোর্ডের সদস্যরা ।

অন্যদিকে, টানা 13 দিন ধরে ধর্মতলায় অনশনে রয়েছেন তিনজন জুনিয়র চিকিৎসক । পরবর্তীকালে সেখানে যোগ দিয়েছেন আরও 2 জন । রোজই অনশনকারী অর্ণব মুখোপাধ্যায়কে দেখতে আসেন তাঁর বাবা ও মা । বৃহস্পতিবার অনশনমঞ্চে অর্ণবের বাবা প্রবোধ মুখোপাধ্যায়ের গলায় স্পষ্ট চিন্তার ছাপ ৷ তিনি বলেন, "আমি যথেষ্ট চিন্তিত । লিভার নষ্টের দিকে যাচ্ছে । হাসপাতালে ভর্তি হতে আমিও বলেছি । ও ভর্তি হতে চাইছে না । বাবা হিসেবে আমি আতঙ্কিত । এঁরা ভবিষ্যতের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার কর্ণধার । যদি ওঁদের কারও এই অনশনের জন্য শারীরিক ক্ষতি হয়, তার জন্য দায়ী থাকবে রাজ্যের সরকার ।"

Last Updated : 3 hours ago

ABOUT THE AUTHOR

...view details