কলকাতা, 30 এপ্রিল: চাকরি খেয়ে নিচ্ছেন বিকাশ ভট্টাচার্য ৷ এই অভিযোগে আদালত চত্বরেই তাঁকে ঘিরে ধরে বিক্ষোভ দেখালেন বিতর্কিত চাকরিপ্রাপকরা ৷ মঙ্গলবার প্রাইমারি টেট মামলার শুনানি শেষ হওয়ার পর বিকাশ ভট্টাচার্যকে ঘিরে এজলাসের বাইরে বিক্ষোভ দেখানো হয় ৷ পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে বিক্ষোভকারীদের বের করে দেয় ।
এ দিন বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার এজলাসে শুনানি ছিল 2014 সালের টেটের ভিত্তিতে যে প্রায় 42 হাজারেরও বেশি নিয়োগ হয়েছিল সেই সংক্রান্ত মামলার । বিচারপতি মান্থা এই মামলাতেই মন্তব্য করেছিলেন যে, "প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ ওএমআর শিট দেখাতে না পারলে পুরো নিয়োগই বাতিল করে দেব ।" সেই মামলারই এ দিন শুনানি ছিল । শুনানির পর আদালত কক্ষ থেকে বাইরে বেরোতেই বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্যকে দেখে বিক্ষোভে ফেটে পড়েন বিতর্কিত চাকরিপ্রাপকরা ।
তাঁরা বিকাশের উদ্দেশে বলতে থাকেন, "চাকরি দিতে পারেন না । এত বিপুল চাকরি কেড়ে নিচ্ছেন ?" যদিও বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য এ প্রসঙ্গে কোনও মন্তব্য করেননি ।
এ দিন 2014 সালের টেট নিয়োগ দুর্নীতির মামলায় সিবিআই রিপোর্টে ব্যাপক অনিয়মের ইঙ্গিত পাওয়া গিয়েছে । নকল ওয়েবসাইট তৈরি করে বাইরের লোক নিয়োগ, ফেল করা প্রার্থীদের পাশ হিসেবে দেখিয়ে নিয়োগ-সহ কী কী ভাবে বেআইনি কর্মকাণ্ড চলেছে সে বিষয়ে তদন্ত রিপোর্ট বিচারপতি মান্থার এজলাসে তুলে দিয়েছে সিবিআই। এই নিয়ে আজ প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের বক্তব্য জানানোর কথা ছিল । কিন্তু আজ আরও প্রার্থী মামলায় যুক্ত হওয়ার আবেদন জানান । আদালত সবাইকে মামলায় যুক্ত হওয়ার অনুমতি দেয় ।
এই 2014 সালের টেটের উপরে ভিত্তি করে 2016, 2020, 2022 ও 2024 সালে প্রাথমিকে নিয়োগ হয়েছে । আদালত এ দিনের পর্যবেক্ষণে বিষয়টি উল্লেখ করে জানিয়ে দেয় যে, এই টেট মামলার ফল যদি নেতিবাচক হয়, তাহলে এর উপর ভিত্তি করে হওয়া সব নিয়োগ মামলা অস্তিত্ব হারাবে । ফলে গত চার দফায় যে প্রায় 70 হাজার শিক্ষক প্রাথমিকে নিয়োগ হয়েছেন, তাঁদের ভবিষ্যত অনিশ্চিত হয়ে পড়বে বলে আশংকা আইনজীবীদের । আগামী আট সপ্তাহ পরে ফের এই মামলার শুনানি হবে । তার আগে সব পক্ষকে হলফনামা দিতে নির্দেশ দিয়েছে আদালত ।
আরও পড়ুন:
- চাকরি বাতিলের জন্য দায়ী মমতা, অভিযোগ শুভেন্দুর
- চাকরি বাতিল নিয়ে হাইকোর্টের রায় বহাল, 'সম্পূর্ণ জালিয়াতি হয়েছে' পর্যবেক্ষণ সুপ্রিম কোর্টের
- এসএসসি অফিস ঘেরাও অভিযানকে কেন্দ্র করে সল্টলেকে ধুন্ধুমার