কলকাতা, 21 মার্চ: গার্ডেনরিচে বহুতল ভেঙে পড়ার ঘটনায় প্রাথমিক তদন্তে নেমে আধিকারিকদের হাতে এল নতুন তথ্য ৷ তদন্তকারীরা জানতে পারেন, পাহাড়পুর রোডের এক ইমারতি ব্যবসায়ী ও প্রোমোটারের কাছ থেকে মাটি ও বালি মেশানো সিমেন্ট ব্যবহার করেছিল ধৃত ওয়াসিম। দু'শো টাকা প্রতি বস্তা পিছু সিমেন্টেই নাকি পাঁচতলা বাড়ি নির্মাণ চলছিল ওই এলাকায় ৷ ধৃতদের জেরা করে আরও এক অন্য প্রোমোটারের নাম পেয়েছেন তদন্তকারীরা।
জানা গিয়েছে, ওই প্রোমোটার নাকি ওয়াসিমকে 200 টাকা প্রতি বস্তা হিসেবে সিমেন্ট বিক্রি করত। কিন্তু সংশ্লিষ্ট সিমেন্টের বস্তায় সেই সিমেন্টের গুণমান নিয়েও সন্দেহ আছে তদন্তকারীদের। তাছাড়াও সে সস্তায় মিহি দানার মাটি মেশানো বালি ব্যবহার করত বলে জানা গিয়েছে। তার ফলে যেমন পিলার বা থাম শক্তপোক্ত হয়নি, তেমনই অবস্থা ছিল কংক্রিটের ঢালাইয়ের। মহম্মদ ওয়াসিমকে জেরা করে গোয়েন্দারা আরও জেনেছেন যে, নিজের ইচ্ছেমতো ভিত তৈরির পর থাম পুঁতে পর পর পাঁচতলার ফ্লোর ও ছাদ ঢালাই করা হয়।
অভিযোগ কোনও পরিকল্পনা না-থাকায় থাম নিজের মতো চওড়া করে সে নিজেই। এমনকী একেকটি থাম একেকরকমের চওড়া, অদ্ভুত এই ইঞ্জিনিয়রিংয়ের নমুনাও চোখে পড়েছে তদন্তকারীদের সাহায্য করা ফরেনসিক বিশেজ্ঞদের চোখে। শুধু গার্ডেনরিচ নয়, এই চত্বরের বিভিন্ন জায়গায় গড়ে উঠেছে বেআইনি আবাসন । আর কোথায় এমন বেআইনি আবাসন গড়ে উঠছে তা দেখার জন্য এবার কলকাতা পৌরনিগমের আধিকারিকদের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করবে কলকাতা পুলিশ, এমনটাই জানা গিয়েছে।
ধৃত প্রোমোটারকে জেরা করে একাধিক অন্যান্য প্রোমোটারের নাম পাওয়া গিয়েছে ৷ পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট আবাসনটি তৈরি করার জন্য যার সাহায্য নেওয়া হয়েছিল সেই মহম্মদ সারফারজকেও গ্রেফতার করা হয়েছে ইতিমধ্যেই। তবে এসবের মাঝে প্রশ্ন একাধিক ৷ গার্ডেনরিচে এই ভয়াবহ দুর্ঘটনার দায় কার? তারা কী আদৌ শাস্তি পাবে ? চলছে রাজনৈতিক চাপানউতোর।
আরও পড়ুন:
- কেএমসি অ্যাক্টে স্বতঃপ্রণোদিত মামলা করেনি গার্ডেনরিচ থানা, লালবাজারের নজরে ওসি
- গার্ডেনরিচের ঘটনায় অভিযুক্ত প্রোমোটারের পর গ্রেফতার সহযোগী পাপ্পু
- গার্ডেনরিচ বিতর্কের মাঝে কলকাতা পৌরনিগমের বিল্ডিং বিভাগে রদবদল, বদলি হলেন 4