পেট্রাপোলে ভাষার আবেগে পড়ল ছেদ, বাংলাদেশকে ছাড়াই হল ভাষা দিবসের অনুষ্ঠান - INTERNATIONAL MOTHER LANGUAGE DAY
প্রতি বছর ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের নোম্যান্সল্যান্ডে হয় ভাষা দিবসের অনুষ্ঠান ৷ এবার বাংলাদেশ আগ্রহ দেখায়নি ৷ তাই সীমান্তের কাছে ভারতীয়রাই পালন করল ভাষা দিবস ৷
পেট্রাপোলে ভাষার আবেগে পড়ল ছেদ, বাংলাদেশকে ছাড়াই হল ভাষা দিবসের অনুষ্ঠান (নিজস্ব চিত্র)
পেট্রাপোল, 21 ফেব্রুয়ারি: আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে ভিন্ন ছবি পেট্রাপোল বন্দরে । বাংলাদেশের পরিস্থিতিতে বন্ধ থাকল দুই বাংলার যৌথ ভাষা দিবস উৎযাপন । মিলন হল না দুই বাংলার ভাষাপ্রেমী মানুষের । ভাষার টানে পেট্রাপোলে এসে হতাশ হয়ে ফিরলেন এপারের বহু মানুষ । কার্যত ফাঁকা থেকে গেল বন্দর ।
স্থানীয় প্রশাসন সূত্রে খবর, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ভাষা দিবস উদযাপনী অনুষ্ঠান নিয়ে তেমন উৎসাহ দেখায়নি । বাংলাদেশের পক্ষ থেকে এই নিয়ে কোনও বার্তা বা যোগাযোগও করা হয়নি । বাংলাদেশের সদিচ্ছার অভাব থাকায় এবার পেট্রাপোলে দুই বাংলার মিলন হল না ।
পেট্রাপোলে ভাষার আবেগে পড়ল ছেদ, বাংলাদেশকে ছাড়াই হল ভাষা দিবসের অনুষ্ঠান (ইটিভি ভারত)
বিগত বছরগুলিতে উত্তর 24 পরগনার পেট্রাপোল সীমান্তে নোম্যান্সল্যান্ডে ভারত-বাংলাদেশ যৌথভাবে ভাষা দিবস উৎযাপন করে এসেছে । এই দিনে সীমান্তের কাঁটাতারের বেড়া মলিন হয়ে যেত । থাকত না সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কড়াকড়ি । সীমান্তে এসে মিলত দুই বাংলার অগণিত ভাষা প্রেমী মানুষ ।
কিন্তু এবছর দেখা গেল না সেই ছবি । একুশের দিনে কার্যত ফাঁকা পড়েই রইল জিরো পয়েন্ট । বাংলাদেশের বেনাপোলেও দেখা মিলল না বাংলাদেশিদের । অল্প কিছু সংখ্যক মানুষ যারা পেট্রাপোল সীমান্ত এসেছিলেন, তারাও ভারাক্রান্ত মনে ফিরলেন সীমান্ত থেকে ।
দুই বাংলার মিলনের ছবি দেখতে এসে হতাশ হয়ে ফিরলেন বৃদ্ধ জগন্নাথ বিশ্বাস । আক্ষেপের সুরে তিনি বলেন, "আমরা মিলনের ছবি দেখতে চাই, এপার বাংলা ওপার বাংলা মিলেমিশে একাকার হবে আবেগে চোখ দিয়ে জল ঝরবে, আমরা সেই ছবি দেখতে চাই । এসেছিলাম ওপার বাংলার মানুষের সঙ্গে আলিঙ্গন করব, চোখের জলে বুক ভাসিয়ে একুশে ফেব্রুয়ারিকে স্বাগত জানাব, হল না ।"
ভাষা দিবসে সীমান্তে ভারতীয় নাগরিকরা (নিজস্ব ছবি)
তবে সাধারণ মানুষের আবেগের কথা মাথায় রেখে প্রতিবছরের মতো এ বছরও ভারতীয় ভূখণ্ডে ছয়ঘড়িয়া গ্রাম পঞ্চায়েত এবং বনগাঁ পঞ্চায়েত সমিতির যৌথ উদ্যোগে ভাষা দিবস উদযাপনের আয়োজন করা হয় । পেট্রাপোলে নির্মিত অস্থায়ী শহিদ বেদীতে পুস্পার্ঘ্য নিবেদনের মধ্য দিয়ে ভাষা শহিদদের শ্রদ্ধা জানানো হয় । ভাষা দিবসের অস্থায়ী মঞ্চে বাংলা ভাষার মর্যাদাকে সমুন্নত রাখতে বিভিন্ন ধরনের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয় । এদিন পেট্রাপোলে ভাষা শহিদদের শ্রদ্ধা জানান বনগাঁর প্রাক্তন সাংসদ তথা রাজ্যসভায় তৃণমূলের সাংসদ মমতাবালা ঠাকুর ৷
পেট্রাপোলে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত (নিজস্ব ছবি)
বনগাঁ পঞ্চায়েত সমিতির পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ প্রসেনজিৎ ঘোষ বলেন, "বাংলাদেশের পক্ষ থেকে আমাদের সঙ্গে ভাষা দিবসের অনুষ্ঠান নিয়ে যোগাযোগ করেনি । আমরা যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তাদের দিক থেকে কোনও সাড়া মেলেনি । তাদের সদিচ্ছার অভাবেই দুই বাংলার মিলন হল না । আঘাত পড়ল ভাষা প্রেমী মানুষের ভাবাবেগে ।"