পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

ETV Bharat / state

কানপুর থেকে নিখোঁজ মালদার যুবক, অসহযোগিতার অভিযোগ পুলিশের বিরুদ্ধে - Engineer Missing

Engineer Missing from Kanpur: উত্তরপ্রদেশের পানিপথে ইন্ডিয়ান অয়েলের অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার পদে যোগ দেন মালদার ইন্দ্রনীল ঝা ৷ ছুটিতে বাড়ি ফেরার পথে নিখোঁজ তিনি ৷ ঘটনায় কানপুর পুলিশের অসহযোগিতার অভিযোগ তুললেন ইন্দ্রনীলের পরিবার ৷

Engineer Missing from Kanpur
কানপুর থেকে নিখোঁজ মালদার যুবক (নিজস্ব চিত্র)

By ETV Bharat Bangla Team

Published : May 26, 2024, 10:54 PM IST

মালদা, 26 মে:এ বছরের মার্চ মাসে ইন্ডিয়ান অয়েলের অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার পদে উত্তরপ্রদেশের পানিপথে কাজে যোগ দেন মানিকচক ব্লকের ধরমপুরের যুবক ইন্দ্রনীল ঝা ৷ কর্তৃপক্ষের কাছে কয়েক দিনের জন্য ছুটির আবেদন করেছিলেন ইন্দ্রনীল ৷ আবেদন মেনে 19 এপ্রিল তাঁর 10 দিনের ছুটি মঞ্জুরও করে কর্তৃপক্ষ ৷ ছুটি পেয়েই বাড়ির উদ্দেশে বেড়িয়ে পড়েন ইন্দ্রনীল ৷ বাসে চড়ে পানিপথ থেকে কানপুর আসেন তিনি ৷ কানপুর সেন্ট্রাল থেকে বাড়ি ফেরার ট্রেন ধরার কথা ছিল তাঁর ৷ স্টেশনে যাওয়ার পথে ফোনে বাবা-মায়ের সঙ্গে কথাও বলেন তিনি ৷ তারপর থেকেই আর কোনও হদিস নেই 28 বছর বয়সী ইন্দ্রনীলের ৷ তাঁর মোবাইল ফোনও বন্ধ ৷

এরপর একমাস পেরিয়ে গেলেও ছেলের সন্ধান না পেয়ে দুশ্চিন্তায় ভুগছেন বাবা-মা ৷ ছেলের সন্ধানে কানপুরও গিয়েছিলেন তাঁরা ৷ কিন্তু যোগী রাজ্যের পুলিশ একজনকে গ্রেফতার করলেও তাঁদের কোনও সহায়তা করেনি বলে অভিযোগ ইন্দ্রনীলের পরিবারের ৷ শেষ পর্যন্ত তাঁদের পাশে থাকার বার্তা দিয়েছেন এলাকারই এক বাম নেতা ৷ প্রশাসনিক ও দলীয়ভাবে ইন্দ্রনীলের খোঁজ করা হবে বলে নিখোঁজ ইঞ্জিনিয়ারের পরিবারকে আশ্বাস দিয়েছেন এলাকারই বাসিন্দা তথা সিআইটিইউ-র জেলা কমিটির সদস্য দেবজ্যোতি সিনহা ৷

আরও পড়ুন:ঘূর্ণিঝড় রেমালের জের! সদ‍্যজাতকে নিয়ে বাড়ি ফেরা হল না দুই মায়ের

মানিকচকের চৌকি মীরদাদপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের ধরমপুর গ্রামের বাসিন্দা সাধন ঝা ৷ পেশায় সেলসম্যান তিনি ৷ স্ত্রী জয়শ্রী ঝা স্বাস্থ্য দফতরের আশাকর্মী ৷ ইন্দ্রনীল তাঁদের একমাত্র সন্তান ৷ ছোট থেকেই পড়াশোনায় বেশ ভালো ৷ ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করার পর ইন্ডিয়ান অয়েলে চাকরি পান ৷

আরও পড়ুন:ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে আটক 12 কোটির সোনার বিস্কুট ! ধৃত চোরাচালানকারী

সাধনবাবু বলেন, "আমার ছেলে বি-টেক করার পর ইন্ডিয়ান অয়েলে চাকরি পায় ৷ পানিপথে চাকরিতে যোগও দেয় ৷ অনেক কষ্ট করে বিভিন্ন জায়গা থেকে ঋণ নিয়ে একমাত্র সন্তানকে লেখাপড়া করিয়েছি ৷ সেই ছেলে কানপুর থেকে বাড়ি আসার পথে নিখোঁজ ৷ 20 তারিখ আমাদের সঙ্গে ওর কথাও হয়েছে ৷ তারপর আর কথা হয়নি ৷ ছেলের খোঁজে নেতা-বিধায়কদের দরজায় ভিক্ষুকের মতো ঘুরেছি ৷ কেউ পাশে দাঁড়াননি ৷ মানিকচক থানার আইসি আমাদের কিছুটা সাহায্য করেছেন ৷ পুলিশ জানিয়েছে ছেলের মোবাইল ফোনের শেষ লোকেশন ছিল কানপুর ৷ ছেলের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে বেশি কিছু টাকাও অন্য অ্যাকাউন্টে ট্রান্সফার করা হয়েছে ৷ এরপরেই আমরা কানপুরে যাই ৷ 18 দিন সেখানে ছিলাম ৷ সেখানকার পুলিশ সাফ জানিয়ে দেয়, ভোটের জন্য ওঁনারা কিছু করতে পারবে না ৷ যোগী-রাজ্য নিয়ে অনেক কথা শুনেছিলাম ৷ এটাই কি ওই রাজ্যে সুশাসনের নমুনা? তবে একজনের সাহায্যে আমরা লালবাজারে সিআইডির দ্বারস্থ হয়েছি ৷ সিআইডি ছেলের খোঁজ দেওয়ার বিষয়ে আমাদের আশ্বাস দিয়েছে ৷ একটা বিষয়ে আমরা নিশ্চিত, ছেলে এখনও সুস্থ রয়েছে ৷ ওর কিছু হয়নি ৷ আমার কারও উপর অভিমান নেই ৷ শুধু ছেলেকে ফিরে পেতে চাই ৷"

আরও পড়ুন:দুই নাবালিকাকে যৌন নির্যাতন! মালদায় গ্রেফতার 3 যুবক

ইন্দ্রনীলের পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন সিআইটিইউ-র জেলা সম্পাদক দেবজ্যোতি সিনহা ৷ সাধনবাবুদের সঙ্গে কথা বলার পর তিনি বলেন, "পানিপথে কাজ করার সময় ইন্দ্রনীল একটু অসুস্থ হয়ে পড়েন ৷ তাই কানপুর, পাটনা হয়ে বাড়ি ফিরছিলেন ৷ পানিপথ থেকে তিনি 19 এপ্রিল রওনা দেন ৷ কানপুরে তিনি দুষ্কৃতীদের পাল্লায় পড়েন ৷ আমাদের অনুমান দুষ্কৃতীরা তাঁকে কোনও গ্রামে নিয়ে গিয়ে সব কেড়ে নেয় ৷ ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা ট্রান্সফারে সেটাই বোঝা যাচ্ছে ৷ কানপুর পুলিশ দুষ্কৃতীকে ধরেছে ৷ তাঁর মোবাইল ফোনও বাজেয়াপ্ত করেছে ৷ কিন্তু ইন্দ্রনীলের হদিস দিতে পারেননি ৷ এনিয়ে আমরাও উদ্বেগে রয়েছি ৷" এর সঙ্গেই সিআইটিইউ-র জেলা সম্পাদক বলেন, "ইন্দ্রনীলকে উদ্ধারের দায়িত্ব রাজ্য প্রশাসনেরও রয়েছে ৷ কানপুর পুলিশ এই ঘটনার দায় নিজেদের কাঁধ থেকে নামিয়ে ফেলতে চায়ছেন ৷ কিন্তু আসল বিষয় তো ছেলেটাকে উদ্ধার করা ৷ কানপুর থানা সঠিক তদন্ত করছে না ৷ এরজন্য রাজ্য সরকারকেও উদ্যোগ নিতে হবে ৷ আমরা দিল্লির সিআইটিইউ নেতৃত্বকেও বিষয়টি জানিয়েছি ৷ প্রয়োজনে ইন্দ্রনীলকে উদ্ধারে আমরা আন্দোলনে নামব ৷"

ABOUT THE AUTHOR

...view details