মালদা, 12 ফেব্রুয়ারি: তিনদিন পরই শুরু হচ্ছে এ বছরের উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা ৷ কিন্তু এখনও হাতে অ্যাডমিট কার্ড পায়নি হরিশ্চন্দ্রপুর-1 নম্বর ব্লকের এক উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার্থী ৷ অ্যাডমিট কার্ড পেতে একাধিকবার স্কুল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে সে ৷ কিন্তু স্কুলের তরফে বলা হচ্ছে, সে নাকি পরীক্ষার ফর্ম ফিল-আপই করেননি ৷ অথচ তাঁর কাছে রয়েছে রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেট ৷ পরীক্ষা দিতে না-পারলে আত্মহত্যার হুমকি দিয়েছে সে ৷ গোটা ঘটনায় স্কুলের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিডিও'র কাছে অভিযোগ দায়ের করেছে পরীক্ষার্থীর পরিবারের সদস্যরা ৷
কনুয়া ভবানীপুরের ওই পড়ুয়ার মা স্কুলেই মিড ডে মিলের রাঁধুনির কাজ করেন ৷ বাবা পেশায় শ্রমিক ৷ নিতান্তই গরিব পরিবার ৷ এই অবস্থায় মেয়ের উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার অ্যাডমিট কার্ড না-আসায় হতাশ তাঁরাও ৷ ছাত্রীর মা বলেন, "মেয়ের অ্যাডমিট কার্ড না-আসায় আমরা প্রথমে স্কুলের প্রধান শিক্ষকের দ্বারস্থ হই ৷ তাঁকে সব বলি ৷ কিন্তু তিনি কোনও পদক্ষেপ নেননি ৷ উলটে বলছেন, আমরা যা ইচ্ছে করতে পারি ৷ এই ঘটনায় মেয়ে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছে ৷ ও কিছু করে ফেললে তার দায় কে নেবে? তেমন হলে কিন্তু প্রধান শিক্ষকই দায়ী থাকবেন ৷ আমরা গরিব মানুষ ৷ তার মধ্যেও বাচ্চাদের শিক্ষিত করার চেষ্টা করছি ৷ সরকার বলছে, মেয়েদের আরও পড়াও ৷ কিন্তু শিক্ষকরা যদি এমন গাফিলতি করেন, তবে আমাদের মতো গরিব ঘরের মেয়েদের উচ্চশিক্ষা কেমন করে হবে?"
ছাত্রীর বক্তব্য, "16 ডিসেম্বর আমরা কয়েকজন বান্ধবী একসঙ্গেই ফর্ম ফিল-আপ করেছিলাম ৷ সেদিন সার্ভার ডাউন ছিল ৷ স্যর বলেছিলেন, কাগজ আর ফি জমা দিয়ে যা ৷ পরে ফর্মের কাজ করে দেব ৷ তিনি সবার কাজ করে দিয়েছেন ৷ আমার কাজ করেননি ৷ গত 2 ফেব্রুয়ারি অ্যাডমিট কার্ড নেওয়ার জন্য আমাদের স্কুলে ডাকা হয় ৷ আমি স্কুলে গিয়ে দেখি, সবার অ্যাডমিট কার্ড আসলেও আমার আসেনি ৷ গোটা বিষয়টি আমি এসআই ম্যাডাম-সহ পঞ্চায়েত সদস্য ও প্রধানকে জানিয়েছি ৷ মা বিডিওকেও জানিয়েছেন ৷ আমার কাছে রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেট রয়েছে ৷ টেস্ট পরীক্ষায় উত্তীর্ণও হয়েছি ৷ তারপরেও স্যরের এমন মিথ্যে কথা মেনে নিতে পারছি না ৷ পরীক্ষা দিতে না-পারলে আমার আত্মহত্যা ছাড়া গতি নেই ৷"