পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

ETV Bharat / state

মরেও শান্তি নেই ! মৃতদেহ শেষ দেখা নিয়ে বচসায় ভাঙচুর শববাহী গাড়ি, মারধর চালককে

পৈতৃক বাড়ির সঙ্গে কোনও যোগাযোগ নেই । তাই মেয়েটির মা মৃতদেহ ওই বাড়িতে নিয়ে যেতে রাজি হননি । সেই নিয়ে বচসা বাঁধে ৷

hearse Vandalised
শববাহী গাড়িতে ভাঙচুরের অভিযোগ (নিজস্ব ছবি)

By ETV Bharat Bangla Team

Published : 4 hours ago

জলপাইগুড়ি, 6 নভেম্বর:মরেও শান্তি নেই ! মৃতদেহ পৈতৃক বাড়িতে নিয়ে যাওয়াকে কেন্দ্র করে মামার বাড়ির সঙ্গে বচসা । অভিযোগ, এর জেরে নিহতের পৈতৃক বাড়ির তরফে ভাঙচুর করা হয় শববাহী গাড়ি । মারধর করা হয় শববাহী গাড়ির চালককেও । মৃতদেহ উদ্ধার করে কোতোয়ালি থানায় শববাহী গাড়ি নিয়ে আসেন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার কর্মীরা । ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা ছড়ায় জলপাইগুড়িতে ।

এই ঘটনায় জলপাইগুড়ি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সম্পাদক অঙ্কুর দাস কোতোয়ালি থানায় অভিযোগ করে বলেন, "আমাকে ফোন করে এক ব্যক্তি জানান, একটি মৃতদেহ দেবনগর থেকে মাসকালাইবাড়ি শ্মশানে নিয়ে যেতে হবে । সেই মোতাবেক চালক স্বরূপ বসাক শববাহী গাড়ি নিয়ে দেবনগরে যান । সঞ্চারী সরকারের মৃতদেহ শববাহী গাড়িতে করে আনার সময় সেটিকে আটকায় বেশ কিছু ব্যক্তি । তাঁরা দাবি করেন শেষ দেখা করার জন্য মৃতদেহ যুবতীর ঠাকুরমা ও ঠাকুরদার বাড়িতে নিয়ে যেতে হবে । তাঁরা কোনও ভাবেই শ্মশানে মৃতদেহ নিয়ে যেতে দেবেন না ৷ যতক্ষণ না পর্যন্ত পৈতৃক বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয় দেহটি ।"

শববাহী গাড়ি (নিজস্ব ছবি)

তাঁর দাবি, "শববাহী গাড়িতে মৃতের আত্মীয় পৌলমী বোসকে মারধর করা হয় । শুধু তাই নয়, শববাহী গাড়ির চালককেও মারধর করা হয় । গাড়ি ভাঙচুর করা হয় । এরপর আমরা গিয়ে শববাহী গাড়ি উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসি । এটা কখনওই কাম্য ছিল না । এমন হলে আগামীতে পরিষেবা দেব কীভাবে ।"

মৃতের মামা সমীর দাসও কোতোয়ালি থানায় অভিযোগ করেছেন ৷ তিনি বলেন, "ছোটবেলা থেকে আমার ভাগ্নি তাঁর পৈতৃক বাড়িতে থাকে না । সে আমাদের বাড়ির পাশেই থাকে ৷ আমরাই তাঁকে মানুষ করেছি । তাঁর পৈতৃক বাড়ির সঙ্গে কোনও যোগাযোগ নেই । তাই মেয়েটির মা মৃতদেহ ওই বাড়িতে নিয়ে যেতে রাজি হয়নি । কিন্তু দিদির শ্বশুর বাড়ির লোকজন চেয়েছিলেন, মৃতদেহ পৈতৃক বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হোক ।"

জানা গিয়েছে, মা সোনালি দাস (সরকার) সম্মতি দিলে তবেই মৃতদেহ সঞ্চারীর পৈতৃক বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হবে বলে জানানো হয়েছিল । কিন্তু মাঝ রাস্তায় কিছু ব্যক্তি রাস্তা আটকে মৃতদেহ সঞ্চারীর পৈতৃক বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার জন্য জোর করতে থাকে বলে অভিযোগ । এরপরেই মামার বাড়ির লোকজন থানায় এসে অভিযোগ করেন ।

অরবিন্দ গ্রাম পঞ্চায়েতের পঞ্চায়েত সদস্য উপাসনা ঘোষ বলেন, "মৃতদেহ ঠাকুমা দেখতে চেয়েছিলেন । কিন্তু তাঁরা মৃতদেহ ঠাকুমাকে দেখতে দিতে নারাজ ছিলেন । তা নিয়েই ঝামেলা হয়েছে । এটা কাম্য ছিল না ।" এদিকে মৃতের পরিবারের সদস্য মনোজ সরকার ও সুজিত সরকারের কথায়, "আমরা কাউকে মারধর করিনি । আমরা কোনও শববাহী গাড়ি ভাঙচুর করিনি । বাড়ির বড় মেয়ের মৃতদেহ শুধুমাত্র আমরা বাড়িতে নিয়ে এসেছিলাম । আমাদের একটাই দাবি ছিল, বড় মেয়েকে পরিবারের সবাই শেষ দেখা দেখুক । আবার মৃতদেহ গাড়িতে তুলে দিয়েছি । কে গাড়ি ভেঙেছি আমরা জানি না ।"

এদিকে অভিযোগের পর কোতোয়ালি থানার পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে বলে জানা গিয়েছে ৷

ABOUT THE AUTHOR

...view details